প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর ২০২২, ০০:০০
অশ্রুশিক্ত নয়নে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে গতকাল বুধবার শেষ হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজা। সকাল ৯টা ৫৭ মিনিট থেকে দশমী বিহিত পূজার লগ্ন শুরু হয়। পূজা শেষে দর্পণ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে পূজার ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়। বুধবার রাত ৮টার মধ্যে কচুয়া উপজেলার ৩৮টি মন্দিরের প্রতিমা বিসর্জন দেয়া সম্পন্ন হয়।
চণ্ডীপাঠ, বোধন এবং দেবীর অধিবাসের মধ্য দিয়ে গত শনিবার থেকে শুরু হয় হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজা। এবার দেবী এসেছেন গজে (হাতি) চড়ে এবং নৌকায় করে দেবী মর্ত্য ছেড়ে স্বর্গে ফিরে গেছেন।
অষ্টমী ও নবমীতে উপজেলার বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন স্থানীয় সাংসদ ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ, বিপিএম (বার), সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আবুল কালাম চৌধুরী, ইউএনও নাজমুল হাসান, এসি (ল্যান্ড) মোঃ ইবনে আল জায়েদ হাসান, কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ ইব্রাহীম খলিল, জেলা গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শক মুহাম্মদ শাহজাহান কামালসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
পঞ্জিকা মতে, মহিষাসুরের সঙ্গে ৯ দিন ৯ রাত যুদ্ধের পর দশম দিনে জয়ী হন দেবী দুর্গা। এজন্যেই বিজয়া দশমী। বিজয়া দশমীর কথাটি শুনলেই মন বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের। আবার তারা এ কথাটিও বলেন, কিন্তু এ কথাটাও আমাদের ভুললেই চলবে না যে, এই দিনে মা বিজয়ী হয়েছিলেন, এই মা সফল হয়েছিলেন। তবুও এই দিনে মা আমাদের ছেড়ে চলে যাবেন এ কথা মনে পড়লেই মন অশান্ত হয়ে ওঠে। বিজয়া দশমীর তিথিতে মা সকল অশুভ শক্তির বিনাশ করেন এবং সারা বছরের জন্য আমাদের আনন্দে ভরিয়ে রেখে যান। সেই লোকাচার বাংলার ঘরে ঘরে সিঁদুর খেলা হিসেবে পরিণত হয়েছে। সিঁদুর খেলার পাশাপাশি চলে কোলাকুলিও।
কচুয়া উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ফনী ভূষণ মজুমদার তাপু ও সাধারণ সম্পাদক বিকাশ সাহা জানান, এবার কচুয়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ৩৮টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। সুষ্ঠু, সুশৃঙ্খলভাবে শারদীয় দুর্গা উৎসব সম্পন্ন হওয়ায় উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ, আনসার বাহিনী, সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন।
উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান এক্য পরিষদের সভাপতি প্রাণধন দেব ও সাধারণ সম্পাদক প্রিয়তোষ পোদ্দার জানান, ৩৮টি মণ্ডপে বর্ণাঢ্য আয়োজনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামী দিনগুলোতেও সকল জাতি-গোষ্ঠীর সহযোগিতায় শান্তিপূর্ণভাবে এ উৎসব পালনে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।