মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৫ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার
  •   দৈনিক ইনকিলাবের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ্ মিজির দাফন সম্পন্ন
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা

প্রকাশ : ১১ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০

চাঁদপুর হোক চোরাচালানমুক্ত

চাঁদপুর হোক চোরাচালানমুক্ত
অনলাইন ডেস্ক

সত্তর, আশি ও নব্বইর দশকে চাঁদপুর নামটি উচ্চারিত হলে অনেকে ইলিশের খ্যাতির চেয়ে চাঁদপুরের চোরাচালানের কুখ্যাতিকে প্রাধান্য দিতো। সূর্যের আলো নিভে যাবার পর সূর্যোদয় পর্যন্ত সারারাত চাঁদপুর এলাকার পদ্মা-মেঘনায় ওপেন সিক্রেটভাবে চোরাচালানি চলতো। স্থানীয় ভাষায় চোরাচালানে জড়িত লোকজনকে ‘তেল কাটা/মাল কাটা’ হিসেবে আড়ালে আবডালে ডাকতো। কতো শ্রমিক, নিম্ন শ্রেণীর লোককে যে চোরাকারবারিরা বাড়তি অর্থের বিনিময়ে ব্যবহার করে নিজেরা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে, তার হিসেব মিলানো কঠিন। নির্বাচন আসলে এরা প্রার্থী হবার ব্যাপারে থাকতো এগিয়ে এবং হাত খুলে খরচ করে জিতেও যেতো। এরা চোরাকারবারি হয়েও অনুষ্ঠান-মঞ্চে পেতো ভালো চেয়ার এবং ব্যবহার করতো সরকারি গাড়িও। চাঁদপুর শহরে চোরাচালানির টাকায় কেউ কেউ সুদৃশ্য বাড়ি, গাড়ি করেছে এবং পুঁজি বিনিয়োগে ভালো ব্যবসায়ী সেজেছে।

চাঁদপুরে চোরাচালানির ‘স্বর্ণ যুগে’ ছিলো না স্বতন্ত্র নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ড। জেলা পুলিশ লঞ্চ টার্মিনালসহ নদী তীরবর্তী সুবিধাজনক স্থানে বিদ্যমান ফাঁড়িতে সিনিয়র এসআইকে ইনচার্জ নিয়োগ দিয়ে সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স দ্বারা নদীতে চোরাচালান, দস্যুতা সহ নানা অপরাধ নিয়ন্ত্রণের প্রয়াস চালাতো। এই ফাঁড়িগুলোতে বদলি হবার জন্যে কিছু এসআই মন্ত্রী-এমপি সহ শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের দিয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন মহলে তদবির করতো এবং তদবিরে তকদির ফেরানোর জন্যে চোরাকারবারিদের সাথে একাত্ম হয়ে যেতো। ফাঁড়িতে গিয়ে ভদ্রলোকরা বসার জায়গা না পেলেও চোরাকারবারিরা পেতো বিশেষ সম্মান। এমন দুর্নীতিবাজ এসআইরা পুলিশের ইন্সপেক্টর হবার আগেই বাড়ি-গাড়ির মালিক হয়েছেন এবং পুলিশ সুপার সহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তার অনুরাগভাজন হয়েছেন।

চাঁদপুরে কোস্ট গার্ড ও নৌ পুলিশের পৃথক কার্যক্রম ও তৎপরতা শুরু হবার পর চোরাচালানের জন্যে চাঁদপুরের কুখ্যাতি বলা যায় ৯০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। কিন্তু সোমবার চাঁদপুর কণ্ঠের শেষ পৃষ্ঠায় ‘মেঘনায় চোরাচালান : জাহাজ থেকে পাচার হওয়া ১১৬ বস্তা গম জব্দ করেছে কোস্টগার্ড’ শীর্ষক সংবাদটি পড়ে অনেকে উদ্বিগ্ন হয়েছে। এই উদ্বেগ দূরীকরণে কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশের তৎপরতা আরো জোরদারের দাবি উত্থাপিত হয়েছে। এ দাবি পূরণে উক্ত দুটি বাহিনী সর্বাত্মক সাড়া দেবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

বিংশ্ব শতাব্দীতে চাঁদপুরে চোরাচালানের বদনাম একবিংশ শতাব্দীতে এসে ক্রমশ মুছেছে। আমরা গর্বের সাথে দাবি করি, চাঁদপুর এখন স্মাগলিং জোন বা চোরাচালানের মোক্ষম জায়গা নয়, এটি হচ্ছে ইলিশের বাড়ি, যেখানে নৌপর্যটনসহ অন্যান্য পর্যটনের অপার সম্ভাবনা গড়ে উঠেছে। এ সম্ভাবনাকে আমাদের কাজে লাগাতেই হবে। সেজন্যে চাঁদপুরকে চোরাচালানমুক্ত হতেই হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়