সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ২৮ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

করোনার চেয়ে দেশে যক্ষ্মায় মৃত্যু বেশি : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
অনলাইন ডেস্ক

দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দৈনিক যতো মানুষ মৃত্যুবরণ করেন, তার চেয়ে অনেক বেশি মানুষ যক্ষ্মায় (টিবি) আক্রান্ত হয়ে মারা যান বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

তিনি বলেন, টিবিতে দেশে দৈনিক প্রায় ১০০ জনের বেশি মানুষ মারা যায়। আর করোনায় বর্তমানে বড়জোর দৈনিক ১/২ জন মারা যায়। সে হিসেবে টিবিতে মৃতের হার অনেক বেশি, কিন্তু সেটি আমরা খেয়ালই করি না।

বুধবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত কমিউনিটি, রাইটস অ্যান্ড জেন্ডার অ্যাকশন প্ল্যান ফর টিবি (২০২১-২৩) শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

জাহিদ মালেক বলেন, বিশ্বে ১৩তম মৃত্যুর কারণ টিবি। পৃথিবীতে প্রায় এক কোটি লোক টিবিতে আক্রান্ত, প্রতিবছর প্রায় ১৫ লাখ লোক মারা যায়। আর দেশে প্রতিবছর ৪০ হাজারের মতো মানুষ মারা যায়, তিন লাখ আক্রান্ত হয়। ক্যান্সারে প্রতিদিন ২০০/২৫০ মানুষ মারা যায়। কিডনিতেও সমান সংখ্যক মানুষ মারা যায়।

মন্ত্রী বলেন, আমরা অনেক রোগ বাংলাদেশে নিয়ন্ত্রণ করেছি। আমরা দেশকে পোলিওমুক্ত করেছি। কলেরা, ডায়রিয়া দূর করতে পেরেছি। দেশ টিটেনাসমুক্ত হয়েছে। টিবি নিয়ন্ত্রণেও যথেষ্ট কাজ করছি। আমাদেরকে এখন সংক্রামক রোগের পাশাপাশি অসংক্রামক রোগ নিয়েও কাজ করতে হচ্ছে। দেশে ক্যান্সার, কিডনিতে অসংখ্য লোক মারা যাচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, টিবিতে পজিটিভ বিষয় হলো, এটিকে আমরা নির্ণয় করতে পারছি। এটি একটি বড় বিষয়। কারণ, আপনি যদি নির্ণয় করতে পারেন, তাহলে এর চিকিৎসাও আছে। টিবিতে মৃত্যুর হার কমে আসছে। যক্ষ্মায় এখন ৯৫ থেকে ৯৭ শতাংশ লোক সুস্থ হয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, পৃথিবীতে যতগুলো দেশ আছে, এরমধ্যে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণের তালিকায় বাংলাদেশ ৭ নম্বরে আছে। সেটি কিন্তু অনেক বেশি। আমরা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি। চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন করে যাচ্ছি। এ লক্ষ্যে শুধু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কাজ করে না, বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী কাজ করে। তাদেরকে বিনামূল্যে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। এখন আর বলে না যে যক্ষ্মা রোগে রক্ষা নাই। অবশ্যই রক্ষা আছে।

শঙ্কা প্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, যারা টিবি আক্রান্ত হয়ে মাঝপথে চিকিৎসা ছেড়ে দিচ্ছেন, তারা আরও জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এদিকে, অসংখ্য রোগী ডিটেকশনের বাইরে থেকে যাচ্ছেন, তারা চিকিৎসা নিচ্ছেন না। এমনকি তারা সমাজে রোগটি ছড়িয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, আমাদেরকে অবশ্যই ডিটেকশনে আরও গুরুত্ব দিতে হবে। শনাক্তের সংখ্যা বাড়াতে হবে। নয়তো আরও বিপদজনক অবস্থা তৈরি হবে।

সতর্কতায় গুরুত্বারোপ করে মন্ত্রী বলেন, টিবি আক্রান্ত রোগী যে পাত্রে খাওয়া দাওয়া করে, সেগুলো আলাদা করা এবং চিকিৎসাটা যেন নিয়মিত হয়, রোগী যেন ঠিকঠাক ওষুধ খায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। সেক্ষেত্রে স্থানীয় নেতারা যারা আছেন, তাদেরকে এগিয়ে আসতে হবে।

জাহিদ মালেক বলেন, টিবি রোগটা মূলত ঘিঞ্জি পরিবেশে বেশি হয়। যেসব এলাকায় লোকজন বেশি বাস করে, বিশেষ করে গার্মেন্টস এলাকায় টিবির হার বেশি। একজনের হলে সেটি অন্যদের মধ্যেও ছড়িয়ে যায়। কারণ, একসঙ্গে তারা অসংখ্য লোক একসঙ্গে বসবাস করে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ড. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, বর্তমানে প্রতি বছরে ৫০ হাজারেরও বেশি রোগী মারা যায়। ৩ লাখ বা তার বেশি রোগী প্রতিবছর যুক্ত হচ্ছে। নতুন করে যুক্ত হওয়াটা কমানো না গেলে টিবি নিয়ন্ত্রণে সরকারের যে লক্ষ্য, সেটি বাস্তবায়ন হবে না।

তিনি বলেন, যারা চিকিৎসারত আছেন, তাদের চিকিৎসায় গ্যাপের কারণে রোগটি রেজিস্ট্যান্স হয়। আর তাদের থেকে যারা আক্রান্ত হয়, সেটি অনেকটা ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করে। তাই যারা রোগী হয়েছে, তাদেরকে খুঁজে বের করে চিকিৎসার আওতায় নিয়ে আসা।

স্বাস্থ্য সচিব বলেন, টিবি রোগটি বিশেষ করে বর্ডার এলাকায় বেশি। কক্সবাজারে মিয়ানমার থেকে আসাদের মাধ্যমে ওই এলাকায় বেশি ছড়াচ্ছে। সরকার এবিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কাজ করছে। এই রোগের চিকিৎসায় টাইমিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মমাফিক ওষুধ খেতে হয়। কমপ্লিট একটি শিডিউল মেনে চলতে হয়।

তিনি আরও বলেন, আমাদের স্ক্রিনিং, ডায়াগনসিস খুবই ভালো। সবচেয়ে বড় সক্ষমতার জায়গা হলো রাজনৈতিকভাবেও কমিটমেন্ট আছে। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে। আমরা অসংখ্য সংক্রামক রোগকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পেরেছি। আশা করি টিবিকেও নির্মূল করতে সক্ষম হব।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশিদ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির, অধিদপ্তরের পরিচালক ও টিবি-ল্যাপ্রোসি অপারেশন প্ল্যানের লাইন ডিরেক্টর ডা. খুরশিদ আলমসহ আরও অনেকে। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য পেশ করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের হেলথ সার্ভিস ডিভিশনের অতিরিক্ত সচিব নিলোফার নাজনীন। সূত্র : ঢাকা পোস্ট।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়