প্রকাশ : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৪
সড়ক-মহাসড়ক ঘেঁষে সবজি চাষের উদ্যোগ নেবে কে?
দেশের সড়ক-মহাসড়কের দুধারে বেশিরভাগ পরিত্যক্ত জায়গা ভরে আছে অবৈধ দখলে বা আগাছায়। অন্যদিকে জনবসতি বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে কমছে দেশের কৃষি জমি। তাই দেশের এক ইঞ্চি জায়গাও যেন পরিত্যক্ত পড়ে না থাকে সেজন্যে সবজি চাষের উদ্যোগ নেয়া দরকার। কথা হলো, উদ্যোগটা নেবে কে ? অথচ ‘অব্যবহৃত জায়গায় সবজি ও ফলের চাষ, অর্থ-পুষ্টি বারোমাস’ শীর্ষক ইনোভেশন আইডিয়া বাস্তবায়নে কাজ করছে কৃষি বিভাগ।
এই উদ্ভাবনী আইডিয়ার দারুণ ফল মিলছে গাইবান্ধা-সাঘাটা আঞ্চলিক মহাসড়কের দুধারে। সড়কটির কয়েক কিলোমিটার এলাকায় অব্যবহৃত জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে সবজি বাগান। চাষ করা হয়েছে শিম, লাউ, করলা, বেগুন, মরিচসহ বিভিন্ন জাতের সবজি।
কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় স্থানীয়রা এ সবজি চাষ করে যেমন নিজেরা খেতে পারছেন, তেমনি বাজারে বেচে করতে পারছেন আয়ও। আগামীতে দেশের সবজি চাহিদা মেটাতে এই উদ্যোগ সারাদেশে বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানাচ্ছেন কৃষি বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
সূত্র জানায়, দেশে ৩ হাজার ৭৯০ কিলোমিটার জাতীয়, ৪ হাজার ২০৬ কিলোমিটার আঞ্চলিক, ১৩ হাজার ১২১ কিলোমিটার জেলা এবং ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৫৮৯ কিলোমিটার স্থানীয় সড়ক আছে। এই সড়কগুলোর দুধারে পরিত্যক্ত জায়গা ভরে থাকে আগাছায়। সেজন্যে এসব জায়গা চাষবাসের জন্যে কাজে লাগাতে হবে। কথা হলো, সেটা কাজে লাগাচ্ছে কি কৃষি বিভাগ? এমন চিত্র কৃষিকণ্ঠের চোখে পড়েনি।
চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে নিজ উদ্যোগে জগতপুর এলাকার সবজি চাষি শরিফ বলেন, ছোটবেলা থেকে দেখতাম বাপ- দাদারা কৃষির ওপর নির্ভরশীল ছিলেন। আমিও নিজ থেকেই মহাসড়কের পাশে বিভিন্ন রকমের সবজি চাষ করেছি। কিন্তু কৃষি বিভাগের সহযোগিতা ও পরামর্শ পাইনি।
একই গ্রামের চাষি কামরুজ্জামান বলেন, এ বছর শিম, লাউ, করলা, বেগুন, মরিচসহ হরেক রকমের সবজির চাষ করে নিজেদের পরিবারের চাহিদা মিটিয়েছি। বিক্রি করেছি বাজারেও। আগামীতে আরও মনোযোগ দিয়ে সবজি চাষ করবো।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, চাঁদপুর-এর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ আবু তাহের জানান, যখন যেই প্রকল্প আসে সেটা বাস্তবায়নে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। তবে যুগ এখন আধুনিক হয়েছে, আধুনিক প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে কৃষক বাড়তি আয় করতে পারেন। যারা বলেন, কৃষি অফিস সহযোগিতা করে না বা কৃষি অফিসার তাদের কাছে যায় না, সেটা ঢালাওভাবে বলা হয়। আমাদের সব ইউনিয়নে উপ-সহকারী কৃষি অফিসাররা কৃষককে পরামর্শ দেন এবং কৃষি বিষয়ক যে কোনে সেবা দিয়ে থাকেন। পরিত্যক্ত জায়গায়, বাড়ির আঙ্গিনায় বা ছাদে অথবা ঘরের পাশে সর্বত্রই সবজি বাগান করতে আমরা উদ্বুদ্ধ করে থাকি।