শনিবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জের লক্ষ্মীপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় গুরুতর আহত ৩ : এলাকায় আতঙ্ক
  •   শিক্ষা খাতে নজিরবিহীন রদবদল: একযোগে চার বোর্ড চেয়ারম্যানকে ওএসডি
  •   মধ্যরাতের আতঙ্ক
  •   চীনা সেনাদের ভারতের অরুণাচলে অনুপ্রবেশ: বিতর্কিত অঞ্চল নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে
  •   আপনার টাকা কোথায় গেল?

প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

ছাত্রদের আবেগকে কৌশলে কাজে লাগিয়ে কোড়ালিয়ায় যা হয়েছে---

অনলাইন ডেস্ক
ছাত্রদের আবেগকে কৌশলে কাজে লাগিয়ে কোড়ালিয়ায় যা হয়েছে---

চাঁদপুর শহরের কোড়ালিয়া এলাকার বাসিন্দা সরকারি কলেজ শিক্ষার্থী ফাতেমা আক্তার ও তার ভাই আল আমিনের মাকে কুপ্রস্তাব দেওয়া হয়েছে--এমন ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঘটে গেছে তুলকালাম কাণ্ড। এই নিয়ে মাছুমা বেগম ৮ সেপ্টেম্বর রাতে বাদী হয়ে কোড়ালিয়া এলাকার নয়ন বেপারী (৪৫), ফয়সাল (৩০) সহ ৮/১০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে বিবাদী করে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। পরে ৯ সেপ্টেম্বর সোমবার রাত ৯টায়

এটি মামলা হিসেবে রুজু করা হয়। মামলা নং ৩। আরেক ঘটনায় মাছুমা বেগমের মেয়ে ফাতেমা আক্তার ৯ সেপ্টেম্বর রাতে বাদী হয়ে শাহাদাত হাওলাদার, নয়ন বেপারী, ফয়সাল খলিফা, ডিস লিজা, রাকিব, হানিফ, মোঃ বাবুল প্রকাশ ইয়াবা বাবুল,

মোঃ শাহাদাত, কালু রাঢ়ী সহ ১০/১৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। পরে ১০ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টায় ১৪৩/৩৪১/৩২৩/৩৭৯/৫০৬ পেনাল কোডে মামলা রুজু হয়। মামলা নং ৫। এসব ঘটনায় দায়েরকৃত মামলা এবং ছাত্রদের আবেগকে ব্যবহার করে কোড়ালিয়ায় ঘটে তুলকালাম কাণ্ড।

এর আড়ালের রহস্যের বিষয়ে এলাকাবাসী থেকে জানা যায়, মাছুমা বেগমের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৯ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টায় সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক সামাদ ও সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থলে তদন্তে আসেন। সেই সময় মাছুমার কলেজ পড়ুয়া মেয়ে, ছেলে ও তার ভাই ভুল তথ্য দিয়ে কিছু ছাত্রকে ঘটনাস্থলে খবর দিয়ে নিয়ে আসে। উপ-পরিদর্শক সামাদ ও মামলার এজহারে অভিযুক্ত ফয়সাল কোড়ালিয়ার ৮ নং ওয়ার্ডের বিএনপি'র সভাপতি শাহাদাত হোসেন হাওলাদারকে তাদের সঙ্গে ঘটনাস্থলে যেতে অনুরোধ করেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় ফয়সালকে পেছন থেকে কেউ একজন আঘাত করাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় লোকজন ও উপস্থিত ছাত্রদের মাঝে হট্টগোল বেঁধে মারামারির ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে থানার অফিসার ইনচার্জের

নেতৃত্বে পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে ১০ সেপ্টেম্বর কিছু না বোঝার আগেই ছাত্রদের উত্তেজিত অবস্থাকে কাজে লাগিয়ে মাছুমা, তার মেয়ে, ছেলে ছাত্রদের মিথ্যা বলে মডেল থানার ভেতরে ঢুকে উপ-পরিদর্শক সামাদকে টেনেহিঁচড়ে থানা থেকে বের করে ইনচার্জের বাসভবনের নিকট নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্যে পুলিশ সদস্যরা নিয়ে যান। পরে ছাত্ররা প্রকৃত ঘটনা জানতে পেরে তাদের ভুলের জন্যে হেনস্তার শিকার সেই উপ-পরিদর্শক সামাদের নিকট ক্ষমা চেয়ে নেন।

মাছুমা বেগমের প্রতিবেশী মফিজ ছৈয়াল ও লুৎফর রহমান ছৈয়াল জানান, মাছুমা তার স্বামীর ঘরে থেকে ক্ষমতার জোরে তার শ্বশুর শাশুড়ি এমনকি তার স্বামীকেও বের করে দেন। সে গত ১৬ বছর যুব মহিলা লীগের ব্যানারে ফরিদা ইলিয়াসের সাথে কাজ করে এলাকার বহু নিরীহ মানুষকে

কষ্ট দিয়েছে এবং মামলা দিয়ে হয়রানি করে বহু টাকা কামিয়েছে। এলাকার বাচ্চু বেপারী, খোকন মিজি, দোকানদার আরশাদ জানান, মাছুমা বেগম ১৬ বছর যুবলীগ করে বহু মানুষকে হয়রানি করে অর্থ আত্মসাৎ করেছে। ৪ আগস্ট মাছুমা যুব মহিলা লীগের সভাপতি ফরিদা ইলিয়াসের সাথে লাঠিসোটা হাতে কালীবাড়ি মোড়, ছায়াবাণী মোড় ও ফয়সাল মার্কেটের সামনে ছাত্রদের বিপক্ষে অবস্থান করতে দেখা যায়। আগের রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাত্রদের দেওয়া 'এক দফা দাবি'র বিপরীতে 'জনে জনে খবর দে, এক দফার কবর দে' বলে স্ট্যাটাসও দেয়। মা ও মেয়ের মামলার আসামি ফয়সাল জানান, নয়ন বেপারীর সাথে তার কী ঝামেলা হয়েছে আমরা জানি না। আমি ওই দিন তাকে শুধু বলেছি, ১৬ বছর বহু জ্বালাইছেন, আর এই সব কইরেন না। পরে শুনি আমি মামলার আসামি। পুলিশ আসলে আমাকে ডাকলে আমি আমাদের বড়ো ভাই শাহাদাত হাওলাদারকে নিয়ে যাই। সেখানে কে বা কারা পেছন থেকে আমাকে আঘাত করে। পরে ছাত্রদের সাথে হট্টগোল হয়।

৮নং ওয়ার্ড বিএনপি'র সভাপতি শাহাদাত হোসেন হাওলাদার বলেন, আমাকে খবর দেওয়াতে ঘটনাস্থলে যাই। ছাত্রদের সাথে আমাদের বিরোধ নেই। তাদের ও জনগণের আন্দোলনের ফলে আজ আমরা স্বৈরাচারমুক্ত। তারা আমার সন্তানের বয়সী। মাছুমা ও তার পরিবার ছাত্রদের ভুল

বুঝিয়ে একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করেছে। তারা আমার বিরুদ্ধে সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। আমার বিশ্বাস তদন্ত করলে আমরা সবাই নির্দোষ প্রমাণিত হবো। তৌহিদ হৃদয় নামে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, চাঁদপুর জেলা (অফিসিয়াল গ্রুপে) এই ঘটনাকে নিয়ে একটি পোস্ট দেন, তা নিচে তুলে ধরা হলো--'গত ৯ সেপ্টেম্বর চাঁদপুর শহরের কোড়ালিয়া এলাকায় যে মহিলাকে কেন্দ্র করে তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে, ওই মহিলা (মাসুমা বেগম) আওয়ামী যুব মহিলা লীগের একজন পদধারী সদস্য। সাবেক ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র ফরিদা ইলিয়াসের সহযোগী। জানতে পেরিছি যে, এই মহিলা ক্ষমতা ও প্রশাসনকে ব্যবহার করে বহু মানুষের সাথে অন্যায় ও জুলুম করেছে। অনেকের কাছ থেকে মিথ্যা অভিযোগে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ওই এলাকায় উনাদের অন্যায়, অত্যাচার, অবিচার, চাঁদাবাজির মতো জঘন্য কর্মকাণ্ডের প্রমাণ পওয়া গেছে। উনার ক্ষমতা ও প্রশাসনের প্রভাব দ্বারা এলাকার বহু মানুষ অত্যাচারিত ও নিপীড়িত। অনেকেই ওই সময় উনার বিরুদ্ধে কথা বলতে পারেনি উনার ক্ষমতার বলে। সাধারণ মানুষের সাথেও উনার আচার ব্যবহার, কথাবার্তা যথেষ্ট খারাপ। আন্দোলনের সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের এলাকা থেকে ধরিয়ে দেওয়া এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় এই মহিলা জড়িত বলে দাবি করেন শাহাদাত হাওলাদার।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়