প্রকাশ : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৭
স্যানিটারি মিস্ত্রি সবজি বাগান করে প্রশংসিত
বিষ্ণুদী গ্রামে সবজি বাগান করে প্রশংসিত হয়েছেন মো. মোশারফ মিজি। তিনি পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি কৃষি কাজে সময় ব্যয় করেন। বেশ কয়েক রকমের শাকসবজি আবাদ করেছেন মোশারফ। তিনি প্রমাণ করেছেন ইচ্ছে থাকলে অসম্ভব বলে কিছু নেই। এসব সবজি দিয়ে নিজের পরিবারের পুষ্টির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি প্রতিবেশীদের মাঝে এসব সবজি উপহারস্বরূপ বিতরণও করছেন তিনি।
সরেজমিনে দেখা যায়, চাঁদপুর পৌরসভার ১৫ নং ওয়ার্ডের জিটি রোডস্থ উত্তর বিষ্ণুদী গ্রামে অন্যের জায়গায় জৈবসার ব্যবহার করে বিষমুক্ত বেশ কয়েক রকমের সবজি চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে শিম, কাঁচামরিচ, পেঁপে, মিষ্টি কুমড়া, বেগুন, শসা, ডাঁটা, লাউ, করলা ইত্যাদি। শাকের মধ্যে রয়েছে পুঁইশাক, কলমি ও লাল শাক। সকালে কর্মস্থলে যাওয়ার আগে ও পরে ওই সবজি ক্ষেতের পরিচর্যা করেন তিনি। উৎপাদিত এসব সবজি দিয়ে নিজের পরিবারের পুষ্টির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি প্রতিবেশীদের মাঝেও বিতরণ করছেন তিনি।
মোঃ মোশারফ মিজি জানান, আমার বাড়ির পাশেই বিদ্যাবতী খাল। তার পাশেই মো. দেলোয়ার গাজীর জায়গাটিতে দীর্ঘদিন ধরে আমি এভাবে সবজি চাষ করে আসছি। এবার পরিসরটা একটু বাড়িয়ে নিয়েছি। পরিত্যক্ত জায়গায় সবজি বাগান করার কারণে রূপ বদলে গেছে। বাড়ির আঙ্গিনার ও পরিত্যক্ত জায়গায় সবজি চাষ করে সাফল্য পেয়েছি। এতে আমার কায়িক শ্রমও হয়, শরীর ভালো থাকে।
তিনি আরও জানান, বাজারে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বেশি। তার কারণ, চাহিদার চেয়ে উৎপাদন কম। আন্তরিকতা থাকলে দেশের সরকারি-বেসরকারি সব অফিস ও ঘর-বাড়ির পরিত্যক্ত জায়গায় এমন সবজি বাগান গড়ে তোলা সম্ভব। এতে বাজারে সবজির দাম লাগামহীন হবে না।
এ সময় তিনি সব অফিস ও বসতবাড়ির আঙ্গিনায় পরিত্যক্ত জায়গায় সবজি বা ফল চাষের আহ্বান জানান। কৃষি অফিসের মাধ্যমে যাদেরকে পুষ্টি বাগান প্রদান করার জন্যে সুবিধা দেওয়া হয়, সেটি যেন যথাযথভাবে করা হয়। পুষ্টি বাগানের নামে অনেকেই কৃষি অফিস থেকে প্রণোদনা নিয়ে থাকেন, কিন্তু তারা কেউই কৃষি কাজের সাথে জড়িত নন। আমার বিশ্বাস, কৃষি অফিস এ বিষয়টি ভালোভাবে দেখবেন।
সবজি বাগানের উদ্যোক্তা মোশারফ বলেন, এবার কয়েকবার বন্যায় ফসল নষ্ট হওয়ায় এবং নিজের পরিবারের চাহিদা মেটানোর জন্যে বাড়ির আঙ্গিনায় গড়ে তুলি এই বাগান। প্রতিদিন নিয়ম করে আমি আমার মা, স্ত্রী এবং ছেলে-মেয়ে বাগান পরিচর্যার কাজ করি। এই বাগান থেকে আমার পরিবার বিষমুক্ত ফল ও সবজি পায়। পরিবারের চাহিদা পূরণ করে অতিরিক্ত ফল ও সবজি আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের বণ্টন করে দেই । আগামীতে এই বাগান আরও বড়ো পরিসরে বাণিজ্যিকভাবে করার পরিকল্পনা রয়েছে।
জেলা কৃষি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মো. মোবারক হোসেন বলেন, একজন স্যানিটারী মিস্ত্রি মো. মোশারফ হোসেন। তার যেই পেশা সেটিও অনেক কষ্টের। তারপরও তিনি অবসরে সবজি বাগান করেন এবং সেই সবজি আত্মীয় স্বজনসহ নিজেদের মধ্যে বন্টন করেন। সত্যিই কাজটি প্রশংসনীয়।