আল্লাহর আইন ব্যতীত শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় -------------বিল্লাল হোসেন মিয়াজী

১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর থেকে ফরিদগঞ্জ উপজেলার গোবিন্দপুর উত্তর ইউনিয়নটি আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে চিহ্নিত। এখানে জামায়াতে ইসলামী তো দূরের কথা, বিএনপিও বিজয়ী হতে পারেনি কোনো নির্বাচনে। কিন্তু আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর এই প্রথমবারের মতো গোবিন্দপুর উত্তর ইউনিয়নে প্রকাশ্যে জামায়াতে ইসলামী বড়ো ধরনের কর্মী সমাবেশ করে নিজেদের শক্তি ও সামর্থ্যের প্রমাণ দিলো।

২১ অক্টোবর সোমবার বিকেলে ধানুয়া বাজারে ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি শরীফ মোঃ আব্দুল কুদ্দুস মিয়ার সভাপতিত্বে কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও চাঁদপুর-৪ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী বিল্লাল হোসেন মিয়াজী।

এ সময় তিনি বলেন, আগস্ট গণবিপ্লবের মধ্য দিয়ে নতুন করে দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার পথ সূচিত হয়েছে। একটি গণতান্ত্রিক দেশের দাবি হলো, সকলে কথা বলার সুযোগ পাবে। বিগত বছরগুলোতে আমরা এ সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছি। আমাদের জনশক্তিরা চাকুরি করতে পারেনি। সন্তানের, স্ত্রীর, আত্মীয়-স্বজনের হক আদায় করতে পারেনি। দিনের ভোট রাতে করে ক্ষমতায় চেপে বসা শক্তির দুঃশাসনে আমাদের নেতা-কর্মীরা দুঃসহ জীবনযাপন করেছে। এখনো কোর্টের বারান্দায় আমাদের জনশক্তিকে হাজিরা দিতে হয়। স্বাধীনতার পর বহুবার ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে, কিন্তু ব্যক্তিরা প্রায় একই রয়ে গিয়েছিলো। তাই স্বাধীনতার স্বাদ জনগণ পায়নি। আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠা ব্যতীত শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। দেশে একটি ইসলামী রাষ্ট্র কায়েমের প্রত্যয়ে আসুন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করি। ঘরে ঘরে এ দাওয়াত আমরা পৌঁছে দিতে হবে।

ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি শরীফ মোঃ আব্দুল কুদ্দুস মিয়ার সভাপতিত্বে এবং ইউনিয়ন ছাত্র শিবিরের সভাপতি মনিরুল ইসলাম রাজুর সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী অ্যাডভোকেট মোঃ শাহজাহান মিয়া বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে এদেশের দেশপ্রেমিক নাগরিকেরা ঘরে ঘুমাতে পারেনি। তাদের ঘর-বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। শহিদের নজরানা পেশ করতে হয়েছে। সারাদেশে জামায়াতের অফিসগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছিলো। মেগা প্রকল্পে মেগা দুর্নীতির মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছে। আওয়ামী দুঃশাসন দেশকে কারাগারে পরিণত করেছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলি চালিয়ে যে সকল ছাত্র-জনতাকে হত্যা করা হয়েছে, জনপ্রত্যাশা অনুযায়ী গণআদালতে এর বিচার করতে হবে। দেশের সকল ক্ষেত্রে ন্যায়-ইনসাফ কায়েমের স্বার্থে জামায়াতে ইসলামীকে ক্ষমতায় আনতে হবে। জামায়াতে ইসলামী দেশে কোরআনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায়। কোরআনের শাসন প্রতিষ্ঠা হলে দলমত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।

ইউনিয়ন ছাত্র শিবিরের সভাপতি মনিরুল ইসলাম রাজুর সঞ্চালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন ফরিদগঞ্জ উপজেলার ভারপ্রাপ্ত আমির মোঃ আবুল হোসাইন, সাবেক আমির মোঃ ইউনুছ হেলাল, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোঃ কফিলউদ্দিন, উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ জয়নাল আবেদিন, পৌরসভা জামায়াতের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাখাওয়াত হোসেন, ইউনিয়ন জামায়াতের সহ-সভাপতি মোঃ মোফাজ্জল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ রোকন উদ্দীন তালুকদার, ফরিদগঞ্জ শহর শিবির সেক্রেটারী রবিউল আযম প্রমুখ।