প্রকাশ : ২৮ আগস্ট ২০২১, ০০:০০
প্যারা সন্দেশের নাম শুনলে অনেকেরই জিভে পানি চলে আসে। প্যারা সন্দেশ মানেই চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার সাচারের প্যারা সন্দেশ। আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে যেতে মিষ্টিদ্রব্য নিয়ে যাওয়া বাঙালি জাতির কৃষ্টি-সংস্কৃতির এক অপরিহার্য অংশ হিসেবে স্বীকৃত। এ মিষ্টি জাতীয় দ্রব্যাদির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সাচারের প্যারা সন্দেশও। যা স্বাদে ও গুণে অতুলনীয়। দেশের অন্যতম প্রাচীন জনপদে গড়ে উঠেছে প্রসিদ্ধ সাচার বাজার। এ বাজারের মিষ্টি দোকানসমূহে প্যারা সন্দেশ বিক্রি এখন মহোৎসবে পরিণত হয়েছে। খাঁটি দুধের সুস্বাদু এ মিষ্টান্নের খ্যাতি দেশের গ-ি পেরিয়ে এখন বহির্বিশ্বে। ইতিমধ্যে এ সন্দেশ চাঁদপুর জেলার ব্র্যান্ডিং পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
সরেজমিনে গেলে সাচার বাজারে সন্দেশের জন্য বিখ্যাত রাজ লক্ষ্মী সুইটসের মালিক সঞ্জয় কুমার দে জানান, সাচারের এ প্যারা সন্দেশ ‘ক্ষীর সন্দেশ’ নামেও পরিচিত। কেননা দুধ জ্বাল দিয়ে ক্ষীরে পরিণত করার পর প্যারা সন্দেশ তৈরি হয়। এক কেজি প্যারা সন্দেশ তৈরিতে ৭ কেজি দুধ ও একশ গ্রাম চিনির প্রয়োজন হয়। গত ২০-২৫ বছর ধরে সাচারের খাঁটি দুধের প্যারার ব্যাপক চাহিদা থাকায় দেশ ছাড়িয়ে এখন জাপান, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, আমেরিকা ও সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে।
তিনি আরো জানান, প্যারা সন্দেশের জন্য কেবল কচুয়ার লোকজনই নয়, দূর-দূরান্ত থেকেও অনেক লোকজন সাচার বাজারে ছুটে আসেন। অনেক সময়ই ক্রেতাদের কাছ থেকে অগ্রিম অর্ডার নিয়ে সন্দেশ তৈরি করে দেয়া হয়। ব্যাপকভাবে বাজারজাত করার লক্ষ্যে ৫শ’ টাকা কেজি দরে ওই প্যারা সন্দেশ বিক্রি হয়। করোনাকালে পূর্বের ন্যায় দুধ না পাওয়ায় সন্দেশ তৈরির ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় এখন তেমন একটা লাভের মুখ দেখছি না। তারপরও আদি পুরুষদের এ সন্দেশ ব্যবসা যাতে বিলুপ্ত হয়ে না যায় সেজন্যে কষ্ট করে ধরে রেখেছি।
সন্দেশ ক্রেতা শাহপরান জানান, প্যারার নাম বলতেই সবার আগে চলে আসে কচুয়ার সাচারের প্যারা সন্দেশের নাম। কারণ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্যারা তৈরি হলেও কচুয়ার সাচারের প্যারার তুলনা নেই। এর স্বাদ আলাদা।
সাচার বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারের আনাচে কানাচে মিষ্টির অধিকাংশ দোকানগুলোতে নেই কোনো চাকচিক্য। বেশিরভাগ দোকানে বসার ভাল ব্যবস্থাও নেই। তবে ২-১ টি দোকানে বসে খাওয়ার জন্য আছে ৮-১০টি আসন। বাইরের চাকচিক্যের চেয়ে স্বাদ ও মান দোকানিদের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।