প্রকাশ : ১৭ জুন ২০২২, ০০:০০
আমাদের যতো গৌরব
অ্যাডভোকেট ইকবাল-বিন-বাশার
আমি পত্রিকা প্রকাশ করার মতো মানসিকতা কর্মজীবনের শুরু থেকে পোষণ করিনি। আমি যখন লক্ষ্য করলাম, চাঁদপুর জেলায় মানসম্মত দৈনিক তো দূরের কথা, সাপ্তাহিক এমনকি মাসিক পত্রিকাও নেই, তখন সাংবাদিক-শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রেরণায়, বিশেষ করে স্নেহভাজন মির্জা জাকিরের লেগে থাকার কারণে সাপ্তাহিক চাঁদপুর কণ্ঠ প্রকাশের উদ্যোগ নিয়ে সফল হই। ১৯৯৪ সালের ১৭ জুন এ পত্রিকাটির প্রথম সংখ্যায় উপমহাদেশের খ্যাতিমান বাঙালিদের মধ্যে মুসলিম সাংবাদিকতার পথিকৃৎ, দেশবরেণ্য গুণীজন সওগাত সম্পাদক মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীনের আশীর্বাণী ছেপেছি, যা আমাদের কাছে চিরঞ্জীব প্রেরণা হিসেবেই পরিগণিত। তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্র, সাবেক এমপি ফ্লাঃ লেঃ (অবঃ) এস. এ. সুলতান টিটু’র কারণে এই আশীর্বাণী প্রাপ্তি সম্ভব হয়েছে এবং তিনি অদ্যাবধি এ পত্রিকার সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতির পদ অলঙ্কৃত করে আমাদের সুখে-দুঃখে পাশে থাকার আন্তরিক চেষ্টা করছেন। সম্পাদনা পরিষদে যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে এসএম ওবায়েদুল্যাহ, নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে কাজী শাহাদাত ও বার্তা সম্পাদক হিসেবে মির্জা জাকিরকে আমার সহকর্মী স্বরূপ পাওয়ায় পত্রিকাটিকে লড়াইয়ে টিকে থাকা শুধু নয়, আঞ্চলিক পত্রিকা হিসেবে মানসম্মত করার কাজটি ভালোভাবে করতে পেরেছি বলে ২৮ বছর পর আজ স্পষ্টত মনে হচ্ছে। এজন্যে পাঠক-শুভাকাঙ্ক্ষী, বিশেষ করে আমার সুযোগ্য সহধর্মিণী অধ্যক্ষ প্রফেসর বিলকিস আজিজসহ পুরো পরিবার ও আত্মীয়স্বজনের যে সহযোগিতা পেয়েছি, তা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করতেই হয়। সর্বোপরি পরম করুণাময় আল্লাহতা'য়ালার দরবারে অশেষ শোকরিয়া পেশ করছি, যিনি আমার মতো ক্ষুদ্র মানুষকে পত্রিকাটির প্রতিষ্ঠাতা, সম্পাদক ও প্রকাশক হিসেবে কাজ করার তৌফিক দান করেছেন এবং নিরবচ্ছিন্ন প্রকাশনা অব্যাহত রাখার শক্তি-সাহস-ধৈর্য এবং সামর্থ্য দান করেছেন। আলহামদুলিল্লাহ।
|আরো খবর
চাঁদপুর কণ্ঠ বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন সাপ্তাহিক কুমিল্লার আমোদের মতো হয়তো সাপ্তাহিকই থেকে যেতো, যদি ১৯৯৮ সালে প্রলয়ঙ্করী বন্যা না হতো। এ বন্যার সময় সাপ্তাহিক হিসেবে চাঁদপুর কণ্ঠ বন্যার্ত মানুষের দুঃখ-দুর্দশা এতোটা সফলভাবে তুলে ধরে যে, জনপ্রিয়তা তথা পাঠকপ্রিয়তার তুঙ্গে উঠে যায় পত্রিকাটি। এমতাবস্থায় পত্রিকাটির তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কাজী শাহাদাতকে না জানিয়েই একদিন চাঁদপুর প্রেসক্লাবে গিয়ে ঘোষণা দিয়ে ফেললাম, ইনশাল্লাহ চাঁদপুর কণ্ঠকে দৈনিক করা হবে। যে কথা সেই কাজ।
জেলা প্রশাসক মোঃ রেজাউল করিমসহ তাঁর কার্যালয়ের সহকর্মীদের সর্বোচ্চ আন্তরিকতায় এবং সহকর্মী গিয়াসউদ্দিন মিলনের অক্লান্ত শ্রম ও মোঃ রোকনুজ্জামান রোকনের কৌশলী প্রয়াসে ঈর্ষান্বিত কারো কারো বিরোধিতা সত্ত্বেও চাঁদপুর কণ্ঠ সাপ্তাহিক থেকে দৈনিকে উত্তরণের ডিক্লারেশন পায় ১৯৯৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতে। আমরা মাত্র ২৪ ঘণ্টার প্রস্তুতিতে চাঁদপুর কণ্ঠের দৈনিক হিসেবে প্রথম সংখ্যা প্রকাশ করি ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে। তারপর দেড় মাসের ব্যবধানে ১৯৯৯ সালের ৩১ জানুয়ারি থেকে শুরু হয় আনুষ্ঠানিক যাত্রা, শত প্রতিকূলতাতেও যে যাত্রা বিগত সাড়ে ২৩ বছরেও আর থামেনি। আমার বিশ্বাস, মহান আল্লাহর করুণাবর্ষণ অব্যাহত থাকলে এ যাত্রা থামবে না।
চাঁদপুর কণ্ঠকে ২৮ বছরে বিরাট কর্পোরেট হাউজের রূপ দিতে পারিনি সত্য, তবে কর্পোরেট সোস্যাল রেসপন্সিবিলিটি (সিএসআর)-এর ন্যায় উল্লেখযোগ্য অনেক কাজ করতে পেরেছি। যেমন : ঢাকা-চাঁদপুর দূরপাল্লার সাঁতার, অবিরাম সাঁতার, মেধাবী শিক্ষার্থীকে বিদেশে পাঠিয়ে ব্যয়বহুল ব্রেন টিউমার অপারেশন, মুক্তিযোদ্ধা খলিল সর্দারের চিকিৎসা ও তাঁর সন্তানদের পুনর্বাসন, ১২ বছর ধরে চাঁদপুর জেলাব্যাপী বিতর্ক প্রতিযোগিতা, বিতর্ক উৎসব, দেশে সর্বপ্রথম বিতর্ক একাডেমি প্রতিষ্ঠা, রেজিস্টার্ড বিতর্ক সংগঠন প্রতিষ্ঠা, জাতীয় রবীন্দ্র সংগীত সম্মেলনের প্রধান মিডিয়া পার্টনার হওয়াসহ চাঁদপুরের অসংখ্য ছোট-বড় আয়োজনের মিডিয়া পার্টনার হওয়া।
ব্যক্তিগতভাবে চাঁদপুর কণ্ঠের সম্পাদক হওয়ার কারণেই আমি চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সদস্য হতে পেরেছি এবং এই ক্লাবের প্রথম নির্বাচিত সভাপতি হতে পেরেছি। প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কামরুজ্জামান চৌধুরীর একটানা ২৫ বছর দায়িত্বপালনের পর সভাপতি পদে আমি নির্বাচন করি এবং পরপর তিন মেয়াদে ৬ বছর দায়িত্বপালন করি। এজন্যে চাঁদপুর প্রেসক্লাবের প্রয়াত সভাপতি ইকরাম চৌধুরীর প্রতি আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। আল্লাহ তাঁকে চিরসুখের জান্নাত দান করুন-সে প্রার্থনা জানাচ্ছি।
আমার ও চাঁদপুর কণ্ঠের জন্যে আত্মশ্লাঘার বিষয় এই যে, পরবর্তীতে এ পত্রিকার প্রধান সম্পাদক কাজী শাহাদাত চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি পদে দুবার, যুগ্ম সম্পাদক (পরবর্তীতে দৈনিক মেঘনা বার্তার সম্পাদক ও প্রকাশক) গিয়াসউদ্দিন মিলন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, সভাপতি ও সেক্রেটারী পদে ১ বার, নির্বাহী সম্পাদক মির্জা জাকির ও বার্তা সম্পাদক এএইচএম আহসানউল্লাহ সেক্রেটারী পদে ১ বার, চাঁদপুর কণ্ঠের সাবেক বার্তা সম্পাদক (পরবর্তীতে চাঁদপুর বার্তার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক) শহীদ পাটোয়ারী সভাপতি পদে দুবার, সাবেক চীফ ফটোগ্রাফার ও সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার (পরবর্তীতে দৈনিক ইলশেপাড়ের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক) বিএম হান্নান সেক্রেটারী ও সভাপতি পদে ১ বার, সাবেক সহ-সম্পাদক (পরবর্তীতে দৈনিক প্রবাহের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক) রহিম বাদশা সেক্রেটারী পদে ২ বার এবং সাবেক স্টাফ রিপোর্টার জিএম শাহীন (পরবর্তীতে চাঁদপুর প্রতিদিনের প্রধান সম্পাদক ও বর্তমানে ভয়েস টিভির সিইও) সেক্রেটারী পদে একবার দায়িত্বপালনের সুযোগ পেয়েছেন। এছাড়া সাবেক বার্তা সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকার দৈনিক যুগান্তরের মফস্বল সম্পাদকের দায়িত্বপালনের পর দেশের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন মিডিয়া জাগো নিউজে সম্পাদক পদে সুনামের সাথে দায়িত্বপালন করেন এবং বর্তমানে ঢাকা পোস্টের সম্পাদক হিসেবে চমক সৃষ্টিতে সক্ষম হয়েছেন। চাঁদপুর কণ্ঠের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্বপালনকারী মোঃ রোকনুজ্জামান রোকন ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক অনুপমা ও চাঁদপুর থেকে প্রকাশিত দৈনিক চাঁদপুরজমিনের সম্পাদক-প্রকাশকের দায়িত্ব পালন করছেন এবং সাবেক সহ-সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়ার পলাশ ঢাকা থেকে দৈনিক বাণিজ্য প্রতিদিন সম্পাদনা করছেন, যিনি ঢাকাস্থ চাঁদপুরের সাংবাদিকদের সংগঠনের সেক্রেটারীর দায়িত্বপালন করছেন। তাদের সমসাময়িক সহকর্মী মাহবুবুর রহমান সুমন বর্তমানে দৈনিক ইলশেপাড়ের প্রধান সম্পাদকের দায়িত্বে অধিষ্ঠিত। এছাড়া চাঁদপুর কণ্ঠের মতলবের সাবেক ব্যুরো ইনচার্জ গোলাম সারোয়ার সেলিম সাপ্তাহিক মতলব কণ্ঠ এবং দৈনিক মতলবের আলোর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও প্রকাশক হবার যোগ্যতা দেখিয়েছেন। হাজীগঞ্জের সাবেক দুজন ব্যুরো ইনচার্জ যথাক্রমে জাকির মজুমদার হয়েছেন সাপ্তাহিক মানব সমাজের সম্পাদক ও মোঃ কামাল হোসেন সাপ্তাহিক আমার কণ্ঠের সম্পাদক এবং সুদীর্ঘ সময় ধরে ফরিদগঞ্জের ব্যুরো ইনচার্জ প্রবীর চক্রবর্তী হয়েছেন ফরিদগঞ্জ কণ্ঠের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক। চাঁদপুর কণ্ঠের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে অল্প কিছুদিন দায়িত্বপালনকারী কাদের পলাশ হয়েছেন দৈনিক শপথের সম্পাদক ও চাঁদপুর টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক। চাঁদপুর কণ্ঠের মতলব উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্বপালনকারী শ্যামল চন্দ্র দাস বহু পূর্বে চাঁদপুর কণ্ঠ ছাড়লেও পরবর্তীতে তিনি দুটি স্থানীয় সাপ্তাহিকের সম্পাদক -প্রকাশক হয়েছেন। আর চাঁদপুর কণ্ঠের খণ্ডকালীন অনুসন্ধানী প্রতিবেদক জিয়াউর রহমান বেলাল হয়েছেন দৈনিক একাত্তর কণ্ঠের সম্পাদক ও প্রকাশক। এভাবে কতো জনের কথা উল্লেখ করবো!
চাঁদপুর কণ্ঠ শুধু পাঠক সৃষ্টি করেনি, প্রেরণা দিয়েছে এ পরিবারের সদস্যদের সাংবাদিক সংগঠনের নেতা হতে এবং বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদক-প্রকাশকসহ বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করতে। কচুয়ার সাবেক ব্যুরো ইনচার্জ মানিক সরকার কচুয়া প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও রাকিবুল হাসান সাবেক সভাপতি-সম্পাদক, স্বল্পদিন কচুয়া উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী আলমগীর তালুকদার কচুয়া প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও একটি সাপ্তাহিকের সম্পাদক ও প্রকাশক, শাহরাস্তিতে চাঁদপুর কণ্ঠের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালনকারী ফারুক চৌধুরী ও অধ্যাপক মোঃ আবুল কালাম শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি। বর্তমান সভাপতি কাজী হুমায়ুন কবিরও চাঁদপুর কণ্ঠে কাজ করেছেন কিছুদিন। বর্তমান ব্যুরো ইনচার্জ মঈনুল ইসলাম কাজল শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের সাবেক সেক্রেটারী। আর হাজীগঞ্জের সাবেক ব্যুরো ইনচার্জ জাকির মজুমদার ও কামাল হোসেন এবং বর্তমান ব্যুরো ইনচার্জ কামরুজ্জামান টুটুল হাজীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সেক্রেটারী। এদের মধ্যে টুটুল বর্তমানে হাজীগঞ্জ সাংবাদিক কল্যাণ সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবের বর্তমান সভাপতি কামরুজ্জামান ও সেক্রেটারী আবদুস্ সোবহান লিটন চাঁদপুর কণ্ঠ পরিবারের সাবেক সদস্য। বর্তমান বিশেষ প্রতিনিধি মানিক পাঠান ছিলেন এই প্রেসক্লাবের দীর্ঘদিনের সাবেক সেক্রেটারী এবং মামুন পাঠান ছিলেন দীর্ঘদিনের সভাপতি। আর বর্তমান ব্যুরো ইনচার্জ প্রবীর চক্রবর্তী উক্ত ক্লাবের সাবেক সেক্রেটারী। মতলব উত্তরের দীর্ঘকালের ব্যুরো ইনচার্জ মাহবুব আলম লাভলু মতলব উত্তর প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, যিনি দীর্ঘদিন এ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। আর মতলব উত্তর থেকে চাঁদপুর কণ্ঠে কিছুদিন সংবাদদাতা হিসেবে দায়িত্বপালনকারী শহীদুল ইসলাম খোকন এই প্রেসক্লাবের সাবেক সেক্রেটারী, বর্তমানেও দায়িত্বপালনকারী হুমায়ুন কবির সাবেক সেক্রেটারী। হাইমচরে চাঁদপুর কণ্ঠের সুদীর্ঘ সময়ের ব্যুরো ইনচার্জ মাজহারুল ইসলাম শফিক হাইমচর প্রেসক্লাবের সভাপতি হিসেবে একাধিকবার দায়িত্ব পালন করেছেন। মতলব দক্ষিণের ব্যুরো ইনচার্জ রেদোয়ান আহমেদ জাকির এখানকার প্রেসক্লাবের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন না করলেও মতলব রোটারী ক্লাবের সেক্রেটারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ও ১ জুলাই থেকে সভাপতির দায়িত্বে অধিষ্ঠিত হবেন। বর্তমানে সৌদি আরব প্রবাসী এএ বিল্লাল চাঁদপুর কণ্ঠের প্রতিনিধি হিসেবে নারায়ণপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি, আর নারায়ণপুর প্রতিনিধি আরিফ বিল্লাহ এই ক্লাবের বর্তমান সভাপতি। ফরিদগঞ্জের অধুনালুপ্ত গল্লাক প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও মাসিক পল্লীকাহিনীর সম্পাদক সালাহউদ্দিনও চাঁদপুর কণ্ঠের সাবেক সংবাদ প্রতিনিধি।
চাঁদপুর কণ্ঠে এককভাবে লিখে লেখক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন অনেকেই। তাঁর মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী মোঃ দেলোয়ার হোসেন (বর্তমানে প্রয়াত), প্রবীণ বিশেষজ্ঞ হাসান আলী, এসএম আনওয়ারুল করিম (প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান সম্পাদক, দৈনিক ইলশেপাড় ও সম্পাদক, মাসিক হেরার পয়গাম), মুহাম্মদ ফরিদ হাসান (চাঁদপুর কণ্ঠের পাঠক ফোরাম, শিক্ষাঙ্গন ও সুচিন্তা পাতার বিভাগীয় সম্পাদক, সাহিত্য পত্রিকা ‘বাঁক’-এর সম্পাদক, বেশ কিছু গ্রন্থের প্রণেতা ও সম্পাদক), আলহাজ্ব আঃ হক মোল্লার নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এছাড়া চাঁদপুর কণ্ঠসহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে লিখে কবি, ছড়াকার, প্রবন্ধকার, গল্পকার হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি ও খ্যাতি অর্জনকারী বহু গ্রন্থের প্রণেতা ডাঃ পীযূষ কান্তি বড়ুয়ার কথা তো বলার অপেক্ষা রাখে না। তিনি দু হাতে লিখে চলছেন চাঁদপুর কণ্ঠে। শিশুকণ্ঠে লিখে লিখে হাত পাকানো নূরুল ইসলাম ফরহাদ ইতোমধ্যে কিছু গ্রন্থের প্রণেতা হয়ে গেছেন, আর সাহিত্য সংগঠক হিসেবে ফরিদগঞ্জ লেখক ফোরামের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন বহু বছর ও বর্তমানে মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন।
চাঁদপুর কণ্ঠের চীফ রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত বিমল চৌধুরী সুলেখক ও সুসংগঠক, ম্যানেজার সেলিম রেজা দৈনিক ডেইলি সান-আমার সংবাদের জেলা প্রতিনিধি, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার মিজানুর রহমান দৈনিক জনতার জেলা প্রতিনিধি, চীফ ফটোগ্রাফার ও ক্রীড়াকণ্ঠের বিভাগীয় সম্পাদক অ্যাডঃ চৌধুরী ইয়াছিন ইকরাম দৈনিক খবরের জেলা প্রতিনিধি, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার গোলাম মোস্তফা দৈনিক বাংলাদেশের আলোর জেলা প্রতিনিধি। আর সার্কুলেশন ম্যানেজার সোহাঈদ খান জিয়া দৈনিক সবুজ নিশান ও সিস্টেম ডেভলপার উজ্জ্বল হোসাইন দৈনিক বাংলা ৭১-এর জেলা প্রতিনিধি। চাঁদপুর কণ্ঠের বিশেষ প্রতিনিধিদের মধ্যে ডাঃ মোজাম্মেল হক পাটোয়ারী চাঁদপুর আদর্শ হোমিওপ্যাথিক কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ এবং সাইফুল আজম চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের ব্র্যান্ডিং বইয়ের প্রধান আলোকচিত্রী ও চাঁদপুর হিলশা সিটি রোটারী ক্লাবের চার্টার (প্রতিষ্ঠাতা) সেক্রেটারী। চাঁদপুর কণ্ঠের আলোকচিত্রী বাদল মজুমদার চাঁদপুর জেলা ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ও চাঁদপুর সাঁতার পরিষদের বর্তমান সেক্রেটারী। আর চাঁদপুর কণ্ঠে কর্মরত গোলাম মোস্তফা ও চৌধুরী ইয়াছিন ইকরাম চাঁদপুর জেলা ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার আঃ রহমান গাজী পরপর দুবার নির্বাচিত কোষাধ্যক্ষ।
আগে লিখতে ভুলে গেছি, চাঁদপুর কণ্ঠের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্বপালনকারী আলম পলাশ দৈনিক প্রথম আলো ও মাছরাঙা টিভির জেলা প্রতিনিধি, চাঁদপুর ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, দৈনিক আলোকিত চাঁদপুরের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও দৈনিক চাঁদপুরের সাবেক নির্বাহী সম্পাদক। চাঁদপুর কণ্ঠ সাপ্তাহিক থাকাকালীন প্রথমাবস্থায় স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে দায়িত্বপালনকারী সোহেল রুশদী দৈনিক চাঁদপুর খবরের সম্পাদক-প্রকাশক ও চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সেক্রেটারী। চাঁদপুর খবরের প্রধান সম্পাদক এমআই মমিন খানও চাঁদপুর কণ্ঠে স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন কিছুদিন। চাঁদপুর কণ্ঠের সাবেক সহ-সম্পাদক শাহআলম মল্লিক বর্তমানে দৈনিক চাঁদপুর বার্তার নির্বাহী সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবী নেতা, চাঁদপুর কণ্ঠের পাঠক ফোরামের সাবেক বিভাগীয় সম্পাদক শাহাদাত হোসেন শান্ত একাধিক কাব্যগ্রন্থের প্রণেতা, শিশুকল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং সেলিম রেজা (ম্যানেজার, চাঁদপুর কণ্ঠ) চাঁদপুর জেলা এক্স ক্যাডেট অ্যাসোসিয়েশন চাঁদপুর জেলা শাখা, কমিউনিটি পুলিশিং চাঁদপুর অঞ্চল-৭-এর সেক্রেটারী ও অঞ্চল-৫-এর প্রশাসনিক কর্মকর্তা। চাঁদপুর কণ্ঠের হাজীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি পাপ্পু মাহমুদ হাজীগঞ্জ প্রেসক্লাবের বিভিন্ন পদে, হাজীগঞ্জের বিভিন্ন পত্রিকার গুরুত্বপূর্ণ পদে ও হাজীগঞ্জ রোটার্যাক্ট ক্লাবের সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। মহামায়া প্রতিনিধি নজরুল ইসলাম বাবলু ও রাজারগাঁও প্রতিনিধি আলমগীর কবির চাঁদপুর কণ্ঠে দায়িত্বপালনের পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে সুনামের সাথে সামাজিক কাজ করছেন। আমরা অকালে ট্রাক্টরের ধাক্কায় হারিয়েছি ফরিদগঞ্জের চান্দ্রা প্রতিনিধি সেলিম মিয়াকে। বর্তমানে তার স্থলে কাজ করছেন ছোটভাই এমরান হোসেন লিটন, যিনি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের উপজেলা পর্যায়ে তথ্য বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বপালন করছেন।
আজ শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করতে হয় চাঁদপুর সাংবাদিক অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এমএমএ বাতেন ও সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান আরশাদ আলী (পরবর্তীতে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সেক্রেটারী)কে, যাঁরা চাঁদপুর কণ্ঠের দৈনিক হিসেবে যাত্রা শুরুর দিনগুলোতে অনেক অবদান রেখেছেন। আজ দুজনেই বেঁচে নেই। অকালেই হারিয়েছি তাঁদেরকে। তাঁদের উভয়ের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
চাঁদপুর কণ্ঠের ঢাকা প্রতিনিধি হিসেবে বর্তমানে কর্মরত রাসেল হাসান জেলার শ্রেষ্ঠ বিতার্কিক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেননি, এক সময় ফরিদগঞ্জ থেকে সংবাদ পাঠিয়ে ও চাঁদপুর কণ্ঠ কার্যালয়ে সম্পাদনা সহকারী হিসেবে কাজ করে সাংবাদিকতায় নিজের প্রতিভার পরিচয় দিতে সক্ষম হয়েছেন। তার মতো ঢাকায় অবস্থানরত, চাঁদপুর কণ্ঠের সহকারী সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপনের কথা না বললেই নয়, যিনি চাঁদপুরে থাকাকালীন চাঁদপুর কণ্ঠ বিতর্ক ফাউন্ডেশনকে প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারী হিসেবে আগলে রেখেছেন এবং সরকারি রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্তিতে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন।
আমাদের বিদেশী প্রতিনিধিদের মধ্যে ইতালী প্রতিনিধি জমির হোসেন জনি অল ইউরোপ বাংলা প্রেসক্লাবের সেক্রেটারী এবং যুগান্তর ও জাগো নিউজের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন। তিনি প্রকাশ করেছেন স্বীয় গ্রন্থ। রিয়াদে থেকে চাঁদপুর কণ্ঠের মধ্যপ্রাচ্য প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন জাহাঙ্গীর আলম হৃদয়, যিনি একাধারে সাংবাদিকতা ও নাট্যাভিনয়ে দেশে-বিদেশে খ্যাতি অর্জন করেছেন। তিনি রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে এটুআই সেকশন ও ঢাকা মেডিকেল সেন্টারের কর্মকর্তা। তিনি ইতোমধ্যে বাংলা ও ইংরেজিতে একাধিক গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন।
চাঁদপুর কণ্ঠের অন্যতম উপদেষ্টা প্রফেসর ড. অরুণ চন্দ্র পাল আমেরিকা প্রবাসী হলেও বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে চলছেন।
চাঁদপুর কণ্ঠ অনলাইন সংস্করণের যাত্রা প্রায় ১৬ বছর আগে। ২০১৭ সাল থেকে চাঁদপুর কণ্ঠের অনলাইন সংস্করণের নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে এর উন্নয়নে কাজ করছেন আমার একমাত্র পুত্র আশিক-বিন-ইকবাল আনন্দ। ১ জুন ২০২১ থেকে অনলাইনের আধুনিকায়নে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে এসেছেন সাবেক সহকর্মী আবু সাঈদ কাওসার। আমার বিশ্বাস, আনন্দ-উজ্জ্বল-কাওসারের সমন্বয়ে অনলাইনে বৈচিত্র্য আসবে।
২৭ ও ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমি এতো দীর্ঘ লেখার চেষ্টা করলাম এবং বর্তমান ও সাবেক সহকর্মীদের মূল্যায়নের চেষ্টা করলাম। অনিচ্ছাকৃতভাবে কারো পরিচয় বা মূল্যায়ন বাদ পড়ে যেতে পারে। সেজন্যে দুঃখিত।
লেখক : প্রতিষ্ঠাতা, সম্পাদক ও প্রকাশক, দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ ; সাবেক সভাপতি : চাঁদপুর প্রেসক্লাব, চাঁদপুর জেলা আইনজীবী সমিতি ও চাঁদপুর ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন।