শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬  |   ৩১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে 'আল্লাহু চত্বর'
  •   চাঁদপুর কণ্ঠৈর কলামিস্ট এএসএম শফিকুর রহমানের ইন্তেকাল
  •   নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পেল সেনাবাহিনী
  •   জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে’ প্রধান উপদেষ্টার ১০০ কোটি টাকার অনুদান
  •   মেঘনায় নিখোঁজ দুই ভাইয়ের মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০

দুই হাত নেই তবু বেঁচে থাকার আপ্রাণ চেষ্টা

দুই হাত নেই তবু বেঁচে থাকার আপ্রাণ চেষ্টা
নূরুল ইসলাম ফরহাদ ॥

জাহাঙ্গীর, জীবন সংসারে এক সংগ্রামী পুরুষের নাম। প্রতিনিয়িত তিনি প্রতিকূল পরিবেশে যুদ্ধ করে এগিয়ে যাচ্ছেন। শারীরিক প্রতিবন্ধী জাহাঙ্গীর (৫০) এক সময় অন্য দশজনের মত সুস্থ সবল ছিলেন। একজন নির্মাণ শ্রমিক হিসেব কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। ১৯৯৯ সালে তার জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। জীবনের গতিপথ যায় পাল্টে।

প্রতিদিনকার মতো সেদিনও বাড়ি থেকে বের হন কাজে। রড নিয়ে তার কাজ। কাজ করতে করতে নিজের অজান্তে রডটি লেগে যায় বিদ্যুতের তারে। সাথে সাথে ছিটকে পড়েন তিনি। দুই হাত, মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন অংশবিশেষ পুড়ে যায়। চিকিৎসকের পরামর্শে বেঁচে থাকার তাগিদে দুহাতের কনুইয়ের উপর পর্যন্ত কেটে ফেলতে হয়।

দুহাত নেই। অসহায় এই মানুষটির দিকে কেউ ভালোবাসার হাত বাড়াবে, তা ছিলো জাহাঙ্গীরের কল্পনাতীত। তাকে আবেগ আপ্লুত করে ২০০০ সালে একটি মেয়ে ভালোবেসে বিয়ে করে। শুরু হলো সংসার জীবন। সংসার জীবনে তার ১ ছেলে ৩ মেয়ে। বাড়ির পাশের চায়ের দোকানটিই তার আয়ের অন্যতম প্রধান উৎসহ। গ্রামের চায়ের দোকান, কতই বা ইনকাম। তারপরেও স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সুখেই আছেন তিনি।

কিন্তু হায়! গরিবের সুখ কপালে বেশিদিন টেকে না। সেটা যে একেবারেই অস্থায়ী। ২০১৫ সালে ভালোবাসার মানুষটি চিরদিনের জন্য তাকে ছেড়ে চলে যান। স্ট্রোকজনিত রোগে তিনি মারা যান। জাহাঙ্গীরের আকুতি, ‘দুটি হাতের একটিও নেই। না পারি কিছু ধরতে, না পারি কিছু মুখে দিতে। সর্ম্পূণ অচল আমি অন্যের সাহায্য ছাড়া। এরই মাঝে কেটে গেল ৭টি মাস। স্ত্রী হারানোর ব্যথা আর ৪টি সন্তানকে ছায়া দিয়ে রাখা কত যে নিদারুণ কষ্টের কেউ জানে না। কেউ না জানুক, যিনি এ ধরায় পাঠিয়েছেন তিনিতো জানেন আমার ব্যথা’।

ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার কেরোয়া গ্রামের এক বিধবা মেয়ে জাহাঙ্গীরের বাস্তব পরিস্থিতি দেখেও বিয়ে করতে সম্মতি জানান। আবার শুরু হলো সংসার জীবন। পূর্বের সন্তানদের নিয়ে দ্বিতীয় নতুন সংসার নিয়ে জাহাঙ্গীর ভালোই আছেন। আর্থিক অনটনেও হাসতে পারেন অনাবিল। আর্থিক সংকট তাদের হাসি কেড়ে নিতে পারেনি। বাড়ির আঙ্গিনার চা স্টলটিতে তাকে সহযোগিতা করছে একমাত্র ছেলে।

জাহাঙ্গীর এ প্রতিনিধিকে বলেন, দোকানের ইনকাম আর প্রতিবন্ধী ভাতা দিয়ে চলে যাচ্ছে আমাদের ৬ জনের সংসার। ৬ সদস্যের সংসার চালাতে খুবই কষ্ট হচ্ছে বিধায় আমি বিত্তবানদের সহায়তা প্রত্যাশা করছি। ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১৪নং ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের দক্ষিণ চর রামপুর গ্রামের গাজী বাড়ির বাসিন্দা মোঃ জাহাঙ্গীর।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়