প্রকাশ : ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
গণি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের অতীত ঐতিহ্য অক্ষুণ্ণ রাখতে নিষ্ঠাবান প্রধান শিক্ষক আব্বাস উদ্দিন
ষড়যন্ত্র আর নানা প্রতিবন্ধকতা ও প্রতিকূলতা দিয়ে শুরু হওয়া পথচলায় সকল অপশক্তিকে পিছনে ফেলে প্রতিষ্ঠানের অতীত ঐতিহ্য অক্ষুণ্ণ রাখতে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া অদম্য এক ব্যক্তির নাম আব্বাস উদ্দিন।
চাঁদপুরের ঐতিহ্যবাহী মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গণি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়টি নব্বইর দশকের শেষ দিকে শুধুমাত্র দক্ষ ও যোগ্য নেতৃত্বের কারণে এক ডুবন্ত তরীতে পরিণত হয়। ঠিক সেই মুহূর্তে এই ডুবন্ত তরীকে তীরে ভিড়ানোর দায়িত্ব নিয়ে একবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে অর্থাৎ ২০০৬ সালের ১ জানুয়ারি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন মোঃ আব্বাস উদ্দিন।
অনেকের পথচলার শুরুটা মসৃণ হলেও, দুর্ভাগ্যজনকভাবে শুরু থেকেই তাকে ঘরে বাইরে নানামুখী ষড়যন্ত্রের বেগ পোহাতে হয়। শুরু হয় প্রতিকূলতার, প্রতিবন্ধকতার। কিন্তু সকল প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করে সাফল্যের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছতে দৃঢ় বিশ্বাস ও আস্থা রেখে তিনি এই বিদ্যালয়টির হারানো ঐতিহ্যকে অক্ষুণ্ণ রাখতে প্রাণপণ চেষ্টা অব্যাহত রাখেন। মহান আল্লাহ তাঁর সেই চেষ্টাকে সফলতায় রূপদান করেন।
শুরুতে আব্বাস উদ্দিন তাঁর দক্ষতা, মেধা, মননশীলতা এবং অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যালয়টিকে প্রশাসনিক নিয়ম ও কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসেন। তৎকালীন সময় মাত্র ২৫০ জন ছাত্র আর ১২ জন শিক্ষক নিয়ে পথচলা এই বিদ্যালয়টিকে বর্তমানে সাড়ে ১২শ’ ছাত্র এবং স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ২৮ জন শিক্ষকের প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেন।
বিদ্যালয়টিকে শিক্ষার পাশাপাশি ক্রীড়া, সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিয়ে যান আব্বাস উদ্দিন। জেলায় নয়, সারা দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে বিদ্যালয়টির সুনাম। ফিরে আসতে থাকে হারিয়ে যাওয়া অতীত ঐতিহ্য ও সুনাম। পাশাপাশি করা হয় প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়ন। সেই ধারাবাহিকতায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিদ্যালয়ে একটি ৩ তলা বিশিষ্ট ভবনের অনুমোদন দেয়, যা বর্তমানে বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত সমস্যার সমাধান করেছে।
প্রধান শিক্ষক হিসেবে আব্বাস উদ্দিনের যোগ্য নেতৃত্বের কারণে জেলায় শুধু একবার বা দু’বার নয়, তিনি পর পর তিন বার শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক হিসেবে পুরস্কৃত হন। শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক আয়োজিত উচ্চ বিদ্যালয় পর্যায়ের ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় এ বিদ্যালয়টি জাতীয় পর্যায়ে রানার্সআপ হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করে। তিনি তাঁর মেধা, মনশীলতা, যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার কারণে বঙ্গবন্ধু পরিষদ চাঁদপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
একজন প্রধান শিক্ষক হিসেবে তিনি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালন করার কথা, কিন্তু তিনি সেটি না করে বিদ্যালয়টিকে নিজের সন্তানের মতো ভালোবেসে এগিয়ে নিতে প্রাণপণ চেষ্টার অংশ হিসেবে সাবেক শিক্ষার্থী, যাঁরা আজকে দেশের উচ্চ পর্যায়ে রয়েছেন, তাঁদের সহযোগিতায় প্রাণপণ চেষ্টা করে মন্ত্রী পরিষদের মাধ্যমে স্থানীয় এমপি, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও বর্তমান সমাজকল্যাণমন্ত্রীর সহযোগিতায় বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়নে একটি ১০তলা ভবন অনুমোদন করিয়ে নিয়ে আসেন। যা সারা বাংলাদেশের উচ্চ বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে রেকর্ড। বর্তমানে সেই দশতলা ভবনটির কাজ চলমান অবস্থায় রয়েছে।
আব্বাস উদ্দিন শুধু ব্যক্তিগতভাবেই একজন দক্ষ ও প্রশাসনিক ব্যক্তি নন, তিনি অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান প্রধান। ফলে তিনি সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন নিয়মণ্ডকানুন প্রশাসনিকভাবে কঠোর হস্তে পালনের নির্দেশনা দিতে গিয়ে ঘরে বাইরে নানামুখী ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছেন। এ নির্দেশনার অন্যতম হচ্ছে বিদ্যালয়ে শিক্ষকরা যেন উক্ত বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ছাত্রদেরকে প্রাইভেট পড়ার ব্যাপারে উৎসাহিত না করেন, নিয়ম অনুযায়ী ক্লাসে তাদেরকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পাঠদান করে পাস করানোর বিষয়ে আন্তরিক হন। এতে শুরু হওয়া ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে নামে-বেনামে একটি চক্র তাঁকে সামাজিকভাবে হেয় করার জন্যে বিভিন্ন স্থানে ভুয়া অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করার চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে।