প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৬
চাঁদপুরকে নিয়ে রেল কর্তৃপক্ষের অবহেলার শেষ কোথায়?
ইঞ্জিন বিকল হওয়ায় নির্ধারিত সময়ের দেড় ঘণ্টা পর চাঁদপুর থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে আন্তঃনগর মেঘনা এক্সপ্রেস ট্রেন। তবে বিকল ইঞ্জিন কিছুটা সচল হলেও তা হাজীগঞ্জ স্টেশনে গিয়ে আবারও বন্ধ হয়ে যায়। পরে লাকসাম থেকে বিকল্প ইঞ্জিন এনে গন্তব্যে রওনা হয় ট্রেনটি। এতে দুই শতাধিক যাত্রী বিড়ম্বনা ও দুর্ভোগের শিকার হয়। শুক্রবার (২২ নভেম্বর ২০২৪) ভোর ৫ টায় চাঁদপুর বড়ো স্টেশন থেকে মেঘনা এক্সপ্রেস চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হলে মূল স্টেশন থেকে দেড় কিলোমিটার পথ চলার পর চাঁদপুর শহরের মিশন রোড এলাকায় ইঞ্জিন বিকল হয়ে বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন। দেড় ঘণ্টা চেষ্টার পর বিকল ইঞ্জিন চালু করে ট্রেন যাত্রা করলেও এক পর্যায়ে হাজীগঞ্জ স্টেশন পর্যন্ত পৌঁছানোর পর আবারও ইঞ্জিনে ত্রুটি দেখা দেয়।
চাঁদপুর বড় স্টেশন মাস্টার মারুফ হোসেন জানান, সকাল ১০টায় লাকসাম থেকে বিকল্প ইঞ্জিন এনে পরে ট্রেনটি চট্টগ্রামের পথে রওয়ানা করে।ট্রেনের চালক মাহবুব আলম জানান, কয়েক ঘণ্টা বিলম্ব হলেও নিরাপদে চট্টগ্রাম স্টেশনে আন্তঃনগর মেঘনা এক্সপ্রেস পৌঁছেছে। ট্রেনের পরিচালক লিটন জানান, প্রায় আড়াইশ যাত্রী ছিলেন ট্রেনটিতে।
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের নৌপথের যাত্রী সাধারণের চট্টগ্রাম যাওয়ার জন্যে এবং চাঁদপুরের রেল যাত্রীদের সুবিধার্থে ১৯৮৫ সালে চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রেলপথে যাত্রা শুরু করে আন্তঃনগর মেঘনা এক্সপ্রেস। প্রতিদিন ভোর ৫টায় ছেড়ে ট্রেনটি চট্টগ্রামে পৌঁছে সকাল সাড়ে ৯টায়। তবে অনেক পুরনো ইঞ্জিন ও বগি দিয়ে লক্কড়ঝক্কড় অবস্থায় চলে আসছে এই ট্রেনটি। এটি সংস্কারের জন্যে তথা যাত্রীসেবা উন্নয়নের জন্যে দীর্ঘদিনের দাবি থাকলেও কার্যত কোনো উদ্যোগ নেয়নি রেল কর্তৃপক্ষ।
সামরিক স্বৈরশাসক এরশাদের আমলে চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রেলরুটে মেঘনা আন্তঃনগর এক্সপ্রেস চালু হয়ে চমক সৃষ্টি করলেও পরবর্তীতে চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথে একে একে সকল লোকাল ট্রেন বন্ধ করে দেয়া হয়। আর চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রেলরুটে সাগরিকা এক্সপ্রেস নামে আরেকটি এক্সপ্রেস ট্রেন চালু করা হয়, যেটি চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথে লোকাল এবং বাকি পথে মেইল হিসেবে চলে আসছে। হাসিনা সরকারের সময়ে চাঁদপুর-কুমিল্লা রেলরুটে একটি কমিউটার ট্রেন দিনে দুবার যাতায়াত করলেও কয়েক বছরের ব্যবধানে সেটি বিকল হয়ে ক্রমশ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে বিকল্প ট্রেন চালু করা হয়নি। কথা ছিলো, মেঘনা এক্সপ্রেসের রুট বৃদ্ধি করে সেটি চাঁদপুর-কক্সবাজারের মধ্যে চালানো হবে। কিন্তু সে কথাও রেল কর্তৃপক্ষ আর রাখেনি। উপর্যুপরি পুরানো ইঞ্জিন দিয়ে মেঘনা এক্সপ্রেস চালিয়ে যাত্রী-ভোগান্তি নিশ্চিত করেছে। এভাবে চাঁদপুরের প্রতি রেল কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও উদাসীনতার পরিমাণ দিনদিন বৃদ্ধিই পাচ্ছে। সেটার ফিরিস্তি দিয়ে এই নিবন্ধ দীর্ঘ করতে চাই না। এটার শেষ কোথায় সেটিই দেখার বিষয়।