শনিবার, ০১ মার্চ, ২০২৫  |   ২২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

পুরাণবাজারে একুশের চেতনা সমাজের প্রতিটি স্তরে পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছি
স্টাফ রিপোর্টার ॥

ভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মরণ করার লক্ষ্যে চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজার একুশ উদযাপন পরিষদ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। চাঁদপুর সদরের মূল কার্যক্রম সংঘটিত হয় মূলত পুরাণবাজার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে। ৫৪ বছর ধরে একুশে উদযাপনের বিরল ধারাবাহিকতায় যারা আয়োজক হিসেবে ব্যতিক্রম, তাদেরই একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, সংগঠক ও শিক্ষানুরাগী কবি বিএম ওমর ফারুক। ভাষার মাস উপলক্ষে চাঁদপুর কণ্ঠে তাঁর সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো।

দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি পুরাণবাজারে একুশ উদযাপনের সাথে যখন জড়িত হন তখন আপনি কী করতেন? কেনো জড়িত হন?

বিএম ওমর ফারুক : স্কুল-কলেজ জীবন থেকে আমাদের মহল্লা গুয়াখোলা রোডে আমরা নিজেদের উদ্যোগে শহিদ দিবস উদযাপন করতাম। নিজ হাতে বাঁশ-কাঠি-মাটি ও কাগজের ফুল দিয়ে বানানো শহিদ মিনার আজও মনের গভীর রেখাপাত করে। এরপর ১৯৮২ সালে পারিবারিক ব্যবসা সূত্রে (পাক ফার্মেসি) পুরাণবাজারে আগমন। পুরাণবাজার একুশ উদযাপনের নেতৃবৃন্দ ফয়েজ আহমেদ মন্টু, ব্যাংকার মুজিবুর রহমান, ব্যবসায়ী মন্টু গাজী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মনোজ আচার্যী, প্রয়াত চন্দন আচার্যীসহ অনেকের সাথেই আমার ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন পেশার ব্যক্তিবর্গ আমার দোকানে আসেন। ফেব্রুয়ারি আসলেই আমার দোকানের পেছনে একুশ উদযাপনের মিটিং বসতো। অনেকটাই অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে পুরো মাসব্যাপী এখান থেকে কার্যক্রম, চিঠিপত্র, পুরস্কার ইত্যাদি আদান-প্রদান করা হতো। আসলে তখন থেকেই এখানকার একুশ উদযাপনের কমিটিতে আমি সম্পৃক্ত হই। বলতে পারেন প্রাণের টানেই মাতৃভাষার চেতনা থেকে আমার সংশ্লিষ্টতা।

দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ : একই সাংগঠনিক প্রক্রিয়ায় তথা একই ছাতার নিচে ঐক্যবদ্ধ থেকে এতোটা দীর্ঘ সময় একুশ উদযাপনে ব্যাপক কর্মসূচি পালনের পেছনে আপনাদের উদ্দেশ্য কী? সে উদ্দেশ্য কি সাধন হয়েছে?

বিএম ওমর ফারুক : পুরাণবাজারে একুশ উদযাপন উপলক্ষে মাসব্যাপী এক বিশাল কর্মযজ্ঞ হাতে নেয়া হয় এবং সফলতার সাথে শেষ করা হয়। আমাদের উদ্দেশ্য এই কর্মযজ্ঞের মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম যেন মাতৃভাষাকে এবং ভাষার জন্য যারা জীবন দিয়েছে তাদের সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে শেখে। তারা যেন বাংলাভাষাকে আন্তরিকভাবে মর্যাদা দেয়। আর নতুন প্রজন্মকে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে এগিয়ে নিয়ে আসাও আমাদের উদ্দেশ্য। দীর্ঘ ৫৪ বছরের এই সংগঠনটি যাতে ভবিষ্যতে ঐক্যবদ্ধ থেকে আরো আলো ছড়াতে পারে এ প্রত্যাশার বাস্তবায়নও আমাদের উদ্দেশ্য। আমি মনে করি, ঐক্যবদ্ধ থেকে ধারাবাহিকভাবে একুশ উদযাপন এই সাফল্যের মধ্যে পড়ে।

দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ : একুশে উদযাপনে পুরাণবাজারে আর কতোদিন এতোটা অবিচ্ছিন্ন থাকতে চান?

বিএম ওমর ফারুক : একুশে উদযাপনে পুরাণবাজারের সাথে সবসময় আছি এবং থাকবো।

দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনাদের অর্জন কী?

বিএম ওমর ফারুক : দীর্ঘ অর্ধশতাব্দী যাবত এ সংগঠনের মাধ্যমে পুরাণবাজারে নিরবচ্ছিন্নভাবে একুশের চেতনা সমাজের প্রতিটি স্তরে আমরা পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছি। একুশেকেন্দ্রিক সাহিত্য-সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল এখানে গড়ে উঠেছে, যা সঠিকভাবে বাংলা ভাষা চর্চায় অবদান রাখছে। একুশভিত্তিক আমার রচিত চারটি গান ও সাতটি কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। সমাজকে সচল, প্রাণবন্ত ও কুসংস্কার মুক্ত রাখা আমাদের সংগঠনের বড় অর্জন বলে আমি মনে করি।

কবি বিএম ওমর ফারুক চাঁদপুর শহরের পরিচিত একজন। তার পিতার নাম মৃত ডাক্তার শামছুল হক ছিদ্দিকী (পাক ফার্মেসী)। তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত ঔষধ ব্যবসায়ী। এ ব্যবসার পাশাপাশি তিনি লেখালেখি করেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত। তিনি পুরাণবাজার একুশ উদযাপন পরিষদের কার্যকরী সদস্য, ২নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির শিক্ষক-অভিভাবক কমিটির সদস্য এবং স্বদেশ সাহিত্য সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। তিনি ২ ছেলে, ১ কন্যা সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রী ফরিদা ইয়াসমিন একজন আদর্শ গৃহিণী। পরিবার পরিজন নিয়ে পৈত্রিক বাড়ি চাঁদপুর শহরের গুয়াখোলায় তার বসবাস।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়