সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ১১ অক্টোবর ২০২২, ০০:০০

ফরিদগঞ্জে আখের বাম্পার ফলন
এমরান হোসেন লিটন ॥

আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর আখের ভালো ফলন পেয়েছেন চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার চাষীরা। আখের ফলন ভালো হওয়ায় এবং দাম বেশি পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। উপজেলার আখ চাষীরা এবার লাভবান হতে পারবেন বলে তাদের আশা। এখন আখ কাটা এবং বিক্রির ভরা মৌসুম। আখ চাষ এলাকার চতুর্দিকে আখ কাটার হিড়িক দেখা গেছে।

ফরিদগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে পুরো উপজেলায় ২৯০ হেক্টর জমিতে আখ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। কিন্তু দেখা যায়, কৃষকরা আখ চাষে উদ্বুদ্ধ হয়ে ৩০০ হেক্টর জমিতে আখ চাষ করেন। বিশেষ করে উপজেলার ১, ২ , ৭ , ৮ , ৯, ১৫, ১৬নং ইউনিয়ন এবং পৌরসভার কিছু কিছু জায়গায় আখ চাষ করা হয়। যার মধ্যে শুধু ১নং বালিথুবা ইউনিয়নেই ২০০ হেক্টর জমিতে আখ চাষ করা হয়। ফরিদগঞ্জ উপজেলায় বিশেষ করে রং বিলাস, চাঁদপুর গ্যান্ডারি, ঈশ্বরদী, মানিকগঞ্জ ২০৮ জাতের আখ চাষ বেশি হয়।

ছোট-বড় সাইজের প্রতি পিচ আখ খুচরা বাজারে ১০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা গেছে। আখের পাইকাররা বলছেন ভিন্ন কথা। তারা বলেন, জমিন থেকে আখ তুলে শ্রমিকের পয়সা এবং পরিবহন খরচ দিয়ে আমাদের বেশি একটা লাভ হয় না। ফরিদগঞ্জ উপজেলার আখ বিশেষ করে কুমিল্লা, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নোয়াখালী, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ কয়েকটি এলাকায় নিয়ে বিক্রি করা হয়।

আখ চাষীদের মধ্যে হাবিবুর রহমান নামের একজন জানান, মোট ১০০ শতাংশের মধ্যে আখ চাষ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকার কারণে তার খুব ভালো ফলন হয়েছে। সব মিলিয়ে তার খরচ হয়েছে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা। তিনি আশা করছেন এ বছর তার ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা আখ বিক্রিতে আসবে।

অন্যদিকে ফারুক খান নামের একজন আখ চাষী বলেন, তিনি ১৯ শতক জমিনে আখ চাষ করেছেন। তার খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা। কিন্তু তিনি আখ বিক্রি করেছেন ৪০ হাজার টাকা। আমির হোসেন নামের আরেকজন আখ চাষী বলেন, তিনি ৪০ শতক জমিনের মধ্যে আখ চাষ করেছেন। তার খরচ হয়েছে ১ লাখ ১১ হাজার টাকা। তিনি আখ বিক্রি করেছেন ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।

১নং বালিথুবা ইউনিয়নের সবচাইতে ভালো আখ চাষী কলন্তার খান বলেন, তিনি রং বিলাস জাতের আখ চাষ করেছেন। এ আখ খেতে খুব সুস্বাদু এবং খুব মিষ্টি ও খুব বেশি রসালো। এ জাতের আখ ফরিদগঞ্জে খুব কম চাষী চাষ করেন। তিনি মোট একশ’ বিশ শতক জমিনের মধ্যে আখ চাষ করেছেন। তিনি আরো বলেন, গত বছর আখের দাম বেশি পেলেও এ বছর দাম কম। তিনি আরো বলেন, ফরিদগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস থেকে আমাদের আখ চাষীদের কোনরকম সহযোগিতা করছে না। আখ চাষী জুয়েল মিয়া বলেন, এবারের মৌসুমে আখের ভালো ফলন হয়েছে। ছোট-বড় সাইজের প্রতি পিচ আখ বাজারে নিয়ে ১০-৬০ টাকা পর্যন্ত খুচরা বিক্রি করছে। দাম ভালো পাওয়ায় তিনি খুব খুশি।

এছাড়া আখ চাষী আব্দুর রব খান, হাসিম, সুজন, তাফাজ্জল মিয়া, জসিম হোসেন বলেন, গতবারের চেয়ে এ বছর আখের দাম অনেক কম। খরচের তুলনায় আখের দাম আরও একটু বেশি হলে আমরা লাভবান হতে পারতাম। গত বছর এক পিচ আখ ১৫-২০ টাকা বিক্রি করলেও এ বছর আমরা পাইকারদের কাছে বিক্রি করছি ৭ থেকে ১০ টাকা।

রিদগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আশিক জামিল মাহমুদ বলেন, আখ একটি সুস্বাদু রসযুক্ত খাদ্য। ফরিদগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল আখ চাষের উপযোগী। ২০২১-২২ অর্থবছরে আখ চাষের জন্যে নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৯০ হেক্টর জমি। কিন্তু আখ চাষীরা উদ্বুদ্ধ হয়ে ৩০০ হেক্টর জমিতে চাষ করেন। আমি ইতিপূর্বে কয়েকটি এলাকায় আখ চাষ দেখতে গিয়েছিলাম। আখ কাটার এবং বিক্রির এখন ভরা মৌসুম। কৃষকরা ভাল দাম পেয়ে খুব খুশি বলে জানিয়েছেন। আগামীতে তাদেরকে পরামর্শ দিয়ে আরো বেশি করে আখ চাষে উদ্বুদ্ধ করবেন বলে তিনি জানান।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়