মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর, ২০২৪  |   ৩১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কচুয়ায় বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ
  •   নির্মাণের এক বছর না যেতেই ফরিদগঞ্জ কেন্দ্রীয় মডেল মসজিদের বেহাল দশা
  •   শেষ হলো পদ্মা-মেঘনায় জাল ফেলার নিষেধাজ্ঞা
  •   ফরিদগঞ্জে প্রবাসীর স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার
  •   মোবাইল ব্যবহারে নিষেধ করায় শিশু শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

প্রকাশ : ৩০ মে ২০২৩, ০০:০০

সড়কের কাঁধে গাছের গুঁড়ির ব্যবসা ॥ যানসহ জনচলাচলে প্রতিবন্ধকতা
কামরুজ্জামান টুটুল ॥

চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কসহ পার্শ্বসড়কগুলোর বিভিন্ন স্থানে সড়কের কাঁধে (শোল্ডারে) গাছের গুঁড়ি জমিয়ে রেখে ব্যবসা করছে এক শ্রেণির গাছ ব্যবসায়ীসহ স’মিল ব্যবসায়ী। সড়কের একেবারে কোলজুড়ে বছরের পর বছর বিনা ভাড়ায় ব্যবসা করে আসছে এই সকল গাছ ব্যবসায়ী। সড়কের অনেক স্থানে ইট-বালির ব্যবসা করতে দেখা যায় অনেককে। সড়কের পাশে এভাবে গাছের গুঁড়ি জমিয়ে রাখার কারণে অনেক সময় দুর্ঘটনার শিকার হয় শিক্ষার্থীসহ পথচারীরা। বিগত দিনে বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনে সড়কের পাশের এই সকল গাছের গুঁড়ি সড়কের ওপর তুলে দিয়ে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে আন্দোলনকে উসকে দিতে সহায়তা করেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। সড়কের পাশে ৩০ মিটারের মধ্যে স্থায়ী-অস্থায়ী কোনো স্থাপনা কিংবা কোনো কিছুই রাখা যায় না বলে চাঁদপুর কণ্ঠকে জানিয়েছে চাঁদপুর সড়ক বিভাগ।

চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়ক একটি পরিপূর্ণ ব্যস্ত সড়ক। দিনে-রাতে সমান তালে যাত্রীবাহী পরিবহনসহ ভারী ও হালকা যান চলাচল করে আসছে। এই সড়ককে কেন্দ্র করে বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন নামে গড়ে উঠেছে বহু হাটবাজার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি-আধা সরকারি বিভিন্ন স্থাপনা। স্বাভাবিকভাবে এসব কারণে সড়কের দু পাশ ধরে স্কুল-কলেজের হাজার হাজার শিক্ষার্থীসহ পথচারীদেরকে চলাচল করতে হয়। সড়কের যে কাঁধ ধরে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ পথচারী চলাচল করতো, সেখানেই বছরের পর বছর ধরে গাড়ের গুঁড়ি স্তূপাকৃতিভাবে জমিয়ে ব্যবসা করছে গাছ ব্যবসায়ীরা।

সরেজমিনে সড়কের কিছু এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বহু বছর ধরে সড়কের পাশে গাছের ব্যবসা করছে মহামায়া জমজমিয়া ব্রিজের পূর্ব পাশ হতে দেবপুর, বাকিলা পশ্চিম বাজার থেকে পূর্ব বাজার, কৈয়ারপুল এলাকা, বলাখাল পূর্ব বাজারে ইট-বালি, এনায়েতপুর, উয়ারুক পশ্চিম বাজারসহ বিভিন্ন স্থান। এছাড়া লক্ষ্মীপুর, রামগঞ্জ, হাজীগঞ্জ, কচুয়া, গৌরীপুর এলাকার বহু স্থান। সম্প্রতি এক শ্রেণির বালুর ব্যবসায়ী সড়কের পাশে পাইপ বসিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বালু পরিবহন করতে দেখা যাচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সড়কের পাশে এভাবে গাছের গুঁড়ি জমিয়ে রাখার কারণে প্রায় সময় ঘটছে দুর্ঘটনা। যাতে অনেকের জীবনহানি ঘটে। অপরদিকে যারা সড়কের জায়গা ব্যবহার করে ব্যবসা করছে তাদেরকে কোনো ভাড়া দিতে হয় না। মূলত এজন্যে অনেক গাছ ব্যবসায়ী অনেক সময় বেপরোয়া আচরণ করতে দেখা যায়।

চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কে চলাচলকারী সিএনজি অটোরিকশা চালক হাজীগঞ্জের আবু তাহের, রফিক, সেলিম একবাক্যে জানান, সড়কের যে যে অংশে গাছ বা ইটের স্তূপ রয়েছে সেই সব এলাকায় বড় গাড়ি আমাদেরকে সাইড দিতে পারে না, ফলে আমাদের অনেক সমস্যা হয়।

বোগদাদ পরিবহনের একটি বাসের চালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বছরের পর বছর সড়কের পাশেই এভাবে গাছের টুকরা জমিয়ে রাখা হচ্ছে। এতে করে অনেক সময় আমাদেরকে সাইড বা ওভারটেক করতে গেলে নিজেকে গুটিয়ে নিতে হয়। আমরা ঠিক জানি না এসব দেখার দায়িত্বটা কার। যাদের এসব দেখার দায়িত্ব তাদের দায়িত্বটাইবা পালন করে কি?

হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ জোবাইর সৈয়দ জানান, এসব গাছের গুঁড়ি অপসারণ করতে সংশ্লিষ্টজনেরা আমাদের সহযোগিতা চাইলে আমরা অবশ্যই সহযোগিতা করবো। অপর এক প্রশ্নে এই কর্মকর্তা বলেন, আমরা এ বিষয়টি আমলে নিয়ে দেখছি, প্রয়োজনে আমরা সড়ক থেকে গাছের গুঁড়ি সরিয়ে দিতে কাজ করবো।

চাঁদপুর বন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম জানান, আমরা সাধারণত করাতকল তথা স’মিলের লাইসেন্স দেখাশোনা করি। এসব গাছের গুঁড়ির বিষয়ে আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, সাধারণত যারা স’মিলের ব্যবসা করেন তারা গাছের ব্যবসা করেন না কিংবা সড়কের পাশে গাছের গুঁড়ি জমিয়ে ব্যবসা করেন না। স’মিলকেন্দ্রিক গাছের ব্যবসা করছে ভিন্ন ব্যবসায়ীরা।

চাঁদপুর সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সামছুজ্জোহা জানান, সড়কের পাশে ৩০ মিটারের মধ্যে স্থায়ী-অস্থায়ী কোনো স্থাপনা কিংবা কোনো কিছুই রাখা যায় না। অচিরেই সড়কের পাশের গাছের গুঁড়ি জব্দ কিংবা সড়কের পাশ থেকে গুঁড়ি ঠেলে সরিয়ে দেয়া হবে বলে চাঁদপুর কণ্ঠকে জানিয়েছেন তিনি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়