প্রকাশ : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২২:২৩
বাংলাদেশ-ভারত কূটনৈতিক উত্তেজনা
কূটনৈতিক সংঘাতের আশঙ্কা
ভারতে আশ্রিত শেখ হাসিনার উস্কানিমূলক বক্তব্য কেন্দ্র করে সম্পর্কের টানাপোড়েন
![কূটনৈতিক সংঘাতের আশঙ্কা](/assets/news_photos/2025/02/07/image-58735-1738945602bdjournal.jpg)
বক্তব্যের প্রেক্ষাপট ও প্রতিক্রিয়া
|আরো খবর
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ব্যাপক আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেন। সম্প্রতি ফেসবুক লাইভে তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে তার সমর্থকদের সরকারবিরোধী অবস্থান নিতে আহ্বান জানান। এরপর ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতের কাছে পাঠানো প্রতিবাদ নোটে শেখ হাসিনার এই ধরনের বক্তব্যকে ঢাকা-দিল্লির মধ্যে সুস্থ সম্পর্ক গড়ার পথে বাধা হিসেবে উল্লেখ করেছে এবং তাকে মিথ্যা ও উস্কানিমূলক বিবৃতি দেওয়া থেকে বিরত রাখতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
ভারতের প্রতিক্রিয়া
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে হামলাকে "দুঃখজনক" এবং "বিবেকহীন" বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, "বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস যারা মূল্যায়ন করেন, তারা এই বাড়ির গুরুত্ব সম্পর্কে অবগত।"
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অবস্থান
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস অফিস থেকে জানানো হয়েছে, শেখ হাসিনার "সহিংস আচরণের" প্রতিক্রিয়ায় এই হামলা হয়েছে। সরকার আশা করে, ভারত তার ভূখণ্ডকে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার কাজে ব্যবহার করতে দেবে না এবং শেখ হাসিনাকে এ ধরনের বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত রাখবে।
সম্প্রতি সীমান্ত উত্তেজনা
এর আগে, সীমান্তে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর অবৈধভাবে বেড়া নির্মাণের প্রতিবাদে দুই দেশের সীমান্তের বেশ কিছু পয়েন্টে বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ নিয়ে ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে পাল্টাপাল্টি তলবের ঘটনা ঘটে, যা দুই দেশের সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন এবং শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ককে জটিল করে তুলেছে। ভারতের দীর্ঘদিনের মিত্র শেখ হাসিনার অপসারণ এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের চীনের প্রতি সম্ভাব্য ঝোঁক ভারতের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া, সীমান্তে উত্তেজনা ও অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের অভিযোগ সম্পর্কের অবনতিতে ভূমিকা রাখছে।
শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক বক্তব্য এবং তার পরবর্তী প্রতিক্রিয়া বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের টানাপোড়েনকে আরও গভীর করেছে। দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও সম্মান বজায় রেখে কূটনৈতিক সমাধানের মাধ্যমে এই উত্তেজনা নিরসন করা প্রয়োজন।
ডিসিকে/এমজেডএইচ