প্রকাশ : ০৮ এপ্রিল ২০২২, ০০:০০
ডিসেম্বরে নয়, অগামী জুন মাসেই পদ্মা সেতু চালু হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এবং অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের পর ভার্চুয়ালি ব্রিফিং করেন অর্থমন্ত্রী।
পদ্মা সেতু চালু হতে দেরি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এ বছরের শেষের দিকে হবে। আমরা প্রত্যাশা করে আছি, এ বছরের (অর্থবছর) শেষ নাগাদ এটি চালু করতে পারবো। আমাদের ফিন্যান্সিয়াল বছর, যেটি জুনে শেষ হবে। আমরা বিশ্বাস করি এরমধ্যে এটি চালু করতে পারবো।’
৬ এপ্রিল জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছিলেন, ‘এ বছরের শেষ নাগাদ পদ্মা সেতু চালু হবে।’ পরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যে কথাটি বলেছেন তার একটি লজিক হলো, পদ্মা সেতুর জন্য রিসেন্টলি কিছু মালামাল আসতে সমস্যা হচ্ছে ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য। এই মালগুলো মার্চ মাসে আসার কথা ছিল। কিন্তু এখন কিছুটা অনিশ্চয়তা চলে এসেছে। এ জন্য আমার মনে হয় ডিসেম্বরের কথা বলা হয়েছে। আমাদের টাইম আছে ২০২২-এর ডিসেম্বর পর্যন্ত।’
ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে পদ্মা সেতুর টোল প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘টোল আদায় হবে এটা জানি। কিন্তু টোলের পরিমাণ এখনো নির্ধারিত হয়নি। আমরা একটা কথা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, পদ্মা সেতুতে আমরা যে পরিমাণ খরচ করেছি, সেটা পূর্ণমাত্রায় টোল বাবদ আদায় করবো। অন্যান্য প্রজেক্ট থেকেও কিন্তু টোল আদায় করছি, এখান (পদ্মাসেতু) থেকেও টোল আদায় হবে। শুধু টোল আদায় হবে না, আমরা প্রফিটও করবো। এ প্রজেক্টের জন্যে আমরা যে পরিমাণ খরচ করেছি তারচে’ বেশি আমরা অর্জন করবো। সারা বিশ্বও তাণ্ডই করে। সারা বিশ্বে এ ধরনের প্রকল্পগুলো টোলভিত্তিকই করা হয়। টোলের হার এখনো ঠিক হয়নি। হলে আপনারা (গণমাধ্যম) জানতে পারবেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বলতে পারি, যে পরিমাণ টাকা এ প্রকল্পে খরচ হয়েছে এবং শেষ দিন পর্যন্ত যে খরচ হবে সেটি আমাদের টোল থেকেই আদায় করতে হবে। না হলে এগোনো যাবে না, কারণ এগুলো আমাদের মেইনটেইন করতে হবে। আমাদের একটা প্রকল্প থেকে আরেকটা প্রকল্প করতে হবে। একটা ব্রিজ থেকে আরেকটা ব্রিজ করতে হবে। সুতরাং এগুলো করার জন্য রেভিনিউ দরকার হবে। তবে সবার জন্য লাভজনক অবস্থায় থাকবে। যারা ব্যবহার করবে তারাও লাভজনক অবস্থায় থাকবে, সরকারও।’
‘শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতার সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনীতি বিশ্লেষণ করে কেমন দেখছেন, কোনো শঙ্কা আছে কি না-’ এমন প্রশ্নের জবাবে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘এখনো গোটা বিশ্ব বলছে বাংলদেশের অবস্থা অনেক শক্তিশালী। তারা যে বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে এসব মূল্যায়ন করে সেগুলো হচ্ছে এখনকার সময় যাদের জিডিপির তুলনায় ঋণের পরিমাণ বেশি তারা বিপদে আছে। আমরা কিন্তু সেই বিপদে নেই। সেজন্য আমরা সেসব দিকে চিন্তা ভাবনা করি না। আমাদের অবস্থা অনেক ভালো, অনেক শক্তিশালী। আমরা আরও শক্তিশালী হবো। আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতির কোনো একটি দিক খুঁজে বের করতে পারবেন না, যেগুলো পর্যালোচনা করে বুঝব সামনের দিনগুলো ভালো নয়। সামনের দিনগুলো আমাদের ভালোই কাটবে।’
‘শ্রীলঙ্কার সঙ্গে হঠাৎ করে তুলনার ফলে অস্বস্তি বোধ করছেন কি না’ এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এ আলোচনা তো আমরা করিনি। কেউ যদি আলোচনা করে সেটি তারা করতে পারে। সেটি আমাদের জন্য প্রযোজ্য কি না তা আপনারা ভালোভাবে বুঝতে পারছেন। এটি আমাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। আপনারা ভালোভাবেই জানেন আমাদের ফরেন এক্সচেঞ্জ রিজার্ভও অনেক ওপরে আছে। আমাদের রেভিনিউ বাড়ছে, রিজার্ভ বাড়ছে, ইনফ্লেশনও নিয়ন্ত্রিত। তাহলে সমস্যা কোথায়, আমাদের তো সমস্যা নেই। আমি মনে করি উই আর সেইফ।’ সূত্র : ঢাকা পোস্ট।