প্রকাশ : ৩০ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০
সড়কের স্থানে স্থানে পিচ উঠে গিয়ে বিপজ্জনক হয়ে গেছে
চাঁদপুর-ফরিদগঞ্জ-রায়পুর আঞ্চলিক মহাসড়ক মরণফাঁদে পরিণত
ফরিদগঞ্জ উপজেলার উপর দিয়ে যাওয়া চাঁদপুর-ফরিদগঞ্জ-রায়পুর আঞ্চলিক মহাসড়কটি মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। শতাধিক স্থানে সড়কে পিচ সরে গিয়ে বিপজ্জনক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। সড়কটি দিনের চেয়ে রাতে আরো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠে এবড়োথেবড়ো অবস্থার কারণে। ফলে প্রতিদিন সড়ক দিয়ে দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে হাজারো যানবাহন।
|আরো খবর
জানা গেছে, সড়ক ও জনপথ বিভাগ ২০১৯-২০ অর্থ বছরের মধ্যে প্রায় ১২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে কুমিল্লা থেকে চাঁদপুর-ফরিদগঞ্জ হয়ে রায়পুর বর্ডার পর্যন্ত সড়কটির পাশ বর্ধিতকরণ ও সংস্কার কাজ সম্পন্ন করে। কিন্তু নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কয়েক মাস না যেতেই সড়কের বিভিন্ন স্থানে ফাটল ও পিচ এবড়োথেবড়ো হয়ে কোথাও সরে গেছে, আবার কোথাও কুঁজোর মতো উঠে গেছে। অথচ জেলার অন্যতম ব্যস্ততম আঞ্চলিক এই মহাসড়ক দিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা ও কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের যানবাহন ছাড়াও স্থানীয়ভাবে প্রতিদিন কয়েক হাজার যানবাহন চলাচল করছে।
সড়কটির ফরিদগঞ্জ অংশের সবচেয়ে দুর্দশাগ্রস্ত ও দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত যে ক’টি স্থান রয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে সেকদি, ধানুয়া বাজার, ভাটিয়ালপুর চৌরাস্তা, কালিরবাজার চৌরাস্তা থেকে ব্রীজ পর্যন্ত, পূর্ব বড়ালী ব্রীজ, চতুরা, খেজুরতলা, গৃদকালিন্দিয়া বাজার থেকে জোড়কবর হয়ে বর্ডার পর্যন্ত। ওই স্থানগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের কার্পেটিং উঠে গিয়ে মাঝখানে উঁচু নিচু ছোট-বড় অনেক গর্ত হয়ে মারাত্মক ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। আবার কোনো কোনো স্থানে বিশাল গর্ত সৃষ্টি হয়েছে।
সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যাত্রী ও যানবাহন চালকরা জানান, দুর্ঘটনা প্রতিদিনই ঘটছে সড়কটিতে। শুধু গত এক বছরের এ সড়কে প্রায় বড় ১৫ হতে ২০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে যানবাহনের যাত্রীসহ প্রায় ১৫ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
আশিকুর রহমান নামে এক পিকআপ ভ্যান চালক জানান, সিএনজি অটোরিকশাকে সাইড দিতে গিয়ে তার গাড়ির চাকা সড়কের খাদে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে।
মোবারক হোসেন নামে অপর এক গাড়িচালক জানান, আমরা সড়ক দিয়ে যখন গাড়ি চালাই, মনের ভেতর অনেক ভয় কাজ করে, মনে হচ্ছে খাদে পড়ে এখনই দুর্ঘটনার শিকার হই।
ফরিদগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকার জয়নাল আবেদীন জানান, কয়েক মাস পূর্বে এ সড়কে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে তার নিকটাত্মীয় সহ ৩ জন লোক মারা গেছেন।
এছাড়াও সড়কে চলাচলকারী বেশ ক’জনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সড়কটি গত কয়েক বছর আগে একাধিকবার সংস্কার করা হয়েছে। কিন্তু ঠিকমত কাজ না করার কারণে সড়কের দুরবস্থা চরমে পৌঁছেছে।
নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)র ফরিদগঞ্জ উপজেলার সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ রবি দাস বলেন, দুর্ঘটনার অনেকটা কারণ এ সড়কের বিভিন্ন স্থানে এসব গর্ত। আমরা চাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত সংস্কারের মাধ্যমে এর সমাধান করবে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ চাঁদপুর জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান জানান, জনদুর্ভোগের বিষয়টি মাথায় রেখেই সংশ্লিষ্ট সড়কটি সংস্কারের ব্যবস্থা করবো। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন হবে।