প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ১৮:২৩
মণিপুর চরে চলছে ইলিশের রমরমা বেচাকেনা
হাইমচরের গাজীপুরের মণিপুর চরে চলছে ইলিশের রমরমা বেচাকেনা। নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ের এমন ইলিশ বেচাকেনায় হতাশ সচেতনমহল। ২৬ অক্টোবর শনিবার সকালে গাজীপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মণিপুর চরে ভাসমান হাট বসিয়ে ইলিশ বিক্রির এই রমরমা বাণিজ্য দেখা যায়। অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রত্যেক দিন নিজস্ব টহল টিম ও শক্তিশালী সিন্ডিকেটের নজরদারির মাধ্যমে চলে ইলিশ বেচাকেনা। এই সিন্ডিকেটের নেপথ্যে রয়েছেন মণিপুর এলাকার সিরাজ গাজীর ছেলে মোঃ বিল্লাল গাজী, রহমান গাজীর ছেলে মোঃ সবুজ গাজী, আব্দুল কাদের মিজির ছেলে মো. নুরু মিজি, মো. শহিদ মিজির ছেলে মো. তাজল মাঝি, মানু গাজীর ছেলে মো. মাসুদ গাজীসহ অন্যরা। এরা নিজেরাই মাছের ভাসমান আড়ত বসিয়ে ডাকের মাধ্যমে ইলিশ বিক্রি করছে। এমনকি অসাধু জেলেদের ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকার লোভে ফেলে ইলিশ নিধনে নদীতে নামতে নিষেধাজ্ঞা শুরুর দিন থেকেই বাধ্য করছে। স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে ১১টা পর্যন্ত আর সন্ধ্যার পর থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত ইলিশ বেচাকেনা হরদম চলছে। মণিপুর চরের মজিব কেল্লায় যাওয়ার প্রধান ফটক আশ্রায়ণ প্রকল্পের সামনে নদীর পাড় এবং টিলায় দিনে কয়েক লাখ টাকার ইলিশ বেচাকেনা চলছে। যা অনেকটা দেখেও দেখে না নীলকমল নৌ পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা। অন্যদিকে রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার অভিযোগ নীলকমল নৌ পুলিশ ফাঁড়ির স্পীডবোট চালক জয়নালের বিরুদ্ধে। এই ফাঁড়ির এসআই আরিফের যোগসাজশে জয়নাল নদীতে নৌকা নামাচ্ছে। চরভৈরবী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার বলেন, জয়নাল নৌ পুলিশের আরিফের সাথে সুসম্পর্ক রেখে স্পীডবোট চালানোর প্রভাব দেখিয়ে মোট ১০টি জেলে নৌকা নদীতে নামিয়ে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার ইলিশ বেচাকেনা করছে। আমরা হাতেনাতে জয়নালের নৌকা ও ইলিশ ধরেছি এবং বিষয়টি নৌ পুলিশ ও মৎস্য কর্মকর্তাকে অবগত করেছি। যদি এই হয় মা ইলিশ রক্ষা অভিযানের নমুনা, তাহলে যেসব জেলে নৌকা নিয়ে নদীতে যাচ্ছে না, এরপর থেকে তারাও নদীতে নামলে আমাদের কিছুই করার থাকবে না। অভিযোগ আড়াল করার চেষ্টা করে উল্টো জয়নালের পক্ষ নিয়ে নীলকমল নৌ পুলিশের এস আই আরিফ হোসেন বলেন, জয়নাল আগেপরে এমন করে থাকলেও এখন করে না। আর স্থানীয় বোট চালক ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে ওর সমস্যা থাকায় ওরা বানোয়াট কথাবার্তা বলছে। তাছাড়া জয়নাল আমাকে অনেক তথ্য দেয়, তাই ওকে কাজে রেখেছি। এ বিষয়ে নীলকমল নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোঃ মোজাম্মেল হক বলেন, আমি নতুন মাত্র যোগদান করেছি। কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তাকে ছাঁটাই করা হবে। আমি কোনো অভিযুক্তকে নিয়ে কাজ করতে এখানে আসিনি। আমরা মা ইলিশ রক্ষা র অভিযানে এখন পর্যন্ত ৪টি নিয়মিত মামলা দিয়েছি। আর ৭টি নৌকা, ৮ লাখ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করেছি,১২ জন আসামী আটক করেছি এবং ৫টি মোবাইল কোর্টে অংশ নিয়ে ৮০ কেজি ইলিশ এতিম দুঃস্থদের মাঝে বিতরণ করেছি। ছবি ক্যাপশন: হাইমচরে মেঘনার পাড়ে এভাবেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ইলিশ কেনাবেচার হাট বসে।