প্রকাশ : ০৭ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০
৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত কচুয়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিভিন্ন স্থানে বেশ ক’টি কেন্দ্রে চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষসহ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩০জন হতাহত হয়েছে।
আশ্রাফপুর নতুনবাজার সংলগ্ন ঘনিয়া ইসলামিয়া ফাযিল মাদ্রাসা কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন জানান, দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ২০/২৫ জনের একটি দুর্বৃত্তের দল দুটি ককটেল ফাটিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করে কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করে। এতে প্রায় পৌনে ১ ঘণ্টা ভোটগ্রহণ বন্ধ থাকে।
ওই ইউনিয়নের পিপলকরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন জানান, দুপুর সোয়া ১টার দিকে ২০/২৫ জনের একটি দুর্বৃত্তের দল কেন্দ্র দখল করার চেষ্টা করে। দুর্বৃত্তরা ব্যালটভর্তি ভোটের একটি বাক্স ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। এছাড়া একটি খালি ব্যালট বাক্স মেঝের ওপর আছড়িয়ে ভাংচুর করে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। প্রায় আধঘণ্টা ভোটগ্রহণ স্থগিত ছিলো।
পশ্চিম সহদেবপুর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুস সামাদ (আনারস) জানান, দুপুর ১টার দিকে তার প্রতিপক্ষ প্রার্থীর কর্মীরা জোরপূর্বক প্রসন্নকাপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রবেশ করে তার এজেন্টদেরকে মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়। এতে তার ৪ এজেন্ট আহত হয়।
বিকেল ৩টার দিকে সাচার ইউনিয়নের হাতিরবন্দ এলাকায় নয়াকান্দি গ্রামের শহিদের ছেলে শরিফ (২২) ভোট কেন্দ্রে আসার সময় রব মেম্বারের বাড়ির নিকট আসলে তাকে ছুরিকাঘাত করাসহ আরো কয়েকজনকে পিটিয়ে আহত করে। শরিফকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয় বলে জানান সাচার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোঃ আনোয়ার হোসেন। পরে শরিফ মারা যায়।
সন্ধ্যা পৌনে ৮টার দিকে বিতারা ইউনিয়নের বাইছারা গ্রামের দক্ষিণপাড়ার মোঃ মফিজুর রহমানের বাড়ির নিকট আনারস প্রতীকের কর্মী-সমর্থকরা ঘোড়া প্রতীকের সমর্থক বুলবুল (৫০)কে মারধর করে রক্তাক্ত জখম করে তার চাচা শহিদুল ইসলামের বাড়ি-ঘর ভাংচুর করে। আহত বুলবুলকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। বিকেল ৩টার দিকে বিতারা কেন্দ্রে মেম্বার প্রার্থী শাহজাহানের কর্মী-সমর্থকরা মোঃ ইউনুছ মেম্বারের সমর্থক হাছান (১৮)কে মারধর করে। বর্তমানে তিনি কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার বরুচর কেন্দ্রে ভোটগণনা শেষে নাহারা গ্রামের মেম্বার প্রার্থী হাজী কাউছারের সমর্থকদের উপর বরুচর গ্রামের মোরগ প্রতীকের প্রার্থী মনির মোল্লার সমর্থকরা হামলা চালিয়ে ভোট বাক্স ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা চালায়। হামলায় গাজী কাউছারের সমর্থক হান্নান (৫০), হাবীব (২৫), নূরুল ইসলাম (৫০), রাকিব (২০), শাকিব (১৮), আল-আমিন (২৫), বশির উল্লাহ (৪৫), কাউছার (৪০) ও সেলিম (২৫)সহ বেশ ক’জনকে মারধর করে আহত করে। তারা বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা শেষে বাড়ি চলে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ও র্যাব ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
রাত ৮টার দিকে বাসাবাড়িয়া কেন্দ্রে মোরগ প্রতীকের সমর্থকরা ফুটবল প্রতীকের সমর্থক দুলাল (৫০), সাইফুল (৩৫), কাউছার (২৮), মহসিন (৩০), নয়ন (৩৫), আবুল (৭০)সহ বেশ ক’জনকে মারধর করে।
এছাড়া নির্বাচনী সহিংসতায় উজানী গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে মোঃ শাকিল (২৩) ও সফিউল্লার ছেলে ফরহাদ (২৭) কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।