ফরিদগঞ্জের ১৩ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের মধ্যে ৩টি ইউনিয়নে বিএনপির প্রার্থী না থাকলেও ১০টি ইউনিয়নে বিএনপির প্রার্থীরা নিজেদেরকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদিকে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ২২ নেতা-কর্মীকে আজীবনের জন্যে বহিষ্কার করা হলেও তারা তা আমলে না নিয়ে নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। সবচেয়ে আলোচিত খবর হলো আওয়ামী লীগের বর্তমান ও সাবেক দুইজন এমপির নিজ ইউনিয়নেই দলের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে।

ফরিদগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি শরীফ মোহাম্মদ ইউনুছ গতকাল তাঁর বক্তব্য বলেন, ইউপি নির্বাচন কেন্দ্রীয়ভাবে বিএনপি বর্জন করেছে। তাই কোনো নেতা-কর্মী যাতে নৌকাকে ভোট না দেয় এমন ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দলের যেসব নেতা ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছে তারা দলের পরিচয়ে নির্বাচনে প্রার্থী হননি। তারা নিজেদেরকে স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন করছেন।

এদিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি, ফরিদগঞ্জের সংসদ সদস্য মুহম্মদ শফিকুর রহমানের নিজ ইউনিয়ন ২নং বালিথুবায় এমপির চাচাতো ভাই জিএম হাসান তাফাচ্ছুমের নৌকা প্রতীকের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ থেকে সদ্য বহিষ্কৃত হারুন অর রশিদ আনারস প্রতীক নিয়ে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মাঠে রয়েছেন। একই ইউনিয়নে বিএনপির সাবেক এমপি প্রয়াত আলমগীর হায়দার খানের ছোট ভাই ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন নয়ন চশমা ও বিএনপির আরেক নেতা ইব্রাহীম মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মাঠে রয়েছেন। এই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ৪ প্রার্থীই জয় নিশ্চিত করতে তারা এখন ভোট চেয়ে ভোটারের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়িয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

অপরদিকে সাবেক এমপি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা লায়ন হারুনুর রশিদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়ার নিজ ইউনিয়ন ১৬নং দক্ষিণ রূপসায় নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী আখ্যা দিয়ে ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগ থেকে আজীবনের জন্যে বহিষ্কার হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অহিদুর রহমান খন্দকার, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবদুল কাদের খোকন (আনারস) ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক সদস্য জহিরুল ইসলাম (মোটরসাইকেল)।

জেলা আওয়ামী লীগের ওই বহিষ্কারাদেশের পরও কোনো প্রার্থীই তা আমলেই না নিয়ে বীরদর্পে নিজের জয় নিশ্চিত করতে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। ফলে সরকার দল তথা আওয়ামী লীগের বর্তমান ও সাবেক দুই এমপির নিজ নিজ ইউনিয়নে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে এবং নির্বাচনী উত্তাপ রয়েছে চরম আকারে। ইতোমধ্যে ওই দুই ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী ও দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের মধ্যে একাধিক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে।