প্রকাশ : ১০ জুলাই ২০২৩, ০০:০০
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চাঁদপুর জেলা ইউনিট কমান্ডের আয়োজনে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান চাঁদপুরে বিদায়ী পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বিপিএম (বার)কে বিদায় সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। গতকাল রোববার বিকেল শহরের নিশি বিল্ডিং এলাকাস্থ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্সের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এ বিদায় সংবর্ধনায় সভাপতিত্ব করেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা লেঃ এমএ ওয়াদুদ (অবঃ)।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, আজকে একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের বিদায় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ ভবনের কার্যক্রম চালু হলো। আমরা যারা সরকারি চাকুরি করি তারা এক কর্মস্থলে দীর্ঘস্থায়ী নই। সর্বোচ্চ চার বছর থাকতে পারি। আমার চাঁদপুরে এক বছরের কিছু বেশি সময় হয়েছে। কখনো আমাদের মাঝে যোগাযোগ বন্ধ হয়নি। আজকে যেভাবে পুলিশ সুপারের বিদায় অনুষ্ঠান হচ্ছে, তেমনি আমিও একদিন চলে যাবো। এ ভবন থেকে আমিও একটা ভালো বিদায় সংবর্ধনা পেতে পারি এমনটাই প্রত্যাশা করি। পুনাক চাঁদপুরের সভানেত্রী সত্যি একজন দক্ষ সংগঠক। তিনি ঢাকায় চাকুরি করেন, তারপরও চাঁদপুরে ছুটে এসে তার স্বামী পুলিশ সুপারকে যেভাবে সহযোগিতা করেছেন তা প্রসংশনীয়। আমরা চাইবো বাকী দিনগুলো যেন তিনি এমনিভাবে কাটাতে পারেন। তিনি একদিন ইন্সপেক্টর জেনারেল হয়ে দায়িত্ব পালন করবেন এ আশা করছি।
সংবর্ধিত অতিথি পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বলেন, আমি চাঁদপুরে এসে আমার কর্মস্থলে ভালো অফিসারদের পেয়েছি। চাঁদপুর আইন-শৃঙ্খলার দিক দিয়ে অনেক জেলা থেকে ভালো অবস্থানে রয়েছে। আজকে আমার পরম পাওয়া দেশের বীর সন্তানদের কাছ থেকে আমি বিদায় সংবর্ধনা পেয়েছি। বিশেষ করে আমি কৃতজ্ঞ জেলা কমান্ডার এমএ ওয়াদুদ সাহেবের প্রতি। তিনি আমার স্ত্রীকে বৌ-মা বলে ডাকেন, উনি তাকে মেয়ের মতো দেখেছেন। আমি যোগদানের পরে বর্তমান জেলা প্রশাসক এসেছেন, তিনি আমার ব্যাচমেট, তাই আমাদের কাজ করতে সুবিধা হয়েছে। আমার জন্য, আমার পরিবারের জন্যে দোয়া করবেন আমি যেন আপনাদের দোয়া ভালোবাসা নিয়ে সুনামের সাথে চাকুরি জীবন শেষ করতে পারি।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা লেঃ এমএ ওয়াদুদ (অবঃ) বলেন, আজ আমরা এমন একজন ব্যক্তিকে বিদায় দিচ্ছি যিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। ওনার বাবা মুক্তিযুদ্ধের উপর অনেকগুলো বই লিখেছেন। এ বছর তিনি বিজয় মেলায় এসে বক্তব্য রেখেছেন। আজ আমি নিজেও আবেগাপ্লুত। বিশেষ করে এসপি মহোদয়ের স্ত্রী ডাঃ আফসানা শর্মি তিনি আমাকে বাবার মতো শ্রদ্ধা করতেন। আমি অসুস্থ থাকার সময় খুব খোঁজ-খবর নিতেন আমার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে। তিনি সামজিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে চাঁদপুরের মানুষের মাঝে একজন মানবিক মানুষ হিসেবে সুপরিচিতি লাভ করেছেন।
বক্তারা বলেন, আমাদের সকল কর্মকাণ্ডে ও কাজের নেপথ্যে ছিলেন আজকের বিদায়ী অতিথি। আর সেই কাজের সহায়ক ভূমিকা রাখেন ভাবি। তেমনি আজকের বিদায়ী অতিথির সকল কর্মা-ের ভাবী সর্বাত্মকভাবে সহায়তা করেছেন।
আরও বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বশির আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়, পুনাক সভানেত্রী ডাঃ আফসানা শর্মী, জেলা মুক্তিযুদ্ধা সংসদের সাবেক আহ্বায়ক সাহাদাত হোসেন সাবু পাটোয়ারী, সহ-কমান্ডার ইয়াকুব আলী মাস্টার।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাংবাদিক এমআর ইসলাম বাবু। কোরআন থেকে তেলোয়াত ও মোনাজাত পরিচালনা করেন হাওলাদার জামে সমজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওঃ মুফতি আশেক এলাহী।