শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৩ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ০৪ এপ্রিল ২০২২, ০০:০০

মাহে রমজানের প্রথম দিন অতিবাহিত

পাইকারী বাজারে কেনাবেচা ছিলো অনেকটা কম

পাইকারী বাজারে কেনাবেচা ছিলো অনেকটা কম
বিমল চৌধুরী ॥

শুরু হয়েছে সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র মাহে রমজান। ধৈর্য, শান্তি, ক্ষমা ও মুক্তির মাস মাহে রমজান। আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে অসংখ্য শোকরিয়া আদায় করে গতকাল মুসলিম উম্মাহ মাসব্যাপী পবিত্র রমজানের প্রথম দিন অতিবাহিত করেন। তারা দিনব্যাপী রোজা শেষে গ্রহণ করেন ইফতার। যা প্রতিটি মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে একটি পবিত্র নিয়ামত। যতটুকু জানা যায়, পবিত্র মাহে রমজানে যে যত বেশি অন্যায় থেকে দূরে থাকবে, মানুষকে ভালোবেসে তার সাহায্যার্থে এগিয়ে আসবে, আল্লাহপাক তার প্রতিই বেশি দয়াশীল হবেন। অথচ দেখা যায়, এই রোজার মাসেই রোজাকে কেন্দ্র করে কোনো কোনো মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা হয়ে উঠেন বেপরোয়া। তারা অধিক লাভের আশায় বাজারে সৃষ্টি করেন কৃত্রিম সংকট। বেড়ে যায় চাল, তেল, ডাল, চিনি, ছোলাসহ অতি প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্যের দাম। তাদের এই সংকেটের কারণে অধিক দামে পণ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে মধ্যবিত্ত শ্রেণী থেকে শুরু করে নি¤œবিত্ত মানুষকে হতে হয় দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। তবে এ বছর রোজাকে কেন্দ্র করে নতুন করে কোনো পণ্যের দাম না বাড়লেও মাসখানেক আগে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অজুহাতে যে দাম বেড়েছে তাতেই অস্থির হয়ে পড়ে ক্রেতা সাধারণ। তবে রোজাকে কেন্দ্র করে নিত্যপণ্যের দাম নতুন করে বৃদ্ধি পায়নি। এমনকি অনেক পণ্যের দামই কমেছে-এমনটাই দাবি করলেন চাঁদপুর পুরাণবাজারের কয়েকজন পাইকারী ব্যবসায়ী। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাদের কথার সত্যতা খুজে পাওয়া যায়।

গতকাল রোজার প্রথম দিনে পুরাণবাজারের পাইকারী কয়েকটি দোকানে গিয়ে দেখা যায়, দেশী পেঁয়াজ ২৩ টাকা, ইন্ডিয়ান এলসি ২২ টাকা, লাল আলু ১২ টাকা, সাদা আলু ১০/১১ টাকা, দেশী রসুন প্রকারভেদে ২৫/৩০ টাকা, চায়না রসুন এলসি ১০০ টাকা, চায়না আদা ৭২ টাকা আর বার্মা আদা বিক্রি হচ্ছে ৪২ টাকা। ব্যবসায়ীদের মতে, গত রমজানের চেয়ে অনেকটা কম দামে বিক্রি হচ্ছে এ সকল পণ্য। যা গত ১৫ দিন আগেও এ দামে বিক্রি হয়নি। একই বক্তব্য শোনা গেল ডাল, তেল, চিনি, মুড়ি, চিড়া ব্যবসায়ীদের কাছেও। গতকাল পাইকারী বাজারে চিনি ৭৩ টাকা ৪০ পয়সা, সয়াবিন তেল (লুজ) ১৬৫ টাকা, পাম তেল ১৫০ টাকা, মোটা মুড়ি ১১৫-১২০ টাকা, চিকন মুড়ি প্রকার ভেদে ৫৫-৬৫ টাকা, চিড়া প্রকার ভেদে ৪৬-৫০ টাকা, লাল চিড়া ৬৫ টাকা দামে বিক্রি হয়।

গত দু দিনের চেয়ে গতকাল চিড়ার বাজার কিছুটা বাড়তির দিকে রয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। এদিকে বোতলজাত সয়াবিন তেল ৫ লিটার ৭৫০ টাকা বিক্রি হলেও ২/১ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের কিছুটা অভাব রয়েছে। তা সকল দোকানে পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ হিসেবে দোকানদারগণ বলেন, সাপ্লাই কম, অপরদিকে চাহিদাও আগের মত নেই। দেখা যায়, গত ক’দিন ধরে জেলা প্রশাসনের তদারকিতে মাঠ পর্যায়ে ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে টিসিবির ডাল ২ কেজি ১৩০ টাকা, চিনি ২ কেজি ১১০ টাকা আর বোতলজাত সয়াবিন তেল ২ লিটার ২২০ টাকা বিক্রি হওয়ায় বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। আগে টিসিবির পণ্য যে যেভাবে নিতে পারলেও এখন আর সেভাবে নিতে পারছে না।

রোজা আসলে সকল পণ্যের বাজারেই বেশি অস্থিরতা দেখা দেয়। রোজাকে কেন্দ্র করে গুড়, মসলা, খেজুর, কিসমিস, ইসুবগুলের ভুষিসহ অন্যান্য পণ্যের দাম বাড়লেও তা নিয়ে কিন্তু বেশি আলোচনা হতে দেখা যায় না। রোজাকে সামনে রেখে অধিক পরিমাণ পণ্য ক্রয় করার প্রবণতাকে কেন্দ্রে করেই প্রতি বছর রোজার আগ মুহূর্তে বাজার অস্থির হয়ে উঠে। কিন্তু এ বছর সেই চিত্র এখন পর্যন্ত তেমন একটা দেখা যায়নি। চলমান ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধের অজুহাতে হঠাৎ করেই নিত্যপণ্যের দাম অস্থির হয়ে উঠে। রাতারাতি দাম বেড়ে যায় অনেক পণ্যের। আর এই অস্থিরতাকে ঠেকাতে সরকারের তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের কারণে নিত্য পণ্যের বাজার নতুন করে আর ঊর্ধমুখী হতে পারেনি। বাজার না বাড়ার কারণে ত্রেতা সাধারণের মাঝে কিছুটা স্বস্তি নেমে এসেছে। তদুপরি বাজার আরো নি¤œমুখী হওয়ার ভয়ে মজুতদাররা রয়েছে অনেকটা শঙ্কিত। তবে পাইকারী বাজারে পণ্যের দাম কিছুটা কমলেও খুচরা বাজারে তার তেমন প্রভাব পড়েনি। যে যেভাবে পারছে সেভাবেই বিক্রি করতে চেষ্টা করছে। রমজানের প্রথমদিন হওয়ায় গতকাল পাইকারী বাজারে বেচা-বিক্রি অনেকটা কম দেখা গেলেও তার আগের দিনগুলোতে বেচা-বিক্রি ছিল অনেকটাই বেশি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়