প্রকাশ : ১৪ জুলাই ২০২৩, ০০:০০
চাঁদপুর পৌরসভার ১৫নং ওয়ার্ডের চেয়ারম্যানঘাটা উত্তর বিষ্ণুদী জিটি রোডের বেহাল দশার চিত্র নিয়ে চাঁদপুর কণ্ঠে সংবাদ প্রকাশ এবং ফেসবুকে পোস্ট করেছেন স্থানীয় যুবকরা। এই সংবাদ ও পোস্টটি দৃষ্টিগোচর হয় চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েলের। তিনি তাৎক্ষণিক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে সে এলাকায় যান এবং রাস্তার বেহাল দশার চিত্র দেখেন। সাথে সাথেই তিনি পৌরসভার প্রকৌশল বিভাগকে রাস্তার সংস্কার কাজ শুরু করার নির্দেশ দেন। এমনটাই জানিয়েছেন ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর।
ঈদুল আজহার পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির পানি জমে গিয়ে জিটি রোড ক্ষত-বিক্ষত হয়ে ভয়ানক রূপ নিয়েছে। প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। বিশেষ করে অটোবাইক যাত্রীরা বিপাকে পড়েন বেশি। গাড়ির ঝাঁকুনিতে মানুষের কোমর, হাঁটু ও মাথায় আঘাত পেয়ে আহত হন অনেকেই। এই এলাকার মানুষ এমন দুর্ভোগে বিরক্ত। তারা চান রাস্তার দ্রুত সংস্কার কাজ। সাংবাদিকদের এভাবেই কথাগুলো বললেন কমিউনিটি পুলিশিং চাঁদপুর অঞ্চল-৬-এর জিটি রোড মহল্লার সহ-সভাপতি মোঃ মিজানুর রহমান শাহিন ডাক্তার।
জিটি রোডের ভুক্তভোগীদের মধ্যে সামাজিক সংগঠন অ্যাডভেঞ্চার বয়েজের সভাপতি জিএম জাহিদ হাসান তার পোস্টে চাঁদপুর পৌরসভার মেয়রকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে লিখেছেন, ‘পৌর ১৫নং ওয়ার্ডের জিটি রোডটি দ্রুত সংস্কার, শামু গাজী বাড়ি সংলগ্ন ব্রিজ হতে উত্তরে ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটি সংস্কার প্রয়োজন’। ওই ওয়ার্ডের স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জিএম আরিফ হোসাইন লিখেছেন, ‘চাঁদপুর পৌরসভার মাননীয় মেয়র মহোদয় ১৫নং ওয়ার্ডকে আপনার পৌরসভা থেকে কর্তন দিয়ে ইউনিয়নের সাথে অর্ন্তভুক্ত করে দিন। কারণ পৌরসভার টেক্স দিয়ে আমরা এতো দুর্ভোগ পোহাতে পারবো না। জিটি রোডের মানুষ যেনো এখন মৃত্যু ফাঁদে বসবাস করছে। কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি’।
পৌর ১৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ কবির হোসেন চৌধুরী জানান, গেলো ক’দিন হলো বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে খুব মাতামাতি চলছিলো। আমি বিষয়টি মেয়র মহোদয়ের দৃষ্টিগোচরে আনি। তিনি তাৎক্ষণিক জিটি রোডে আসেন এবং রাস্তার বেহাল দশা দেখে আজকে (গতকাল) থেকেই কাজ শুরু করার নির্দেশনা দেন। মেয়ল মহোদয় জানিয়েছেন, রাস্তাটি সংস্কার করা হবে এবং দুই পাশে ফুটওয়াক থাকবে। যাতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে ফুটপাত দিয়ে হাঁটাচলা করতে পারে। আর এ রোডে যে সকল জায়গায় বাজার আছে সেখানে সিসি ঢালাই হবে। রোডের প্রস্থ হবে ২০ ফুট। রোডটি বর্তমানে চেয়ারম্যানঘাটা থেকে (১ কিলোমিটার) ব্রিজ পর্যন্ত হবে। ব্রিজ নতুন করে হবে এবং ব্রিজ থেকে মোকসেদ গাজী বাড়ি ও ছৈয়াল বাড়ি পর্যন্ত ড্রেনেজ কাজ হয়ে তারপরে রাস্তা সংস্কার করা হবে।
মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল জিটি রোডে আসলে স্থানীয় এলাকাবাসী তাঁকে অভিনন্দন জানান। তিনি এলাকার মানুষের সাথে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কথা বলেন এবং খুব দ্রুতই জিটি রোডের সংস্কার কাজ সম্পন্ন হবে বলে সকলকে আশ্বস্ত করেন। মানুষের দুর্ভোগের কারণে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, চাঁদপুরের সকল পাড়া-মহল্লা-অলিগলির সড়কের সংস্কার কাজ হবে। রাস্তা প্রশস্ত করতে তিনি সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন। তিনি বলেন, নাগরিকদের সহযোগিতা পেলে আমারও সেবার মান বেড়ে যাবে। তবে খুব দ্রুতই রাস্তার সংস্কার কাজ করা হবে বলে তিনি সকলকে আশ্বস্ত করেন।
এদিকে জিটি রোড দিয়ে চলাচল করেন তরপুরচণ্ডী, দাসাদী ও উত্তর বিষ্ণুদী গ্রামের হাজারো মানুষ। মানুষের নিত্যপ্রয়োজনে শহরমুখী হতে এ সড়কে চলাচল করতে হয়। কিন্তু রাস্তাটি ক্ষত-বিক্ষত হওয়ায় জনমানুষের দুর্ভোগ ছিলো চরমে। এ নিয়ে দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠে ‘জিটি রোডের ক্ষত-বিক্ষত রাস্তা ॥ ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ’ নামে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিলো। অবশেষে মেয়র জিটি রোডের সংস্কার কাজ শুরু করায় তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন কমিউনিটি পুলিশিং চাঁদপুর অঞ্চল-৬-এর সাধারণ সম্পাদক মাওঃ মোঃ আবদুর রহমান গাজী।