প্রকাশ : ০২ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০
হাইমচর উপজেলার ৬নং চরভৈরবী ইউনিয়নস্থ আজিজিয়া আজহারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার সুপারিন্টেন্ডেন্ট মাওঃ মোঃ ফারুকুল ইসলামের অনিয়ম ও অদক্ষতার কারণে ব্যাহত হচ্ছে মাদ্রাসার উন্নয়ন ও শিক্ষার মান। শিক্ষকদের টাইম স্কেল ২ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। মাদ্রাসার সুপার মোঃ ফারুকুল ইসলামের বিরুদ্ধে মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীরা ২০২০ সালের ১৪ অক্টোবর মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ দায়ের করেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিযোগের তদন্তের দায়িত্ব দেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিগ্যান চাকমাকে। কিছু কিছু অভিযোগের তথ্য-প্রমাণ না মিললেও শিক্ষক-কর্মচারীদের সাথে কুরুচিপূর্ণ আচরণ, অশালীন ভাষা ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদে সত্যতা পাওয়া গেছে। বর্তমান করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাঠদান শুরু হয়। কিন্তু অত্র মাদ্রাসায় স্বাস্থ্য সুরক্ষায় হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্কের কোনো ব্যবস্থা লক্ষ্য করা যায়নি।
মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা জানায়, আমাদের মাদ্রাসায় কোনো স্যানিটাইজারের ও মাস্কের ব্যবস্থা নেই। মাদ্রাসার শিক্ষকদের অভিযোগ হলো, তারা টাইম স্কেল পেলেও নানান অভিযোগে সুপার সেটি আটকে রাখেন। এ ব্যাপারে অফিস সহকারী মিল্টন জানান, মাদ্রাসার সুপার শিক্ষকদের সাথে খারাপ আচরণ করেন, এ ব্যাপারে আমরা ২০১৭ সালে সকল শিক্ষক-কর্মচারী মাদ্রাসার সভাপতি বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছি। তিনি আরো বলেন, সুপার নিয়মিত জামাতের সংগঠনকে চাঁদা দিয়ে আসছেন। তার রসিদ আমাদের কাছে রয়েছে। ৩ মাস হয়েছে, কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও এখনও এডহক কমিটি করতে পারেননি। মাদ্রাসার কমিটি না করায় ব্যাহত হচ্ছে উন্নয়ন, স্বীকৃতি ও শিক্ষার মান- এমনটাই অভিযোগ অভিভাবকদের।
মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মোঃ ফারুকুল ইসলাম জানান, আমি টাইম স্কেল পেয়েছি ২০২০ সালের ১ জুন থেকে। কিন্তু আজ পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন করার কোনো খবর নেই। গত ২২ ডিসেম্বর কমিটির রেজুলেশন হয়েছে, আমার কাছে অর্থ চাইলে আমি দেইনি। আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করি। তিনি বলেছেন দিয়ে দেয়ার জন্যে। আমার কাছে ১ মাসের সময় নিয়েছেন। টাইম স্কেল না পাওয়ায় আমার ছেলে-মেয়েদের নিয়ে কষ্টে জীবন কাটাতে হচ্ছে।
মাদ্রাসার সভাপতি ডাঃ মোঃ আঃ মালেক জানান, একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য যে যোগ্যতা ও দক্ষতার প্রয়োজন আছে, আমি মনে করি, সুপারের মাদ্রাসা পরিচালনা করার কোনো দক্ষতা নেই। সুপারের অনিয়মের কারণে আজও তিনি মাদ্রাসার একটি কমিটি গঠন করতে পারেননি। কমিটি না থাকায় মাদ্রাসার কোনো উন্নয়ন হচ্ছে না। মাদ্রাসার স্বীকৃতির জন্য রেজুলেশন করে বারবার তাগিদ দিলেও সুপার তার দায়িত্ব পালন করা থেকে বিরত রয়েছেন। যে সকল শিক্ষকের টাইম স্কেলের সময় হয়েছে তাদের টাইম স্কেল দেয়ার জন্য ৩/৫ বার রেজুলেশন করে দেয়া সত্ত্বেও তা করেননি। সুপার শিক্ষকদের সাথে অন্যায় করেছেন।
সুপার মোঃ ফারুকুল ইসলাম জানান, শিক্ষক ও কিছু অভিভাবক সদস্য মিলে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছে তা মিথ্যে বলে প্রমাণিত হয়েছে। টাইম স্কেল দেয়ার ক্ষেত্রে যাদের ১০ বছর পূর্ণ হয়েছে তারা যোগ্যতা অনুযায়ী পাবেন। আমি কোনো শিক্ষকের সাথে খারাপ আচরণ করিনি।