শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪  |   ২২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   সুদ-ঘুষের বিরুদ্ধে বয়ান করায় ইমামকে চাকরি ছাড়ার নির্দেশ!
  •   এনআইডিতে ভোটার এলাকা হিসেবে থাকছে না বর্তমান ঠিকানা
  •   জাহাজে ৭ খুনের রহস্য উদ্‌ঘাটনসহ বিভিন্ন দাবিতে কর্মবিরতি
  •   নিখোঁজের একদিন পর বৃদ্ধের মরদেহ মিললো পুকুরে
  •   সৌদি আরবে বাংলাদেশের ১৬তম  রাষ্ট্রদূত মো. দেলোয়ার হোসেন

প্রকাশ : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০:৩০

যেভাবে ধরা পড়েন ‘একমাত্র’ খুনি

অনলাইন ডেস্ক
যেভাবে ধরা পড়েন ‘একমাত্র’ খুনি

হাইমচরে মেঘনা নদীর ঈশানবালা খালের মুখে নোঙর করা সারবাহী এমভি আল-বাখেরা জাহাজে সাতজনকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ওই জাহাজের লশকর আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফানকে (২৬) গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর ২০২৪) রাতে র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র‍্যাব-১১ ও ৬-এর যৌথ অভিযানে বাগেরহাটের চিতলমারী এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। র‍্যাবের ভাষ্য, জাহাজে সাত খুনের ঘটনায় আকাশ মণ্ডল ‘একমাত্র’ খুনি। নিয়মিত বেতন-ভাতা ও ছুটি না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি প্রথমে জাহাজের মাস্টারকে খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যা করেন। জাহাজের অন্য ব্যক্তিরা জীবিত থাকলে সহজে ধরা পড়ে যাবেন ভেবে বাকি সবাইকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তিনি। কিন্তু তাদের মধ্যে একজন বেঁচে যান। গ্রেপ্তার আকাশ বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার মূলঘর গ্রামের জগদীশ মণ্ডলের ছেলে। মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে চিতলমারী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। পরে গতকাল বুধবার দুপুরে কুমিল্লা নগরের শাকতলা এলাকায় র‍্যাব-১১-এর সিপিসি-২ কুমিল্লা কার্যালয়ে ব্রিফিং করে ঘটনার বিস্তারিতে তুলে ধরেন র‍্যাব-১১-এর উপ-অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন। আকাশকে কীভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানতে চাইলে র‍্যাবের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর পালানোর সময় আকাশ নিহত ব্যক্তিদের পাঁচটি মুঠোফোন নিজের ব্যাগে করে নিয়ে যান। এর মধ্যে জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়া ও গুরুতর আহত অবস্থায় বেঁচে যাওয়া সুকানি জুয়েলের মুঠোফোনও ছিল। ঘটনার পর ছায়াতদন্ত শুরু করে র‍্যাব। এরপর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তার অবস্থান শনাক্ত করে অভিযান চালায়। গ্রেপ্তার হওয়ার পর প্রথমে পুরো ঘটনা অস্বীকার করেন আকাশ। দাবি করেন, তিনি জাহাজেই ছিলেন না। এরপর তল্লাশি করে যখন নিহত ব্যক্তিদের মুঠোফোন পাওয়া যায়, তখন তিনি পুরো ঘটনা বলতে শুরু করেন। র‍্যাবের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘সাতজন মানুষকে আকাশ একা খুন করেছে শুনে আমরাও অবাক হয়েছি। এরপর বিভিন্নভাবে অন্তত ১২ বার তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রতিবারই একই রকম তথ্য দিয়েছে আকাশ। এ সময়ের মধ্যে তার দেওয়া তথ্যের সবকিছুই ক্রস চেক করেছি। যেমন সে বলেছে, এই জায়গায় এই দোকান থেকে ঘুমের ওষুধ কিনেছি। আমরা সেখানে টিম পাঠিয়ে নিশ্চিত হয়েছি তার তথ্য সঠিক। আবার সে বলেছে, বাজার করার কথা বলে ট্রলারে করে পালিয়েছে। আমরা আজ সকালে একই স্থানে তার পালানোর সময় অনুযায়ী টিম পাঠিয়ে দেখেছি, সেখানে ওই সময় ট্রলার চলাচল করে। সব মিলিয়ে তার সব তথ্য সঠিক পেয়েছি।’ আকাশ মণ্ডল হিন্দু এটা কাউকে বুঝতে দিতেন বলেও দাবি করেন তিনি। যার কারণে জাহাজের সবাই তাকে ইরফান নামে চিনতেন বলে তিনি জানান। র‍্যাবের দেওয়া তথ্যমতে, গ্রেপ্তারের সময় আকাশের কাছ থেকে একটি গ্লাভস, একটি ব্যাগ, ঘুমের ওষুধের খালি পাতা, নিহত ব্যক্তিদের ব্যবহৃত পাঁচটি ও আকাশের ব্যবহৃত দুটিসহ মোট সাতটি মুঠোফোন এবং বিভিন্ন জায়গায় রক্তমাখা নীল রঙের একটি জিন্স প্যান্ট উদ্ধার করা হয়। ঘটনার সময় ওই জিন্স প্যান্ট পরে ছিলেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন বলেন, এমভি আল-বাখেরা জাহাজ থেকে গত সোমবার বেলা তিনটার পর পাঁচজনের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। আর তিনজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় জাহাজের মালিক মাহবুব মোর্শেদ বাদী হয়ে চাঁদপুরের হাইমচর থানায় একটি মামলা করেন। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় মঙ্গলবার রাতে এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে আকাশ মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়