মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ০৭ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

ঊনিশ বছর ধরেই চলছে চাঁদপুর সেতুর টোল আদায়

টোল বন্ধ না হওয়ায় বাড়ছে জনসাধারণের ক্ষোভ

প্রবীর চক্রবর্তী ॥
ঊনিশ বছর ধরেই চলছে চাঁদপুর সেতুর টোল আদায়

২০০৫ সাল থেকে শুরু হওয়া চাঁদপুর সেতুর টোল আদায় এখনো বন্ধ হয়নি। বরং গত ২ জুলাই থেকে নতুন করে আরো ৩ বছরের জন্যে টোল আদায়ে ইজারা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এতোদিন মোটরসাইকেল থেকে টোল আদায় না হলেও গত ২ জুলাই থেকে নতুন করে এই টোল আদায় শুরু হলে হঠাৎ করেই ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে মানুষ। মোটরসাইকেলের ৫ টাকা টোল আদায়ের রসিদ অনেকেই ফেসবুকে শেয়ার করেন। বিক্ষুব্ধ জনতা একত্রিত হওয়ার এক পর্যায়ে চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবিরের মৌখিক নির্দেশে মোটরসাইকেল থেকে টোল আদায় বন্ধ হয়। সর্বশেষ ৬ জুলাই শনিবার সকালে টোল আদায় বন্ধের দাবিতে চাঁদপুর-লক্ষ¥ীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে চাঁদপুর সেতুর অদূরে টোলঘরের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনে অংশ নেয় সহস্রাধিক মানুষ।

জানা গেছে, ডাকাতিয়া নদীর ওপর গাছতলা নামক এলাকায় ২৪৮ মিটার দৈর্ঘ্যরে চাঁদপুর সেতুটি ১৮ কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ শেষে ২০০৫ সালে যান চলাচল শুরু হয়। তখন থেকেই নিয়মিত টোল আদায় চলছে। গত ১৮ বছর সেতুটির উত্তরাংশে টোলঘর থাকলেও বর্তমানে তা দক্ষিণাংশে নিয়ে আসা হয়েছে।

চাঁদপুরের মানুষ এ সেতুর টোল বন্ধে নানাভাবে চেষ্টা করেছে। চাঁদপুর সদরের এমপি ডাঃ দীপু মনি, ফরিদগঞ্জের বর্তমান সংসদ সদস্য মুহম্মদ শফিকুর রহমান এবং সাবেক সংসদ সদস্য ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়ার মাধ্যমেও বারংবার আবেদন, স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। তেমনি ঢাকাস্থ চাঁদপুর জেলা সাংবাদিক ফোরামও প্রশাসনিকভাবে টোল বন্ধে চেষ্টা করেছে। এমনকি ২০২১ সালের গণদাবির প্রেক্ষিতে চাঁদপুরের তৎকালীন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ এটি বন্ধের পক্ষে কাজ করেছিলেন। টোল বন্ধের দাবিতে গণস্বাক্ষর ও মানববন্ধন ছিল ধারাবাহিক কর্মসূচি। কিন্তু এভাবে টোল আদায় বন্ধ হয়নি। অথচ একই সময় নির্মিত চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজার-নতুনবাজার সেতু ও হাজীগঞ্জ পৌর এলাকায় হাজীগঞ্জ সেতুর টোল বেশ কয়েক বছর আগেই বন্ধ হয়েছে।

চাঁদপুর সদর উপজেলার একাংশ, ফরিদগঞ্জ উপজেলা এবং পার্শ^বর্তী লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর, রামগঞ্জের বিপুল সংখ্যক লোকজন সেতুটি দিয়ে যাতায়াত করে। সেতু ব্যবহার করা লোকজন জানান, বাড়িতে আসা-যাওয়ার এই পথে আমাদের চাঁদপুর সেতু ব্যবহারের বিকল্প নেই। চাঁদপুর ঘাটে লঞ্চ থেকে নেমে সিএনজি অটোরিকশা যোগে শহর পেরিয়ে সেতুটি দিয়েই আমাদের যেতে হয়। কিন্ত প্রায় দুই দশক পার হলেও টোল আদায় বন্ধ হচ্ছে না। ইতোমধ্যেই সেতুটি নির্মাণের দ্বিগুণের বেশি অর্থ উঠে গেছে।

মোটরসাইকেল চালক রবিউল, স্বপন জানান, এই সেতুর টোল আদায় বন্ধে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চলছে। এ নিয়ে জাতীয় সংসদেও একাধিকবার টোল বন্ধের দাবি তুলে প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু কেন বন্ধ হচ্ছে না তা বুঝতে পারছি না।

চাঁদপুর সিএনজি অটোরিকশা সমিতির সভাপতি আবুল বাশার বলেন, আমরা এই সেতুতে প্রায় ১৯ বছর ধরে টোল দিয়ে আসছি। এতে অনেকে এই সেতু দিয়ে একাধিকবার যাতায়াত করায় গড়ে প্রতিদিন দেড়শ’ থেকে ২০০ টাকা টোল দিয়ে আসছে। আমরা বার বার এই টোল বন্ধের দাবি করলেও তা বন্ধ হচ্ছে না।

ফরিদগঞ্জের মাকসুদুল বাশার বাঁধন পাটওয়ারী, চাঁদপুর বাগাদী এলাকার জাকির হোসেন হিরু বলেন, আমরা এই সেতুতে আর কোনো ধরনের টোল আদায় হোক চাই না। এ টোল বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।

এ ব্যাপারে চাঁদপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মারুফ হোসেন জানান, ২০০ মিটারের উপর সেতু থেকে টোল আদায় করার নিয়ম রয়েছে। চাঁদপুর সেতুর ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। এই সেতুতে টোল আদায়ে সব সময়ের মতো এবারও তিন বছরের ইজারা দেওয়া হয়।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়