বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৪ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস আজ
  •   চাঁদপুর সদরের শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের মান্দারি লোহাগড় গ্রামে দুটি পুকুরে বিষ দিয়ে ১৫ লাখ টাকার মাছ নিধন
  •   গৃহবধূ আসমার খুনিদের বিচারের দাবিতে ফরিদগঞ্জে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন
  •   কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অভিযোগ
  •   হাজীগঞ্জের সন্তান অতিরিক্ত ডিআইজি জোবায়েদুর রহমানের ইন্তেকাল

প্রকাশ : ২০ ডিসেম্বর ২০২২, ০০:০০

নূতন জায়গায় দ্বিতীয় বছরে

আশাব্যঞ্জক জমজমাট বিজয় মেলা

আশাব্যঞ্জক জমজমাট বিজয় মেলা
চাঁদপুর কণ্ঠ রিপোর্ট ॥

মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে সঞ্চারের মহৎ উদ্দেশ্যে ১৯৯২ সালের ৮ ডিসেম্বর চাঁদপুর মুক্ত দিবসে চাঁদপুরে যে বিজয় মেলা শুরু হয়েছিলো, বর্তমানে সে মেলা আয়োজনের ধারাবাহিকতায় এখন তিন দশক অতিক্রান্ত একটি সফল মেলা হিসেবে স্বীকৃত। এবার চাঁদপুর আউটার স্টেডিয়ামে এই মেলার ৩১ তম পর্ব অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

এই মেলার যাত্রা শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত হাসান আলী হাই স্কুল মাঠে। চতুর্মুখী যোগাযোগসমৃদ্ধ এ মাঠটি চাঁদপুর শহরের প্রধান সড়ক বলে বিবেচিত শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সড়ক এবং মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার লেঃ কর্নেল (অবঃ) আবু ওসমান চৌধুরী সড়কের মিলনস্থলে অবস্থিত। এ মাঠটির সম্মুখেই রেলওয়ে লেকে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ‘অঙ্গীকার’। ১৯৯২ সালের ৮ ডিসেম্বর এই ‘অঙ্গীকার’ বেদীতে ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে চাঁদপুরে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা উদ্বোধন করেন শহীদ জননী জাহানারা ইমাম। এই মেলা প্রথম দিকে ৯ দিনের ব্যাপ্তিতে সমাপ্ত হলেও ১৯৯৪ সাল থেকে মাসব্যাপী উদযাপিত হয়ে আসছে। মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিচারণ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক যাবতীয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা (সংগীত, নৃত্য, নাটক, আবৃত্তি, বিতর্ক ইত্যাদি), আলোচনা সভা, সেমিনার, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, মুক্তিযুদ্ধের আলোকচিত্র প্রদর্শনী, নানা পণ্যের পসরায় সাজানো স্টল, রকমারী খাবার স্টল, শিশুদের জন্যে বিভিন্ন রাইড সহ অন্যান্য আয়োজনে সম্পন্ন হয়ে আসছে এই মেলা। সর্বস্তরের মানুষের আন্তরিক অংশগ্রহণে এই মেলাটি হয়ে গেছে সার্বজনীন। বিজয় দিবস সহ ছুটির দিনগুলোতে এই মেলায় নামে মানুষের ঢল।

বিজয় মেলায় মানুষের এই ব্যাপক অংশগ্রহণের কারণে প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে রাত সাড়ে ১০টা-১১টা পর্যন্ত শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টির কারণে জনভোগান্তির প্রশ্নে হাসান আলী হাই স্কুল মাঠ থেকে এই মেলাটি অন্যত্র স্থানান্তরের প্রশ্ন উঠে গত ক’বছর যাবৎ। আয়োজকদের কপালে ভাঁজ পড়ে নূতন জায়গায় বিজয় মেলা স্থানান্তরিত হলে জমবে কিনা সে চিন্তায়। অবশেষে উক্ত মাঠে ২৯টি পর্ব সম্পন্ন করে ৩০ তম পর্ব আয়োজনের জন্যে ২০২১ সালে এই মেলাকে নিয়ে যাওয়া হয় চাঁদপুর আউটার স্টেডিয়ামে। এই ২০২১ সাল ছিলো বাংলাদশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং এই মেলার তিন দশক পূর্তির বছর। সুন্দর দুটি উপলক্ষে বিজয় মেলা আউটার স্টেডিয়ামের বিরাট পরিসরে স্থানান্তরিত হওয়ার পর সুন্দরভাবেই জমে উঠে। আয়োজক ও পর্যবেক্ষকদের মতে, এই জমে উঠাটা আশাব্যঞ্জক।

বিজয় মেলার মহাসচিব হারুন আল রশীদ জানান, ২০২১ সালে কাউন্টিং সিসি ক্যামেরায় বিজয় দিবসের সন্ধ্যায় বিজয় মেলায় অর্ধ লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটার বিষয়টি লক্ষ্য করা যায়। আর গড়ে প্রতিদিন ১৫-২০ হাজার লোকের সমাগম হয়। এক বছর পর চলতি ২০২২ সালের মেলায় বিজয় দিবসের সন্ধ্যায় এই লোকসংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ৬৫ হাজার। আর অন্যান্য দিন গড় উপস্থিতি হচ্ছে ২০-২২ হাজার। চাঁদপুরের বর্তমান জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান বিজয় মেলায় এতো লোক সমাগমে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং মেলার চেয়ারম্যান যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা, চাঁদপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার এম.এ.ওয়াদুদ মেলার সাথে সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তা ও মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

হাসান আলী হাই স্কুল মাঠে বিজয় মেলা থাকাকালীন স্টলগুলো ছিলো ৭ ফুটদ্ধ৭ফুট আকারের, আর আউটার স্টেডিয়ামের বৃহৎ পরিসরে এই স্টলগুলো হয়ে গেছে ১০ ফুটদ্ধ১২ ফুট আকারের। যার ফলে মেলায় আগত লোকজন অনুষ্ঠান উপভোগসহ ঘোরাফেরা ও কেনাকাটায় পূর্বের চেয়ে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন। বস্তুত সে কারণে নূতন জায়গায় বিজয় মেলা জমে ওঠার ব্যাপারে যতোটুকু আশা করা হয়েছিলো, তারচে’ বেশি জমে উঠেছে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়