প্রকাশ : ২৭ মে ২০২৩, ০০:০০
![সপ্তসুর সংগীত একাডেমীর নজরুল জয়ন্তী উদযাপন](/assets/news_photos/2023/05/27/image-33526.jpg)
চাঁদপুর শহরের প্রসিদ্ধ সাংস্কৃতিক সংগঠন সপ্তসুর সংগীত একাডেমীর উদ্যোগে ২৬ মে শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৪তম জন্মজয়ন্তী উদযাপন করা হয়। এ উপলক্ষে চাঁদপুর শহরের প্রেসক্লাব রোডস্থ একাডেমীর কার্যালয়ে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। একাডেমীর অধ্যক্ষ প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী রূপালী চম্পকের সভাপ্রধানে সংক্ষিপ্ত আলোচনা পর্বে মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন একাডেমীর একমাত্র উপদেষ্টা, দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক কাজী শাহাদাত। মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে কবির অনেক অজানা তথ্য প্রকাশ পায়। তিনি বলেন, সাম্যের কবি নজরুলের প্রতি চাঁদপুরবাসীর অবদানও কম নয়। চাঁদপুরবাসী কবিকে সম্মান জানিয়ে তাঁর নামে রাস্তার নামকরণ করেছে। চাঁদপুর শহরস্থ হাসপাতাল সম্মুখস্থ সড়কটির নামকরণ করা হয়েছে কবি নজরুল সড়ক। তিনি সওগাত পত্রিকায় কাজ করেছেন, যার সম্পাদক নাসিরউদ্দীনের বাড়িও চাঁদপুরে। তিনি বলেন, কবি নজরুল যে কত বড় একজন লেখক ছিলেন তা বলে বোঝানো যাবে না। মাত্র ২/৩ বছরের মাথায় তিনি আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা লাভ করেন। তার প্রমাণ পাওয়া গেছে কবির বাংলাদেশে আগমনকে কেন্দ্র করে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অত্যন্ত কৌশল করে ১৯৭২ সালের ২৪ মে নজরুল ইসলামকে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। যেদিন কবি বাংলাদেশে আগমন করেন সেদিন বিমানবন্দর থেকে শুরু করে রাস্তার দুধার ছিল লোকে লোকারণ্য। শুধু মানুষের একটাই লক্ষ্য ছিলো কবিকে এক নজর দেখা। কবি নজরুল ছিলেন সাহিত্য ভাণ্ডার। তার ভাণ্ডারে রয়েছে প্রায় তিন হাজার সংগীত, শ্যামা সংগীত, গজল, কবিতা, প্রবন্ধ, গল্প, নাটকসহ তিনি কিনা রেখে গেছেন আমাদের মাঝে। কবিকে বাংলাদেশে নিয়ে আসার পর বাংলার মানুষ মৃত্যুর আগপর্যন্ত তাঁকে সম্মান জানিয়েছেন গভীর শ্রদ্ধার সাথে। তাঁর ১২৪তম জন্মজয়ন্তীতে আমরাও তাঁকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। কবি ৭৭ বছর বেঁচে ছিলেন, তাঁর মধ্যে প্রায় ৩৪ বছরই ছিলেন নির্বাক। যদি তিনি নির্বাক না হতেন তাহলে বাংলার সাহিত্য ভাণ্ডার আরো সমৃদ্ধ হতো।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন তরুণ গবেষক ও লেখক মুহাম্মদ ফরিদ হাসান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট কণ্ঠ শিল্পী শরীফ চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর রেলওয়ে কিন্ডারগার্টেনের অধ্যক্ষ মাহমুদা খানম, জেলা কমিউনিটি পুলিশের সাধারণ সম্পাদক সুফি খায়রুল আলম খোকন, সাংবাদিক বিমল চৌধুরী, অতিথি শিল্পী কৃষ্ণা সাহা, কণ্ঠশিল্পী ইতু চক্রবর্তী, তরুণ লেখক অ্যাডঃ শেখ শাদী, বিশিষ্ট সংগঠক বিকাশ মজুমদার টিটু প্রমুখ।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন লিটন মজুমদার, অর্পিতা সিংহ রায়, মেঘলা, অধরা, কথা ও কলি, পৃথিবী, অমি, আঁখি, সেতু, প্রাপ্তি, কৃষ্ণা, সম্পা, রাত্রি প্রমুখ। নৃত্য পরিবেশন করেন সপ্তসুর একাডেমীর টিনা পোদ্দারসহ অন্যরা। অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, অভিভাবক, আমন্ত্রিত অতিথিদের ব্যাপক উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়। পুরো অনুষ্ঠান জুড়েই ছিল উৎসবের আমেজ। শিল্পীদের পরিবেশিত নৃত্য ও সংগীতে বিদ্রোহী কবি নজরুলের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার উন্মোচন ঘটে।