১৮ অক্টোবর বুধবার ‘শেখ রাসেল দিবস’ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করেছে চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজ। এ উপলক্ষে কলেজ কর্তৃক বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। সকাল ৯টায় চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ মাসুদুর রহমানের নেতৃত্বে চাঁদপুর স্টেডিয়ামে শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করার মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর সকাল ১০টায় ‘শেখ রাসেল দেয়ালিকা’ উন্মোচন করা হয়। সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে শহীদ শেখ রাসেল স্মরণে কলেজ ক্যাম্পাসে গাছের চারা রোপণ করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় শহীদ শেখ রাসেল সম্পর্কে কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। বেলা ১১টায় ‘শেখ রাসেল দীপ্তিময়, নির্ভীক নির্মল দুর্জয়’ প্রতিপাদ্যে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে বেলা ১২টায় শেখ রাসেল স্মরণে দোয়ার আয়োজন করা হয়।

শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে কলেজের অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভায় পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান ও গীতা পাঠ করেন দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী প্রাপ্তি রাণী শীল। আলোচনা সভায় কলেজের সাহিত্য ও সংস্কৃতি কমিটির আহ্বায়ক ও সহযোগী অধ্যাপক জীবন কানাই সাহার সভাপতিত্বে এবং অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নুরুননাহারের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ মাসুদুর রহমান, শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক ও সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ এনামুল হক, ভূগোল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ মাসুদ হোসেন, রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আফসার আলী শিকদার প্রমুখ।

কলেজের অধ্যক্ষ তাঁর বক্তব্যে বলেন, আজ ১৮ অক্টোবর, ১৯৬৪ সালের এইদিনে ধানমন্ডির বত্রিশ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক বাড়িতে কনিষ্ঠ পুত্র জন্মগ্রহণ করেন। শিশু রাসেল বেঁচে থাকলে আজকের এইদিনে মানুষটি হতেন এক অনন্য গুণাবলির ব্যক্তিত্ব। বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিরা শুধু জাতির পিতাকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকারের চিহ্নটুকু নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিলো। আর তাদের এই ঘৃণ্য অপচেষ্টা শতভাগ ব্যর্থতার পর্যবসিত হয়েছে। এটি আজ প্রমাণিত।

তিনি বলেন, শেখ রাসেল আজ বাংলাদেশের প্রতিটি শিশু-কিশোর, তরুণ, শুভবুদ্ধি বোধসম্পন্ন মানুষের কাছে একটি ভালোবাসার নাম, অবহেলিত, পশ্চাৎপদ, অধিকারবঞ্চিত শিশু-কিশোরদের আলোকিত জীবন গড়ার প্রতীক হয়ে গ্রাম থেকে শহর তথা বাংলাদেশের প্রতিটি লোকালয়ে ছড়িয়ে পড়ুক এবং সরকার শেখ রাসেলের ১১ বছরের জীবন গল্পের প্রতিটি মুহূর্ত আমাদের খুদে শিক্ষার্থীদের মাঝে তুলে ধরবে এটাই জাতির প্রত্যাশা। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন দর্শন ও আদর্শ ধারণ করেই বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সফলতার সঙ্গে দেশকে এগিয়ে নিয়েছেন এবং গড়ে তুলেছেন সমৃদ্ধ বাংলাদেশে; ক্রমাগত বৃদ্ধি করেছেন মাথাপিছুু জাতীয় আয়, জীবনযাত্রার মান, শিক্ষার হার, খাদ্য ও সামাজিক নিরাপত্তা, নারীর ক্ষমতায়ন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, শিল্পায়ন, রপ্তানি বাণিজ্য, কর্মসংস্থান, পদ্মাসেতুসহ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন ও দেশের সার্বিক উন্নয়ন। ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ এবং ভিশন-২০২১, এসডিজি-২০৩০ ও ভিশন-২০৪১-এর মাধ্যমে বাংলাদেশকে বানিয়েছেন উন্নয়নের রোল মডেল।

দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত কুইজ প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছেন একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ইসমত জাহান তারিন, দ্বিতীয় হয়েছেন দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী নূর হালিজা তৃশা এবং তৃতীয় হয়েছেন একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান নিশি। দোয়া অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন অত্র কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবদুল মান্নান মিয়া। আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে অত্র কলেজের শিক্ষক, কর্মচারী, শিক্ষার্থী, বিএনসিসি, রেডক্রিসেন্ট, গার্লস ইন রোভারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।