প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০
ফরিদগঞ্জ উপজেলার শাশিয়ালী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে সেলিনা বেগমের নিয়োগে জালিয়াতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে এই মর্মে দুদকে দায়েরকৃত অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে ওই অভিযোগ ছাড়াও বিদ্যালয়ের এক প্রতিষ্ঠাতা সদস্যও এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
দুদকের প্রেরিত চিঠির আলোকে চাঁদপুর জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার গিয়াস উদ্দিন পাটওয়ারীর নেতৃত্বে একটি টিম গতকাল ৪ অক্টোবর সোমবার সকালে বিদ্যালয়ে তদন্ত শুরু করেছেন।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন নি¤œ মাধ্যমিক হিসেবে এমপিওভুক্ত বিদ্যালয় থাকার পর কয়েক বছর পূর্বে দশম শ্রেণী পর্যন্ত এমপিও তালিকাভুক্ত ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৭নং পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নের শাশিয়ালী উচ্চ বিদ্যালয়। এমপিওভুক্তির পর নিয়মানুসারে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদসহ কয়েকটি পদে নিয়োগের বিষয়টি সামনে চলে আসে। সেই প্রেক্ষিতে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি সফিকুল ইসলাম তপাদারের স্ত্রী সেলিনা বেগম (ইনডেক্স নং ঘ ৫৬৮০০৩৪০)কে নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু এই নিয়োগ প্রক্রিয়াটি যথাযথ বিধি না মেনে করা হয়েছে এবং অনিয়মের আশ্রয় নেয়া হয়েছে মর্মে চলতি বছরের ২৭ জুলাই দুদকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন স্থানীয় আনোয়ার হোসেন ও সোহাগ পাটওয়ারী। এছাড়া ওই দুজন উপজেলা, জেলা এবং কেন্দ্রীয় পর্যায়ে লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগকারী আনোয়ার হোসেন ও সোহাগ পাটওয়ারী জানান, এমপিও নীতিমালা ২০১৮/১৯ মোতাবেক সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে ১০ বছর নিয়মিত চাকুরি করার নিয়ম থাকলেও নিয়োগপ্রাপ্তকে ২০০৫ সালে ননএমপিও অবস্থায় নিয়োগ দেখানো হয়। কিন্তু তাকে কখনোই বিদ্যালয়ে এসে ক্লাস নিতে দেখা যায়নি। বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতির স্ত্রী হওয়ার সুযোগে তিনি সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়ে যান। অথচ তিনি স্বামীর সাথে ঢাকায় বসবাস করেছেন। কখনোই বিদ্যালয়ে আসেন নি। ফলে তিনি নিয়মিত শিক্ষক নন। তার নিয়োগে হয়েছে অনিয়ম। অথচ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সাবেক সভাপতিকে খুশি করতে নীতিমালা উপেক্ষা করে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। ফলে বাধ্য হয়ে দুদক বরাবর আবেদন করেছি।
দুদকে আবেদনের প্রেক্ষিতে দুদক চাঁদপুর জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ গিয়াস উদ্দিন পাটওয়ারীকে তদন্তপূর্বক রিপোর্ট করার দায়িত্ব দেয়। সেই আলোকে ৪ অক্টোবর সোমবার সকালে তার নেতৃত্বে একটি তদন্ত দল শাশিয়ালী উচ্চ বিদ্যালয়ে তদন্ত করতে আসে।
বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হুমায়ুন কবির জানান, তিনিও এই নিয়মের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এতোবড় অনিয়ম মেনে নেয়া যায় না।
দশম শ্রেণির ছাত্র আরমান মজুমদারসহ বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, আমরা ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে এই বিদ্যালয়ে পড়ছি। সেলিনা ম্যাডামকে কোনোদিন বিদ্যালয়ে ক্লাস করতে দেখি নি।
তদন্ত শেষে সাংবাদিকদেরকে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন পাটওয়ারী জানান, আমরা দুদকের চিঠির আলোকে তদন্ত শুরু করেছি। প্রাথমিকভাবে কিছু কাগজপত্র দেখেছি। তাদেরকে চাহিদা মাফিক আরো কাগজ দিতে বলেছি। আগামী ১৪ তারিখের মধ্যে আমাদের রিপোর্ট প্রদান করতে হবে।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইকবাল হোসেন জানান, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি এসেছে। আমি তাদের চাহিদা মোতাবেক কাগজপত্র সরবরাহ করেছি।