প্রকাশ : ২৮ জুলাই ২০২১, ০০:০০
করোনাময় ঈদ এমনিতেই ছিল নিরানন্দ। তার সাথে যোগ হয়েছে মৃত্যুর মিছিল। একদিনে ৫ জন, ৬ জন, ৮ জনের মৃত্যু! এমন খবর শুধু একটার পর একটা আসতেই থাকে হাসপাতাল থেকে। সাত ঘণ্টায় একটি হাসপাতালে যদি ছয়টি মৃত্যুর ঘটনা ঘটে, আর এর মধ্যে পাঁচজনই যদি হয় করোনায় আক্রান্ত, তখন ওই হাসপাতাল এবং এর আশপাশের পরিবেশটা কেমন ভারাক্রান্ত ও শোকাচ্ছন্ন ছিল তা প্রত্যক্ষদর্শীরাই বলতে পারবেন। একের পর এক স্বজনরা লাশ নিয়ে যাচ্ছে। মৃত্যু ছাড়া একটি দিনও পার হয় নি। এই মৃত্যুপুরীর বিবরণ চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের। যে হাসপাতালটিতে গত ২০ জুলাই থেকে ২৬ জুলাই পর্যন্ত সাতদিনে করোনায় মারা গেছেন ১৪ জন, আর করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন আরো প্রায় দশজনের মতো। এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন শাহরাস্তিতে দুইজন।
গত সাতদিন তথা ২০ জুলাই থেকে ২৬ জুলাই পর্যন্ত চাঁদপুর সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য সূত্রে জানা যায়, এই সাতদিন চাঁদপুর জেলায় ২৫৫৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১০২৩ জনের। শনাক্তের হার ৪০ শতাংশ। আর এই সাতদিনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৬ জন।
উপজেলা ভিত্তিক সাতদিনের করোনা শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা হলো : চাঁদপুর সদরে শনাক্ত ৪০৫, মৃত্যু ৬; হাইমচরে শনাক্ত ৫৮, ফরিদগঞ্জে শনাক্ত ১১৮, মৃত্যু ১; হাজীগঞ্জে শনাক্ত ১১৬, মৃত্যু ২; শাহরাস্তিতে শনাক্ত ১৫১, মৃত্যু ৫; কচুয়ায় শনাক্ত ৬২, মতলব উত্তরে শনাক্ত ৪৬, মৃত্যু ১ এবং মতলব দক্ষিণে শনাক্ত ৬৮, মৃত্যু ১ জন।
যারা মারা গেছেন তারা হচ্ছেন : চাঁদপুর সদর উপজেলার আশিকাটি ইউনিয়নের উত্তর পাইকপাড়া গ্রামের কাঞ্চনবালা (৬৫), লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নে বহরিয়া রামদাসদী গ্রামের মেহেদী হাসান (৩৬) ও একই গ্রামের রতন বেপারী (৭৫), মৈশাদী গ্রামের মাইমুনা (৬৫), চাঁদপুর শহরের নতুনবাজার গুণরাজদী গ্রামের তাজুল ইসলাম (৭৫) ও প্রফেসর পাড়ার বাচ্চু মিয়া (৬৫)।
হাজীগঞ্জ উপজেলার রামপুর নওহাটা গ্রামের জাহানারা বেগম (৭০) ও রঘুনাথপুর তারাপল্লা গ্রামের রাবেয়া (৬৫)। মতলব দক্ষিণ উপজেলার খাদেরগাঁও ইউনিয়নের নাগদা গ্রামের ফজলুল হক (৭০), ফরিদগঞ্জ উপজেলার ধানুয়া গ্রামের সাজেদা বেগম (৫৫), মতলব উত্তর উপজেলার ইন্দুরিয়া নয়াকান্দি গ্রামের জাহানারা বেগম (৬০) এবং শাহরাস্তি উপজেলার শুয়াপাড়া গ্রামের সাজেদা বেগম (৭০), সুচিপাড়া গ্রামের আয়েশা বেগম (৬৫), খিলা গ্রামের আমিনুল হক (৭০) ও উয়ারুক গ্রামের হাজী আবুল হাশিম (৭০)।
এই পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে যে, আক্রান্তের তুলনায় শাহরাস্তিতে মারা গেছে বেশি।