শনিবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জের লক্ষ্মীপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় গুরুতর আহত ৩ : এলাকায় আতঙ্ক
  •   শিক্ষা খাতে নজিরবিহীন রদবদল: একযোগে চার বোর্ড চেয়ারম্যানকে ওএসডি
  •   মধ্যরাতের আতঙ্ক
  •   চীনা সেনাদের ভারতের অরুণাচলে অনুপ্রবেশ: বিতর্কিত অঞ্চল নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে
  •   আপনার টাকা কোথায় গেল?

প্রকাশ : ০১ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০

সরকার তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়নে খুবই আন্তরিক
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ॥

জেলা প্রশাসন চাঁদপুরের আয়োজনে এবং সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) চাঁদপুরের সহযোগিতায় ২৮ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টায় ‘আন্তর্জাতিক সার্বজনীন তথ্যে অভিগম্যতা দিবস-২০২১’ উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বছর ইউনেস্কো দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য করেছে ‘তথ্য জানার অধিকার : পুনর্নির্মাণের অভিযাত্রায় চাই তথ্যে প্রবেশগম্যতা’। এছাড়াও বাংলাদেশে তথ্য কমিশন দিবসটির উপজীব্য করেছে ‘তথ্য আমার অধিকার, জানা আছে কি সবার?’। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ ইমতিয়াজ হোসেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, সনাক-টিআইবি দিবসটি উপলক্ষে যে প্রেজেন্টেশন দিয়েছে তা অত্যন্ত কার্যকর। এই প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে অনেকাংশে সমৃদ্ধ হতে পেরেছি। সংবিধানেও লেখা আছে জনগণই সকল ক্ষমতার মালিক। অনুরূপভাবে তথ্য অধিকার আইনটিতেও জনগণকে ক্ষমতায়িত করা হয়েছে। সরকার তথ্য অধিকার আইনকে গুরুত্ব দিচ্ছে এবং এ আইনটির বাস্তবায়নে খুবই আন্তরিকতার সাথে কাজ করছে। এই আইনের ফলে আমরা এখন একেবারে প্রান্তিক অর্থাৎ ইউনিয়ন পর্যায়ের তথ্যগুলোও ওয়েবপোর্টালের মাধ্যমে পেয়ে যাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, তথ্য অধিকার আইনটি হওয়ার ফলে এটুআই থেকেও বহু প্রশিক্ষণ ও সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিটি সরকারি দপ্তরে সিটিজেন চার্টার স্থাপন করার ফলে আমরা তথ্যক্ষেত্রে অনেক সমৃদ্ধ হতে পেরেছি। তথ্য অধিকার আইনটি হওয়ার ফলে প্রতিটি কাজের মধ্যে স্বচ্ছতা দেখা যাচ্ছে। তথ্য কমিশন থেকেও বিভিন্ন সময়ে মাঠ পর্যায়ের বাস্তবতা যাচাইয়ের জন্যে পরিদর্শন করছে।

তিনি বলেন, তথ্য অধিকার নিশ্চিতের জন্যে বিভাগীয় থেকে শুরু করে উপজেলা পর্যন্ত কমিটি রয়েছে। এই আইনটি হওয়ার ফলে সাধারণ জনগণের সাথে সরকারি কর্মকর্তাদের যোগাযোগের ক্ষেত্র বৃদ্ধি পেয়েছে। এই আইনটি সাধারণ জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। জেলা তথ্য অফিসের মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে এবং কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ আইনটি সম্পর্কে ধারণা দেয়ার জন্যে সেমিনার ও ওরিয়েন্টেশনের আয়োজন করা যেতে পারে।

চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী বলেন, তথ্য অধিকার আইন আমাদের অধিকার নিশ্চিত করেছে। এ আইনটি হওয়ার ফলে প্রতিটা দপ্তর নড়েচড়ে বসেছে। তথ্য অধিকার আইনটি হওয়ার ফলে বিভিন্ন দপ্তরের ওয়েবসাইটে অনেক তথ্য পাওয়া যায়। সচিবালয় থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি দপ্তরের ওয়েবসাইটগুলো আগের তুলনায় অনেকাংশে সমৃদ্ধ। যা এ আইনটি পাস হওয়ার পূর্বে ছিলো না। আমরা গণমাধ্যমকর্মীরা ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণে হয়তো অনেকটা সহজেই তথ্য পেয়ে যাচ্ছি। তবে তথ্য অধিকার আইনটিকে সাধারণ জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার জন্যে দিবসটি আরও সম্প্রসারিতভাবে আয়োজন করা দরকার।

স্বাগত বক্তব্যে জেলা তথ্য অফিসার মোঃ মনির হোসেন বলেন, তথ্য অধিকার আইনটি হওয়ার ফলে সরকার ও জনগণের মধ্যে একটা সেতুবন্ধন তৈরি হয়েছে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধিতে তথ্য অধিকার আইনটি খুবই কার্যকর। তথ্য আইনটি হওয়ার ফলে প্রতিটি সরকারি-বেসরকারি দপ্তরে একজন করে দায়িত্বপ্রাপ্ত তথ্য কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদগুলোতেও এখন তথ্যের উন্মুক্ততা রয়েছে। সিটিজেন চার্টার থেকে শুরু করে যে কোনো তথ্য এখন বোর্ডে টানিয়ে দেয়া হয়। যার সব কিছুই সম্ভব হয়েছে তথ্য অধিকার আইনের ফলে। তথ্য অধিকার আইনের ফলে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতাও প্রসার লাভ করেছে।

তিনি আরও বলেন, তথ্য অধিকার আইন মূলত জনগণের আইন। সরকারি-বেসরকারি যে কোনো প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্যে তথ্য অধিকার আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন আমাদের জন্যে খুবই গুরুত্বপূর্র্ণ। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার জন্যে তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

তথ্য অধিকার আইনের উপর প্রেজেন্টেশন ও ওয়েবপোর্টাল স্টাডি রিপোর্টটি উপস্থাপন করেন টিআইবির এরিয়া কো-অর্ডিনেটর মোঃ মাসুদ রানা। তিনি বলেন, সাধারণ জনগণ ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমে সেবাখাতের তথ্য পেতে অভ্যস্ত হলেও বর্তমান কোভিড-১৯-এর কারণে সৃষ্ট মহামারির ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় তথ্যপ্রাপ্তির একমাত্র উপায় হচ্ছে ইন্টারনেট তথা ওয়েবপোর্টাল। কিন্তু সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের ওয়েবপোর্টাল কাক্সিক্ষত মাত্রায় হালনাগাদ না থাকার কারণে জনগণ তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য না পেয়ে অধিকার বঞ্চিত হচ্ছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে টিআইবির সহায়তায় সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), চাঁদপুর জেলা ও জেলার অন্তর্গত ৮টি উপজেলার বিদ্যমান সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের ওয়েবপোর্টালগুলোর বর্তমান অবস্থা পর্যালোচনা কার্যক্রম পরিচালনা করেছে।

তিনি আরও বলেন, ওয়েবপোর্টালগুলোর বর্তমান অবস্থা পর্যালোচনা করা এবং এর মাধ্যমে প্রাপ্ত ঘাটতি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচরে এনে হালনাগাদ তথ্য নিশ্চিত করা এ পর্যবেক্ষণের উদ্দেশ্য। ইতোমধ্যে উক্ত পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট জেলা ও উপজেলায় প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি এ পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনের আলোকে চাঁদপুর জেলা ও এর অন্তর্গত ৮টি উপজেলার সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের ওয়েবপোর্টালগুলো শতভাগ হালনাগাদ নিশ্চিত করার জন্যে জেলা প্রশাসকের প্রতি অনুরোধ জানান। এছাড়াও তিনি দিবসটির উপর ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন।

সহকারী কমিশনার আবিদা সিফাতের সঞ্চালনায় মুক্ত আলোচনা পর্বে অংশগ্রহণ করেন কালের কণ্ঠ ও সময় টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার ফারুক আহম্মদ। উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ, সনাক-চাঁদপুরের সনাক, স্বজন, ইয়েস, ইয়েস ফ্রেন্ডস্ ও টিআইবির কর্মীবৃন্দ।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়