সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০০:০০

এলিজাবেথ যুগে ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের বিবর্তন হয়েছে যেভাবে
অনলাইন ডেস্ক

রানি এলিজাবেথের সময়কালে রাজতন্ত্র এবং ব্রিটিশ জনগণের মধ্যে সম্পর্ক নজিরবিহীন বদলে গেছে। সমাজে এই পরিবর্তনের সাথে সাথে রাজতন্ত্রের ভেতর সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবনের অসামান্য শক্তি ছিল রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের।

একটি বা দুটি ব্যতিক্রম ছাড়া, তার রাজপ্রসাদের দরজার বাইরে সামাজিক যে বিপ্লব ঘটে চলেছিল তার প্রতি তিনি সংবেদনশীল ছিলেন।

এমন এক সময় তার জন্ম হয়েছিল যখন বিনা বাক্যব্যয়ে পরম্পরা মেনে নেওয়াই ছিল ব্রিটিশ অভিজাত সমাজের রীতি। উচ্চ শ্রেণীর সমাজে ছিল শ্বাস-রোধ করা সব আদব কায়দা। ব্রিটিশ সমাজ তখনও উনবিংশ শতাব্দীর পরম্পরার মতই চলছিল।

বিশ্বযুদ্ধের নৃশংসতা এবং বিপর্যয় সত্ত্বেও ব্রিটিশ সমাজে তখনও মূলত সম্পদ, শ্রেণী এবং বংশ পরিচয়ই মান-মর্যাদা, ক্ষমতার মাপকাঠি হিসেবে রয়ে যায়।

রাজপরিবারের আচরণ এবং তাদের সাথে বাইরের জগতের সম্পর্ক কী হবে সে সম্পর্কিত রীতি-নীত ছিল খুবই আড়ষ্ট। নমনীয়তা বা রদবদলের কোনো সুযোগ কার্যত ছিল না।

দ্বিতীয় এলিজাবেথ যখন সিংহাসনে বসেন, বিশ্বের মানচিত্রের বিশাল একটি অংশ তখনও ছিল লালরঙা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিণতিতে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন অনেক দুর্বল হয়ে গেলেও পুরোপুরি ধ্বংস হয়নি।

তিনি সিংহাসনে বসেন একজন আত্মবিশ্বাসী অল্প বয়সী নারী হিসেবে। সারা বিশ্বেই সে ঘটনা ছিল ব্যতিক্রমী। কারণ, ব্রিটেন এবং ব্রিটেনের বাইরে তখন ক্ষমতার ধারকদের প্রায় সবাই ছিলেন মাঝ-বয়সী পুরুষ।

স্যার উইনস্টন চার্চিল সেসময় বলেছিলেন নতুন এক 'এলিজাবেথ যুগের' সূচনা হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর চরম যে কৃচ্ছসাধন নীতি আরোপ করা হয়েছিল, রানির ক্ষমতা গ্রহণের পর তা ধীরে ধীরে তোলা শুরু হয়।

মনে হচ্ছিল ব্রিটিশ রাজতন্ত্র এখন সুরক্ষিত এবং প্রশ্নাতীত। রাজতন্ত্র বিরোধী বিচ্ছিন্ন কিছু কিছু গোষ্ঠী মাঝে মধ্যে কিছু সমালোচনা, চেঁচামেচি করলেও মূলধারার রাজনীতিতে সেগুলোর কোনও ঠাঁই হতো না।

রাজতন্ত্র নিয়ে বিতর্ক

১৯৫৭ সালে আধুনিক সমাজে রাজতন্ত্রের ভূমিকা নিয়ে একটি বিতর্ক শুরু হয়। এবং যে বিষয়টি নিয়ে বিস্ময় তৈরি হয়েছিল তা হলো, ঐ বিতর্কের অবতারণা করেন লর্ড সভার কনজারভেটিভ পার্টির একজন সদস্য। যার নাম লর্ড আলট্রিনচ্যাম। যিনি পরে লর্ড সভা থেকে বেরিয়ে যান এবং লর্ড পদবী বাদ দিয়ে বলেছিলে তিনি শুধু পরিচিত হবেন জন গ্রিগ নামে। ন্যাশনাল অ্যান্ড ইংলিশ রিভিউ নামে একটি বিশেষ ধরণের সাময়িকীতে একটি আর্টিকেল লেখেন।

ঐ আর্টিকেলে কম বয়সী রানি সম্পর্কে তিনি লেখেন, রানি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার জন্য ‘তার প্রশিক্ষণে দারুণ ঘাটতি রয়েছে’। রানির কথা বলার ধরণের সমালোচনা করে লেখেন, শুনলে তার ‘ঘাড়ে ব্যথা’ হয়। রানির ব্যক্তিত্বকে তিনি ‘একজন যথার্থ স্কুল ছাত্রীর’ সাথে তুলনা করেন।

লর্ড আলট্রিনচ্যাম লেখেন, রাজতন্ত্রকে ‘একই সময়ে সাধারণ এবং অসাধারণ হওয়ার প্রায় অসম্ভব’ চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করতে হবে।

ওই আর্টিকেল প্রকাশের পর যে বিতর্ক শুরু হয় তাতে বোঝা যায় রাজতন্ত্র যেভাবে চলছে তা নিয়ে ব্রিটিশ সমাজে নানারকম মতামত রয়েছে।

সমালোচনার চাপে আলট্রিনচ্যাম তখন বলেছিলেন তার ঐ আর্টিকেলের উদ্দেশ্য ছিল "রাজতন্ত্রের স্বার্থ রক্ষা, একে শক্তিশালী করা যাতে প্রতিষ্ঠানটি টিকে থাকতে পারে। এই প্রতিষ্ঠান এতই মূল্যবান যে সেটিকে অবজ্ঞা করা যায় না।’

রাজপরিবারের সাথে সাধারণ মানুষের সম্পর্ক নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি ‘সত্যিকারের শ্রেণীহীন কমনওয়েলথ রাজপ্রাসাদের’ কথা বলেন। প্রিন্স চার্লসের শিক্ষা নিয়ে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

ষাটের দশকে নতুন সময়

রাজতন্ত্রের পক্ষের লোকজনের রোষের মুখে পড়ে যান আলট্রিনচ্যাম। একদিন একটি টিভি স্টুডিও থেকে বেরুনোর পর রাস্তায় তার ওপর হামলা করে লীগ অফ এম্পায়ার লয়ালিস্ট নামে কট্টর রাজতন্ত্র-পন্থী একটি গোষ্ঠীর লোকজন।

তবে তার ঐ অর্টিকেল প্রকাশের পর রাজতন্ত্রের অনমনীয় কাঠামো নিয়ে অনেক মানুষ প্রশ্ন তুলতে শুরু করে।

তারপর ষাটের দশকে সূচনা হয় নতুন এক সময়ের। তরুণ প্রজন্ম, যাদের কথা সমাজে কোনো গুরুত্বই পেত না, তারা উচ্চকণ্ঠে তাদের মতামত প্রকাশ করতে শুরু করে। ফ্যাশন, জীবনযাপন, সঙ্গীত এসবর মাধ্যমে তাদের পছন্দণ্ডঅপছন্দ প্রকাশ করতে শুরু করে।

মন্ত্রীর গোপন প্রণয়

দ্যাট ওয়াজ দি উইক দ্যাট ওয়াজের মত টিভি অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে সরাসরি বিদ্রƒপ ব্যাঙ্গ করা শুরু হয়। জন প্রোফুমো নামে সেসময়কার একজন মন্ত্রীর গোপন প্রণয় নিয়ে এত কেলেঙ্কারি হয়েছিল যে, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের ওপর অনেক মানুষ বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়ছিল।

রাজপরিবারও সমালোচনা থেকে রক্ষা পায়নি। এসব সমালোচনার মুখে রানি দুভাবে তার প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করেন।

প্রথমত, রাজপরিবারের সদস্যরা ব্রিটিশ সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে আরও বেশি সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে শুরু করেন। বিভিন্ন জায়গায়, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তারা যেতে শুরু করেন, যাতে এমন ধারণা তৈরি হয় যে সমাজের সাথে এবং মানুষের সাথে রাজপরিবার আরও বেশি সম্পৃক্ত হচ্ছে।

দ্বিতীয়ত, একের পর এক ব্রিটিশ উপনিবেশ সেসময় স্বাধীন হচ্ছিল, ফলে কমনওয়েলথের প্রধান হিসাবে রানির ভূমিকার গুরুত্ব বাড়তে থাকে।

কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোতে রানি ঘনঘন সফর শুরু করেন। জোটের অপেক্ষাকৃত ধনী এবং দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক এবং আলাপ-আলোচনাকে তিনি উৎসাহিত করতে থাকেন।

রহস্য দূর হতে থাকে

রয়্যাল ফ্যামিলি নামে বিবিসির একটি তথ্যচিত্র ১৯৬৯ সালের জুন মাসে রাজতন্ত্র এবং রাজপরিবার নিয়ে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিকে অনেক বদলে দেয়।

ওই তথ্যচিত্রে দেখানো হয়, রানি কাজ করছেন, কাজের বাইরে অবসরে খেলছেন। বাকিংহাম প্রসাদে নানা ধরনের মানুষের সাথে দেখা করছেন। বিদেশী অতিথিদের স্বাগত জানাচ্ছেন। পরিবারের সদস্যদের সাথে বালমোরাল প্রসাদে অবকাশ কাটাচ্ছেন।

তার বারবি-কিউ করার একটি দৃশ্য ঐ তথ্যচিত্রে দেখানো হয় যা সেসময় অনেক আলোচনার জন্ম দিয়েছিল।

কিন্তু রাজপরিবারকে এভাবে সাধারণের কাছে উন্মোচন করা নিয়ে সবাই খুশি ছিলেন না। পরিবারের অনেক সদস্য এবং অনেক উপদেষ্টা মনে করতেন রহস্য রাজপরিবারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় এবং এভাবে মিডিয়ার কাছে নিজেদের তুলে ধরলে এটি নষ্ট হবে।

রাজপরিবার যে এভাবে সাধারণ মানুষের সামনে খোলামেলা হচ্ছিল তার পেছনে প্রধান ভূমিকা ছিল রানির স্বামী ডিউক অব এডিনবরার চাচা লর্ড মাউন্টব্যাটেন অব বার্মার।

তিনি মনে করতেন রাজপরিবারকে সময়ের সাথে বদলাতে হবে। তার এই চিন্তাকে অনেকে বলেন ‘মাউন্টব্যাটেনিজম’ মাউন্টব্যাটেনবাদ।

রানির আত্মজীবনীর লেখক বেন পিমলট লিখেছেন, মাউন্টব্যাটেন জনমতকে রাজতন্ত্র এবং রাজপরিবারের ‘পক্ষে আনার জন্য সচেতন চেষ্টা’ শুরু করেছিলেন।

১৯৭৭ সালে রানির ক্ষমতা গ্রহণের সিলভার জুবিলি অনুষ্ঠান উদযাপনের মধ্য দিয়ে দেখানোর চেষ্টা হয় রাজতন্ত্র সাধারণ মানুষের সাথে সম্পৃক্ত।

রাজপরিবারের আর্থিক বিষয়

এসব প্রচেষ্টা কমণ্ডবেশি সাফল্য পায়। এ ধরনের খোলামেলা হওয়ার চেষ্টার সাথে সাথে রাজপরিবারের আর্থিক বিষয়গুলোতেও পরিবর্তনের প্রক্রিয়া শুরু হয়।

সিভিল লিস্ট নামে যে ব্যবস্থায় পার্লামেন্ট সরাসরি রাজপরিবারকে পয়সা দেয় তার পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া হয়। তার বিনিয়োগ থেকে আয়ের ওপর কর দিতে শুরু করেন রানি। রাজপ্রসাদের এবং পারিবারিক খরচ অনেক কমিয়ে ফেলা হয়।

দুঃখজনকভাবে রাজপরিবারের নতুন প্রজন্মের অনেকে পরিবারের এবং রাজতন্ত্রের মর্যাদা ধরে রাখতে তেমন সচেষ্ট হননি। যেমন, রানির চার সন্তানের তিনজনেরই বিয়ে ভেঙ্গেছে।

এক অগ্নিকাণ্ডে উইন্ডসর প্রাসাদের ক্ষতি বহন নিয়ে অস্বাভাবিকভাবে এক বিতর্ক শুরু হলে, শেষ পর্যন্ত রাজপরিবার জানায় তারাই এর খরচ বহন করবে।

রাজপরিবারের সদস্য এবং রাজপ্রাসাদের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে দি ওয়ে অ্যাহেড নামে গ্রুপ তৈরি করা হয়। সিদ্ধান্ত হয় এই গ্রুপটি বছরে দুবার বৈঠক করবে।

প্রিন্সেস ডায়ানার মৃত্যু

রাজতন্ত্রের ভবিষ্যৎ, রাজপরিবারের খরচপত্রের সংস্থানের মত বিষয় নিয়ে এই গ্রুপের বৈঠকগুলোতে আলোচনা হয়। দেখানোর চেষ্টা হয় কীভাবে রাজপরিবার জনমতে সাড়া দিচ্ছে। এমনকি মানুষজন ভাবার আগে তারাই এসব বিষয় নিয়ে ভাবছে।

কিন্তু যদিও জনমতের সাথে নিজেদের খাপ খাওয়ার সচেতন চেষ্টা রাজপরিবারের কাছ থেকে দেখা যাচ্ছিল, কিন্তু ১৯৭৭ সালের অগাস্টে প্রিন্সেস ডায়ানার মৃত্যুর পর জনগণের যে প্রতিক্রিয়া হয় তাতে প্রচণ্ড চাপে পড়ে যায় রাজপরিবার।

কেন তিনি স্কটল্যান্ডের বালমোরাল প্রাসাদে অবকাশ ভেঙ্গে প্রয়াত সাবেক পুত্রবধূর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে লন্ডনে ফিরলেন না তা নিয়ে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েন রানি।

নতুন শতাব্দীতে রাজতন্ত্র

তবে সমালোচকরা যে বিষয়টি তখন বুঝতে ব্যর্থ হন যে একজন সংবেদনশীল মাতামহ হিসাবে রানি চেয়েছিলেন মা হারা দুই শিশুকে যেন খুব বেশি জনসমক্ষে না আসতে হয়, যাতে তারা পরিবারের মধ্যে নিভৃতে এবং শান্তিতে মায়ের মৃত্যুর শোক সামলে উঠতে পারে।

ব্রিটিশ সমাজের চিরাচরিত প্রথা ভেঙ্গে অনেক মানুষ ডায়ানার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করতে গিয়ে বেসামাল আচরণ করেছিল।

ট্যাবলয়েড কয়েকটি পত্রিকার অব্যাহত সমালোচনার মুখে রানি শেষ পর্যন্ত লন্ডনে ফিরে আসেন এবং নজিরবিহীনভাবে লাইভ টিভিতে তার সাবেক পুত্রবধূর প্রতি সম্মান জানান।

তারপর নতুন শতাব্দীতে এসেও রাজতন্ত্র এবং রাজপরিবারে বিবর্তন অব্যাহত থাকে।

সিংহাসনে আরোহণের সুবর্ণ জয়ন্তী

ব্যবসা, সম্প্রচার, শিল্পকলা সম্পর্কিত বিশেষ দিবসগুলোতে রানি অতিথি হিসাবে অংশ নেন। শহরের বিভিন্ন জায়গায় হঠাৎ করে বেড়াতে গিয়ে স্থানীয় মানুষজনের মুখোমুখি হয়েছেন। এমনি বিবিসির সিরিয়াল নাটক ইস্টএন্ডারের সেটেও হাজির হয়েছিলেন রানি।

ধীরে ধীরে একটি অধিকতর ‘স্পর্শকাতর অনুভূতি-সম্পন্ন’ রাজপরিবারের আত্মপ্রকাশ শুরু হয়, যে পরিবার পরিবর্তিত ব্রিটেনের বহুধা সংস্কৃতি এবং বিশ্বাসের ব্যাপারে অনেক সচেতন ও সহনশীল।

এই কৌশল কতটা সফল হয়েছে তার একটি নমুনা পাওয়া যায় ২০০২ সালে রানির সিংহাসনে আরোহণের সুবর্ণ জয়ন্তী এবং পরে প্লাটিনাম জুবিলি উদযাপনে জনগণের আবেগপূর্ণ অংশগ্রহণে।

ঝামেলার বছর ২০১৯

এই দুই অনুষ্ঠান উদযাপনে দেশের নানা জায়গায় সফর করেন রানি এবং লাখ লাখ মানুষের সমর্থন পান। রানির প্রতি তাদের আবেগ এবং ভালবাসা ছিল স্পষ্ট।

তবে ২০১৩ সালে যখন তার প্রপৌত্র প্রিন্স জর্জ অব কেমব্রিজের জন্ম হয়, কারো পক্ষে হয়তো এটা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব হয়নি যে এই শিশুটিও একসময় রাজ সিংহাসনে বসার সুযোগ পাবে।

রানি নিজেই ২০১৯ সালকে ঝামেলার বছর অভিহিত করেছিলেন তার স্বামী সড়ক দুর্ঘটনায় পড়েছিলেন বলে। তার ছেলে ডিউক অব ইয়র্ককে রাজকীয় সমস্ত দায়িত্ব ছাড়তে হয়েছিল। এবং প্রিন্স হ্যারি রাজপরিবারের কড়া রীতিনীতির আবহ থেকে নিজেকে মুক্ত করতে চাইছিলেন ।

তবে সাধারণ জনগণের সাথে রাজতন্ত্রের জটিল সম্পর্কে যে পরিবর্তনই আসুক না কেন, এটা পরিষ্কার যে রানির সাথে জনগণের সম্পর্ক ছিল খুবই শক্ত। তাঁর সিংহাসনে বসার পর গত ৭০ বছরে ব্রিটেন আমূল পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে গেলেও বহু মানুষ সবসময় তাঁর ব্যাপারে আশ্বস্ত বোধ করেছে।

স্বামী ডিউক অব এডিনবরার, যিনি ২০২১ সালে ৯৯ বছরে মারা যান, তার সাথে একত্রে ব্রিটেনের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী এই সম্রাজ্ঞী রাজতন্ত্রকে অক্ষত রাখতে এবং নিরাপদে একবিংশ শতাব্দীতে নিয়ে আসতে সমর্থ হয়েছেন। সূত্র : বিবিসি বাংলা।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়