প্রকাশ : ০৬ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
ফরিদগঞ্জে সেচের পানির অভাব ॥ হুমকির মুখে বোরো আবাদ
কৃষকদের হাহাকার কে শুনবে?
ডাকাতিয়া নদীতে পানি স্বল্পতার কারণে সেচ প্রকল্পের পাম্প হাউজ পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করতে না পারার খেসারত দিচ্ছে চাঁদপুর সেচ প্রকল্পভুক্ত ফরিদগঞ্জ উপজেলার বোরো আবাদকারী কৃষকরা। মাঘের শুরুতে পানি পেয়ে কিছু কৃষক ধানের চারা রোপণ করলেও এরপর থেকে পানির জন্য হাহাকার পড়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড, সেচ প্রকল্প কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের কাছে ঘুরলেও কোনো সুরাহা না হয়নি। ফলে সেচ খালে পানি প্রবাহ কম থাকায় পানির জন্য কৃষকদের হাহাকার পড়ে গেছে। পানির জন্য সামনের অমাবস্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে জানিয়েছে পাম্প হাউজের প্রকৌশলী।
জানা গেছে, চাঁদপুর সেচ প্রকল্প আওতাভুক্ত ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসা উত্তর ইউনিয়নের বারপাইকা, বদরপুর, গাব্দেরগাঁওসহ আশপাশের বেশ ক’টি ইউনিয়নের সেচ খালে পানি স্বল্পতার কারণে সেচ কাজে চরম সঙ্কট দেখা দিয়েছে। কৃষকরা বোরো আবাদের জন্য চারা রোপণ করলেও তাতে পানি দিতে পারছেন না। পানির জন্য নিকটবর্তী পুকুর ডোবা থেকে সেচ করে পানি নিয়ে আসছেন। কিন্তু তাতেও পর্যাপ্ত পানি মিলছে না।
পানির জন্য অপেক্ষার পর কৃষকদের পক্ষে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বারপাইকা ২ কিউসেক এলপিসি স্কীম খালে পানি সরবরাহের জন্য বারপাইকা ২ কিউসেক এলপিসি স্কীম ম্যানজার প্রফেসর ডাঃ মোঃ তসলিম উদ্দিন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী বরাবর লিখিত আবেদন করেন।
সরেজমিন ৫ মার্চ মঙ্গলবার রূপসা উত্তর ইউনিয়নের বারপাইকা, বদরপুর ও গাব্দেরগাও গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকরা চলতি বোরো মৌসুমে মাঠে কিছু অংশে চারা রোপণ করেছেন। চারা রোপণ করলেও পানির অভাবে মাঠ ফেটে যাচ্ছে। অন্যদিকে পানির অভাবে কিছু কিছু মাঠে চারা রোপণই করতে পারেননি কৃষকরা। অন্যদিকে বিপি-১১ খালে পানি আছে নামেমাত্র। এই পানি বিএডিসির সেচপাম্প দিয়ে উঠবে না। দ্রুত সেচখালে পানি সরবরাহ না বাড়লে বোরো আবাদে বড় ধরনের ক্ষতি হবে।
কৃষক রফিক, খলিল, আবুল হাশেম, ইউছুফ, সিরাজ, নুরুল আমিন, রুহল আমিন জানান, খালে পানি নামমাত্র পানি আছে। ফলে সেচ পাম্প দিয়ে গত প্রায় এক মাস ধরে ঠিকমত পানি আসছে না। এতে আমরা বিপদে পড়েছি। বিগত বছরে ধানের আবাদ করে লোকসান দিলেও আবারো ঝুঁকি নিয়ে চারা রোপণ করেছি। কিন্তু সেচ পানি না পেলে আমাদের মাথায় বাজ পড়বে। আমাদের হাহাকার শুনবে কে? আমরা পাশর্^বর্তী পুকুর ও ডোবা থেকে পানি এনে চেষ্টা করছি। কিন্তু তাতে কাজ হচ্ছে না। প্রশাসন আশ্বাস দিয়ে গেলেও কোনো কাজ হয়নি।
এ ব্যাপারে বদরপুর ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবুল খায়ের জানান, তিনি এ পর্যন্ত ১৫ বার বই এলাকায় গিয়েছেন। পানির জন্য আবাদ ব্যাহত হচ্ছে। আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের চরবাগাদি পাম্প হাউজের উপ-সহকারী প্রকৌশলী শরীফ মাহমুদ মুঠোফোনে জানান, ডাকাতিয়া নদীতে পানিস্বল্পতা রয়েছে। পাম্প দিয়ে বেশিক্ষণ পানি উঠছে না, তাই সেচ প্রকল্পের অভ্যন্তরে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ সম্ভব হচ্ছে না। অমবস্যায় নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলে আমরা পাম্প দিয়ে পানি দিতে সক্ষম হলে সেচ পানি সঙ্কট সমাধান হবে।