রবিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জের লক্ষ্মীপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় গুরুতর আহত ৩ : এলাকায় আতঙ্ক
  •   শিক্ষা খাতে নজিরবিহীন রদবদল: একযোগে চার বোর্ড চেয়ারম্যানকে ওএসডি
  •   মধ্যরাতের আতঙ্ক
  •   চীনা সেনাদের ভারতের অরুণাচলে অনুপ্রবেশ: বিতর্কিত অঞ্চল নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে
  •   আপনার টাকা কোথায় গেল?

প্রকাশ : ২২ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০

ফরিদগঞ্জে দোকানেই চলছে সালিস ॥ দুষ্টচক্র করছে বাণিজ্য
মোঃ মিজানুর রহমান ॥

জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধ ও পারিবারিক বিরোধসহ নানা কারণে সমাজে প্রায় প্রতিদিনই মারামারি, ঝগড়া-বিবাদ ও হাঙ্গামা ঘটে থাকে। এসব নিয়ে কেউ ইউনিয়ন পরিষদে, কেউ থানা পুলিশের কাছে, কেউ আদালতে, আবার কেউ পুলিশ সুপার বা জেলা প্রশাসকের কাছেও প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেন। সকল ক্ষেত্রেই শুরুতে আইনি ব্যবস্থায় না গিয়ে উভয় পক্ষকে নিয়ে বসে সমাধানের রেওয়াজ দীর্ঘদিনের। এতে অনেকাংশেই কাক্সিক্ষত সমাধান মিলে। যদিও ইদানিংকালে এসব সালিসকে কেন্দ্র করে একটি সুবিধাবাদী দুষ্টচক্র তৈরি হয়েছে। সালিসের নামে অর্থ বাণিজ্যের প্রতি তাদের লোভ বেশি। কেউ কেউ কত টাকা দিবে এর উপর সালিসের রায়ও ধার্য্য করে। কিন্তু এসব অভিযোগ পুরানো হলেও সম্প্রতি ফরিদগঞ্জে সালিস নামে দেখা দিয়েছে ভিন্ন এক চিত্র। সালিসের নামে দুষ্ট চক্রের ভিন্ন কৌশলে দৌরাত্ম্য দেখা যাচ্ছে। চক্রটি থানা-পুলিশকে পাশ কাটিয়ে দোকানে বসে সালিস করছে। আর এ সুবাদে নানা অজুহাতে পক্ষ-বিপক্ষ উভয় থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আবার ওইসব দোকানও ঘন্টা হিসেবে ভাড়া নিচ্ছে।

থানা পুলিশ তাদের কাছে আসা ছোট-খাটো বা তুচ্ছ বিষয় নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ মামলা গ্রহণের পূর্বে সমাধান করার চেষ্টা করে। এতে সকল পক্ষই হয়রানি থেকে মুক্তি পায়। বিষয়টি প্রশংসিত হওয়ায় সারাদেশে গোলঘর তৈরির মাধ্যমে পুলিশের সাথে সাধারণ মানুষের নিবিড় সম্পর্ক তৈরির একটি ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। এসব গোলঘরেই বিট পুলিশিং, কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমের সাথে সাথে সমাধানযোগ্য অভিযোগগুলো নিয়েও বৈঠক চলে। কিন্তু ফরিদগঞ্জ থানার সামনে অর্থাৎ থানার বাউন্ডারির বাইরে বিভিন্ন দোকানে বসছে এখন সালিস। দেখা গেছে যে, থানার সামনে বেশ কিছু কম্পিউটারের দোকান হয়েছে। এসব দোকানে মামলার অভিযোগ লেখা হয়। আর এ সুযোগটিই নিয়ে থাকে অসাধু সালিস চক্র। এর সূত্র ধরেই কম্পিউটার দোকানদারের মদদে ওই দুষ্ট চক্র দোকানেই সালিসের আয়োজন করে। আর তাতেই দুষ্ট চক্রটি মোটা অংকের অর্থ বাণিজ্য করে থাকে। এছাড়া কম্পিউটারের দোকানের কেউ কেউ পুলিশ ক্লিয়ারেন্সসহ বিভিন্ন বিষয়ে আবেদন লেখার সাথে দালালিও করছে।

গত শুক্রবার বিকেলে ফরিদগঞ্জ থানার সামনে অন্যরকম দৃশ্য দেখা গেলো। থানার সামনে হাজী কম্পিউটার ও ট্রাভেলসহ কয়েকটি দোকানের ভেতরে অনেক লোক নিয়ে সালিস চলার দৃশ্য দেখা গেলো।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব দোকানে প্রতিটি সালিসের জন্য বাদী ও বিবাদী উভয় পক্ষকে ভাড়া গুণতে হয়। ফলে অনেকের কাছে এসব দোকান সালিস বাণিজ্যের দোকান হিসেবেও চিহ্নিত। দীর্ঘদিন যাবৎ এসব দোকানে রমরমা সালিস বাণিজ্য চলে আসছে। এসব দোকানে একটি এজাহার কিংবা সাধারণ ডায়েরি লেখাতে ২শ’ টাকা থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে গ্রামের নিরীহ সাধারণ মানুষের কাছ থেকে। এর বাইরে অন্য একটি জনদুর্ভোগ হচ্ছে- এসব দোকানের সামনে বড় বড় সাইনবোর্ড দিয়ে ফুটপাত দখল করে রাখায় পথচারীদের চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।

জানা গেছে, ইতিপূর্বে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ কয়েকবার এসব দোকানে সালিস বন্ধ রাখার জন্যে নিষেধ করা সত্ত্বেও রমরমা সালিস বাণিজ্য এখনো বন্ধ হচ্ছে না। প্রত্যেক পুলিশ ক্লিয়ারেন্স প্রার্থীর নিকট থেকে ক্লিয়ারেন্স বাবদ ২ হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করে থাকে ওই চক্রটি। এ ব্যাপারে সচেতন মহল প্রশাসনের কাছে প্রতিকার দাবি করছে।

এ ব্যাপারে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শহীদ হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আসলে এ বিষয়টি আমাদেরকে কেউ জানায়নি। আপনার কাছ থেকে যেহেতু শুনলাম, এ ব্যাপারে আমি অবশ্যই উদ্যোগ নেবো। দোকানদারদের ডেকে এ বিষয়ে বলবো এবং সাবধান করে দেয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়