প্রকাশ : ০৫ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০
![বীর মুক্তিযোদ্ধা তাহেরের বাড়ির গণঘাটলা নির্মিত হলো চেয়ারম্যান তাহেরের বাড়িতে!](/assets/news_photos/2023/04/05/image-31534.jpg)
জেলা পরিষদের অর্থায়নে বিভিন্ন স্থানে নির্মিত হয় গণঘাটলা। তারই ধারাবাহিকতায় একটি গণঘাটলার অনুমোদন মিলে হাজীগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহেরের নামে। সেই ঘটলা নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান আবু তাহের প্রধানীয়ার বাড়ির পুকুরে নির্মাণ শেষে নেমপ্লেট বসানোর পরেই বেরিয়ে এলো থলের বেড়াল। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে জানাজানি হওয়ার পর টনক নড়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। ঘটনাটি হাজীগঞ্জের দ্বাদশগ্রাম ইউনিয়নের ইয়াপুরা গ্রামের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দ্বাদশ গ্রাম ইউনিয়নের ইয়াপুর গ্রাম। এই গ্রামের ওয়ারিশ মিজি বাড়ির সন্তান উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ড কাউন্সিলের কমান্ডার আবু তাহের। একই গ্রামের প্রধানীয়া বাড়ির সন্তান ও দ্বাদশগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান আবু তাহের প্রধানীয়া। জেলা পরিষদের অর্থায়নে নির্মিত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহেরের বাড়ির গণঘাটলা নির্মাণ হয়ে যায় চেয়ারম্যান আবু তাহের প্রধানীয়া বাড়ির পুকুরে।
স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, সবাই ভেবেছে নতুন চেয়ারম্যানের বাড়িতে সরকারি ঘাটলা হবে এটা হতেই পারে। কিন্তু ঘাটলা নির্মাণ শেষে সেই ঘাটলায় নেমপ্লট লাগানোর পর ঘটে বিপত্তি। এলাকাবাসী বুঝতে পারে এটি চেয়ারম্যান তাহেরের বাড়ির ঘাটলা নয়, এটি মূলত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহেরের বাড়ির ঘাটলা। দুই তাহেরের নামের মধ্যে কিছুটা মিল থাকলে ঠিকানা আর পদবিতে রয়েছে অনেক তফাৎ।
সরজমিনে প্রধানীয়া বাড়িতে গেলে দেখা যায়, বাড়ির পুকুরে এখন দুটি পাকা ঘাটলা রয়েছে। একটি নতুন, আরেকটা পুরোনো। নতুন নির্মিত ঘাটলাটির নেমপ্লেটে লেখা ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবু তাহের-এর বাড়ির সামনে গণঘাটলা নির্মাণ’। চাঁদপুর জেলা পরিষদের ২০২২-২৩ অর্থবছরের অর্থায়নে গণঘাটলাটি নির্মিত হয়।
এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবু তাহের জানান, গত বছরের ২ এপ্রিল জেলা পরিষদের কাছে আমি একটি পাকা ঘাটলার জন্যে আবেদন করি। গত ৩/৪ দিন ধরে এলাকা থেকে জানতে পারি নতুন চেয়ারম্যানের বাড়িতে একটি পাকা ঘটলা নির্মিত হয়েছে। সেটিতে আমার নামের নেমপ্লেট বসানো হয়েছে। আমি ইতোমধ্যে জেলা পরিষদের কাছে মৌখিকভাবে বিষয়টি জানিয়েছি।
ইউপি চেয়ারম্যান আবু তাহের প্রধানীয়ার বাবা নুরুল ইসলাম প্রধানীয়া জানান, ঠিকাদার এসে আবু তাহেরের বাড়ি কোনটা জানতে চেয়েছে। তখন আমরা জায়গা দেখিয়ে দিই। সেই সময় আমরা সবাই নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। নেমপ্লেট বসানোর পর দেখি সেখানে লেখা ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’। আমার ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা না।
নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান আবু তাহের প্রধানীয়া বলেন, ঘাটলাটি নির্মাণের সময় আমার জানা ছিলো না। আমি বাড়িতে থাকি না। আমি প্রথমে জানতে পারলে কোনোভাবেই এই ঘাটলা আমাদের বাড়িতে হতো না । মা-বাবা ও ভাইয়েরা থাকেন।
‘ঘটলাটি কার ইশারায় সঠিক স্থানে নির্মিত হয়নি’ জানতে চাইলে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান।
জেলা পরিষদের প্রকৌশলী মোঃ ইকবাল হোসেন জানান, এটা ঠিকাদারের মিসটেক। পাশাপাশি বাড়ি তো পরে আমরা এটা সংশোধন করে নেবো।