প্রকাশ : ২০ ডিসেম্বর ২০২২, ০০:০০
চাঁদপুর-ফরিদগঞ্জ-রায়পুর আঞ্চলিক মহাসড়কে অসংখ্য ‘টিউমার’
মানুষ টিউমার নামে রোগে অক্রান্ত হলে চিকিৎসার মাধ্যমে নিরাময় করে নেয়। কিন্তু সড়কে যদি এমন টিউমার দেখা দেয় তাহলে তা অপসারণ করা না হলে যানবাহন দুর্ঘটনার শিকার হয়। চাঁদপুর-ফরিদগঞ্জ-রায়পুর আঞ্চলিক মহাসড়কে ফরিদগঞ্জ অংশের অনেক স্থানে টিউমারের মতো কিছু কিছু অংশ ফুলে গিয়েছে। ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। সড়ক বিভাগ মাঝেমধ্যে এগুলো অপসারণ করলেও ক’দিন পরই তা পুনরায় ভেসে উঠে বা ওই স্থান নষ্ট হয়ে যায়। এতে প্রশ্ন উঠেছে সড়কের টিউমার সাড়াবে কে?
|আরো খবর
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার সোভান ব্রীজের পাশ হতে ধানুয়া বাজার এলাকা, ভাটিয়ালপুর চৌরাস্তা, ভাঙ্গাবাড়ি এলাকা, বেইলী ব্রীজ হতে বাসস্ট্যান্ড, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উত্তর-দক্ষিণ পাশ, চতুরা ব্রীজ এলাকা, বারপাইকা ফকির বাড়ি ও গৃদকালিন্দিয়া বাজারের দক্ষিণ পাশ দিয়ে চরমান্দারী হয়ে পার্শ্ববর্তী রায়পুর উপজেলার বর্ডার পর্যন্ত প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ স্থানের এই সড়ক টিউমারের মতো ফুলে আছে। এটি যেন মানবদেহে অনেকটা টিউমারের আকার ধারণ করেছে। সাথে যোগ হয়েছে বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে গিয়ে কোথাও ৭ থেকে ৮ ফুট দেবে গেছে, আবার কোনো স্থানে সড়কের পাশে অসংখ্য খানাখন্দক সৃষ্টি হয়েছে। এ সড়কটির উপর দিয়ে দিনে-রাতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে পণ্যবাহী ট্রাক ও যানবাহন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত দু’বছরে এই সড়কে প্রাণ গেছে প্রায় ২০-২৫ জনের। আহত হয়েছে বহু মানুষ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো -উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দক্ষিণ পাশে এই ফুলা স্থানে ট্রাকের চাকা স্লিপ করে সিএনজির অটোরিক্সার সাথে সংঘর্ষ হয়ে মারা যায় ৪ জন যাত্রী। একই সড়কে বাসস্ট্যান্ডের দক্ষিণ পাশে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায় ৩ যুবক। ধানুয়া এলাকায় লিলাফুলা এ স্থানের সাথে গাড়ির চাকা স্লিপ খেয়ে যাত্রীবাহী বাস ও কাভার্ড ভ্যানের সংঘর্ষ হয়ে মারা যায় ২ জন। এভাবে প্রতিনিয়ত ছোট-বড় দুর্ঘটনার শিকার হয়ে নিহত-আহত হওয়ার পাশাপাশি পঙ্গুত্ব বরণ করতে হচ্ছে অনেককেই।
সড়কটি অনুসন্ধানকালে এক গাড়ি চালক জানান, আমি রাতের আঁধারে গাড়ি চালাচ্ছিলাম। কিন্তু দূর থেকে ফুলা প্রথমে বুঝতে পারিনি। পরবর্তীতে ফুলাস্থানের সাথে চাকা স্লিপ খেয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছি। এ সময় যাত্রীসহ আমি মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছি। আমার গাড়িরও অনেক ক্ষতি হয়েছে।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা কার-মাইক্রো ড্রাইভার ও মালিক ঐক্য পরিষদের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মোঃ আবু তাহের বলেন, দুটি জেলার আঞ্চলিক এই মহাসড়কটির ফরিদগঞ্জ অংশের অবস্থা এতোটাই খারাপ যা দিয়ে যানবাহন চলাচল সম্ভব না।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সামসুজ্জোহা সাংবাদিকদের জানান, সড়কটির বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দক থাকলে আমরা মেরামত করে দেবো। এ সড়কটি দিয়ে দিনে-রাতে ওভারলোডের যানবাহন চলাচলের কারণে হয়তো ছোটখাটো টিলারমতো সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা এটিকে টিউমারের মতো বললেও আমরা বলে থাকি হাম। তবে এ হামগুলো এমন শক্ত যে জ্ঞাতি দিয়ে কুপিয়ে কাটা সম্ভব নয়। তাহলে সমাধান কী? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টি আপাতত আমারও জানা নেই। ভাবতে হবে কী করা যায়।