প্রকাশ : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৫
চাঁদপুরে পেঁয়াজ-রসুন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১০ হাজার মেট্রিক টন
চাঁদপুরে চলতি রবি মৌসুমে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে জেলার সব ক’টি উপজেলায় পেঁয়াজ-রসুনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১০ হাজার মেট্রিক টন এবং চাষাবাদ ১ হাজার ১শ' ৪০ হেক্টর জমি। তবে সবচেয়ে বেশি চাষাবাদ হচ্ছে হাইমচরের চরাঞ্চলে।
চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের খামারবাড়ি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এবার সব উপজেলায় পেঁয়াজ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ৬ হাজার ৭শ' ৫০ মে. টন এবং চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৭শ' ৫০ হেক্টর। এর মধ্যে রসুনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৩ হাজার ৩শ' ১৫ মে. টন এবং চাষাবাদ ৩শ' ৯০ হেক্টর।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি, চাঁদপুরের ২০২৪-২৫- এর বার্ষিক মৌসুমি রবি ফসলের আবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, চাঁদপুর সদরে পেঁয়াজ-রসুনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার ১শ' ৬৮ মে. টন এবং চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ২শ' ৪৫ হেক্টর। মতলব উত্তরে পেঁয়াজ-রসুনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ১ হাজার ২শ' ৮৩ মে. টন এবং চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ১শ' ৪৫ হেক্টর। মতলব দক্ষিণে পেঁয়াজ-রসুনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৪শ' ৯০ মে. টন এবং চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৪৫ হেক্টর। হাজীগঞ্জে পেঁয়াজ-রসুনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ৯শ' ৭৩ মে. টন এবং চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ১শ' ১০ হেক্টর। শাহরাস্তিতে পেঁয়াজ-রসুনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১শ' ১৫ মে. টন এবং চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ২৫ হেক্টর।
কচুয়ায় পেঁয়াজ-রসুনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১শ' ৭৫ মে. টন এবং চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ২০ হেক্টর।
ফরিদগঞ্জের পেঁয়াজ-রসুনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৬শ' ৫০ মে. টন এবং চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৮০ হেক্টর। হাইমচরে পেঁয়াজ-রসুনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৪ হাজার ৪শ' ৫ মে. টন এবং চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৪শ' ৬০ হেক্টর।
২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে ৪% রেয়াতি সুদে ডাল, তেল, মসলা ও ভুট্টা চাষাবাদে চাঁদপুরের ব্যাংকগুলো প্রায় ৯৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে এবং কৃষকদের ঋণ প্রদান কাজ চলমান রেখেছে ।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে চাঁদপুরে উৎপাদন বাড়াতে ৪০ হাজার ৯ শ' ১০ মে. টন সার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে কর্মরত কৃষি কর্মকর্তা জানিয়েছেন। এর মধ্যে ইউরিয়া সার ২৫ হাজার ৫শ' ৮৮ মে. টন, টিএসপি ৬ হাজার ৮ শ' ৬৪ মে. টন, ডিইপি ১০ হাজার ৭শ' ৭১ মে. টন এবং অন্যান্য ৭ হাজার ৪শ' ৯৭ মে. টন সার সরকারিভাবে চাঁদপুরের ৮ উপজেলায় বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। জেলা সার কমিটির অনুমতিতে ও সরকারিভাবে নিয়োগকৃত সার ডিলারদের মাধ্যমে জেলার সকল হাট-বাজারে সরবরাহ করা হচ্ছে বলে কৃষি অধিদপ্তরের ওই কর্মকর্তা জানান।
এদিকে চাঁদপুরের ৮ উপজেলায় চলতি ২০২৪-২৫ বছরের রবি মৌসুমে ২০ হাজার কৃষককে ২ কেজি করে বোরো ধানসহ অন্যান্য বীজ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। জেলার সব উপজেলার ১ শ' ৫ জন ডিলারের মাধ্যমে এসব বীজ স্ব স্ব উপজেলার হাট-বাজারে ইতোমধ্যেই পৌঁছানোর কার্যক্রম শুরু হয়েছে ।
জেলা উপ-সহকারী কর্মকর্তা মো. মোবারক হোসেন জানান , পেঁয়াজ-রসুন চাষাবাদে কৃষকগণ জমি প্রস্তুত করতে শুরু করেছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে এবং সময়মত চাষাবাদ করা হলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। উৎপাদিত পেঁয়াজ-রসুন বাজারে আসামাত্র বাজার নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। আমদানি নির্ভরশীলতা কমে আসবে।
হাইমচরের বাবুরচর, মধ্যচর, ঈশানবালা ও মাঝির বাজার, চাঁদপুর সদরের ফতেজঙ্গপুর, রাজরাজেশ্বর, জাহাজমারা, মতলব উত্তরের বোরোচর, চর ইলিয়াড, সবজি কান্দি প্রভৃতি এলাকার চরাঞ্চলের কৃষকগণ ব্যাপক হারে পেঁয়াজ-রসুনের চাষাবাদ করে থাকে। এছাড়াও চাঁদপুর জেলার নদীভাঙ্গন ও নদী তীরবর্তী ইউনিয়নগুলোতে নদীর তীরে পেঁয়াজ-রসুনের চাষাবাদ হয়ে থাকে।
এর মধ্যে হাইমচরের চরভৈরবী, চাঁদপুর সদরের ইব্রাহিমপুর, রাজরাজেশ্বর, বিষ্ণুপুর এবং মতলব দক্ষিণের সবজিকান্দি ও উত্তরের মোহনপুর, জহিরাবাদ ও একলাশপুর প্রভৃতি ইউনিয়নের নদীর তীরে ও একটু ভেতরে ব্যাপক হারে পেঁয়াজ-রসুন নিজ উদ্যোগেই কৃষকগণ চাষাবাদ করতে দেখা গেছে।