প্রকাশ : ২৮ মে ২০২৩, ০০:০০
কেন্দ্র ঘোষিত চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে সামনে রেখে সম্মেলন নিয়ে ভাবনা বিষয়ে নেতৃবৃন্দের সাক্ষাৎকারধর্মী ধারাবাহিক প্রতিবেদন চাঁদপুর কণ্ঠ প্রকাশ করছে। প্রশ্নোত্তর আকারে আজকে চাঁদপুর কণ্ঠের মুখোমুখি হয়েছেন চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটওয়ারী।
দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ : চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ১৭ জুন ২০২৩। যা কেন্দ্র থেকে নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। আপনি কি এ সম্মেলন চান, কেনো চান?
এসডু পাটোয়ারী : সম্মেলন হচ্ছে একটি রাজনৈতিক দলের ধারাবাহিকতা। একটি রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন কমিটি নির্দিষ্ট একটি সময় পর্যন্ত নেতৃত্ব দেয়ার যে বিধান রয়েছে, সেটি সম্মেলনের মাধ্যমে হয়ে থাকে। স্ব স্ব ইউনিটের নেতা-কর্মীদের চাহিদা মোতাবেক নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টির একটি প্রক্রিয়া হলো সম্মেলন। তাই আমি মনে করি, সম্মেলনের মাধ্যমে দলের নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি হয়। নেতা-কর্মীরা এতে উজ্জীবিত হয় এবং সাংগঠনিক অবস্থা সুদৃঢ় হয়।
অন্যদিকে চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন এর আগেও হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু নানা প্রতিকূলতার কারণে সম্মেলন হয়নি। তাছাড়া সম্মেলন হওয়া এখন সময়ের দাবি। কারণ সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্বের সৃষ্টি হবে। এই নতুন নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচনে আমাদের বিজয়ের লক্ষ্যে দলকে শক্তিশালী করে আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে। তাই আমি আসন্ন সম্মেলনের সফলতা কামনা করছি।
দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ : এই সম্মেলনে বর্তমান নেতৃত্বের বহাল চান, না কি কোনো পরিবর্তন চান?
এসডু পাটোয়ারী : দেখুন আমি পূর্বেই বলেছি সম্মেলন হলো সংগঠনের নেতা-কর্মীদেরকে উজ্জীবিত করার একটি কৌশল এবং নতুন নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে সব সময় সংগঠনকে শক্তিশালী করার নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। তাই আমি আশা করছি, আসন্ন চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে পুনরায় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন করতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা ও আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ নতুন নেতৃত্বের মাধ্যমে চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগকে একটি শক্তিশালী সংগঠনে পরিণত করবেন।
দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি নিজে কি জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসতে চান? সেটা কোন্ পদে?
এসডু পাটোয়ারী : ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর এ জেলায় আওয়ামী লীগকে টিকিয়ে রাখতে এবং দলকে ধরে রাখতে আমার পরিবার ও গোষ্ঠীর অবদানের কথা সকলের নিশ্চয়ই জানা রয়েছে। তাছাড়া আমি ব্যক্তিগতভাবে ছাত্রজীবন থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে লালন করে ছাত্রলীগের রাজনীতির মধ্য দিয়ে আজো এ দলের রাজনীতি করছি। ছাত্রলীগের নেতৃত্বের পর যুবলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃত্ব শেষে দীর্ঘদিন জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নেতৃত্ব দিয়ে এই জেলার সবচেয়ে শক্তিশালী যুব সংগঠনে পরিণত করেছি। এরপর দুই বার জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। তাই জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হচ্ছে, সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি হবে। এ দলের তৃণমূল থেকে উঠে এসেছি। দলের শীর্ষ পর্যায়ে নেতৃত্ব দেয়ার ইচ্ছে তো রয়েছেই।
তাই আসন্ন জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে আমি দলের সকল স্তরের নেতা-কর্মীদের অনুরোধে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী। আমি আশা করছি, দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ আমার বিগত দিনের সকল কিছু বিবেচনা করে আমাকে উক্ত পদে দায়িত্ব দিবেন।
দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ : উপরোক্ত প্রশ্ন সমূহের বাইরে আপনার কোনো বক্তব্য থাকলে তুলে ধরুন।
এসডু পাটোয়ারী : আমার মূল কথাগুলো আমি আগেই বলেছি। তারপরও বলতে চাই, ২০০৯ সাল থেকে একটানা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গঠিত সরকার দেশ পরিচালনা করছে। টানা ৩ মেয়াদে দেশের এমন কোনো সেক্টর নেই যেখানে দেশের উন্নয়ন হয়নি। দেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়ক থেকে স্মার্ট দেশে পরিণত হচ্ছে। এরপরও স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিসহ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক একটি চক্রটি আজো দেশকে নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র করছে। তাই আমি দলের সকল স্তরের নেতা-কর্মীদের অনুরোধ করবো, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আমাদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করে আমাদেরকে বিজয়ী হতে হবে। তাই আসুন আমরা সকল ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলের জন্য কাজ করি, দলকে এগিয়ে নিয়ে যাই। তাহলেই আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবো।
উল্লেখ্য, আলহাজ্ব মোঃ তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটোয়ারী ছাত্রজীবন থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক পথচলা শুরু করে ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছাত্র রাজনীতি শেষে যুবলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে বিভিন্ন ইউনিটের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন শেষে দীর্ঘদিন জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি পর পর দু’বার জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি একজন সংস্কৃতিমনা ও ক্রীড়া সংগঠক।