রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৫ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ১৭ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

মুজিব এক অস্তবিহীন রবি

অনলাইন ডেস্ক
মুজিব এক অস্তবিহীন রবি

পৃথিবী কোলভরা মানুষের ধরণী হলেও কেবল হাতেগোণা কিছু মানুষের কর্মের দ্যুতিতেই সে আজও দীপ্তিমান। সেই বিরল ধরণী-ধন্যা মানুষের একজন হলেন ব্রিটিশ-ভারতের অন্তর্গত গোপালগঞ্জ মহকুমার পাটগাতী ইউনিয়নভুক্ত টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্ম নেওয়া বাঙালি জাতির মহান পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। উনিশশো কুড়ি সালের সতের মার্চে জনক শেখ লুৎফর রহমান ও জননী সায়েরা খাতুনের ঘর আলো করে বুধবার জন্ম নেন শোষিতের ত্রাতা, বাঙালির স্বাধীনতার মহান স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমান। তিন বোনের পরে জন্ম নেওয়া আদরের এই বাঙালি দুলাল খোকা হয়েই সবার নয়নমণি হয়ে উঠেন। রুগ্নতা সত্ত্বেও তাঁর কাটানো বালকবেলাই ছিলো আদর্শ শৈশব। খেলাধুলা, সাঁতারকাটা, বন্ধুদের সাথে দলবেঁধে চলা, দুঃখীদের প্রতি সহমর্মিতা প্রদর্শন, শিক্ষকের প্রতি অনুসরণীয় শ্রদ্ধা পোষণ করার মধ্য দিয়েই বিনির্মিত হয় তাঁর অনুপম চারিত্রিক সৌকর্য। ছেলেবেলা হতেই নেতৃত্ব দানের সহজাত সক্ষমতা এবং সাহস তাঁকে আলাদা করে চিনিয়ে দিয়েছে হাজারের মধ্যে এক ও অনন্য রূপে। একদিকে কোমল মানবিকতা আর অন্যদিকে শোষণ ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে অনমনীয় প্রতিবাদ তাকে খোকা থেকে বঙ্গবন্ধু হওয়ার পথে এগিয়ে দিয়েছে ধীরে ধীরে।

বঙ্গবন্ধুকে গড়ে তুলতে গুরু সদয় দত্তের ব্রতচারী নৃত্যের যেমন ভূমিকা ছিলো, তেমনি ভূমিকা ছিলো তাঁর গ্রন্থপাঠের পবিত্র অভ্যাসেরও। মানুষকে ভালোবেসে তিনি যেভাবে জীবনের তের বছর কারাগারে কাটিয়েছেন, বাঙালিকে মুক্তির দিশা দিতে তিনি যেভাবে রাজপথকে ঘর আর ঘরকে পর করেছেন তা নিয়তি নির্ধারিত। ঐশ্বরিক অনুগ্রহ না থাকলে এরকম নেতৃত্ব অর্জন করা অসম্ভব। একজন বঙ্গবন্ধু ছিলন বলেই আমরা যেমন রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে সাফল্য পেয়েছি, তেমনি আমরা সফল করতে পেরেছি আমাদের ছয় দফা তথা বাঁচার দাবিকেও। তাঁর কারণে আজ যেমন টুঙ্গিপাড়া হয়েছে বিশ্বগ্রাম, তেমনি তাঁর কারণেই একটি নিজস্ব জাতীয় সংগীত আর লাল-সবুজের পতাকা পেয়েছি।

একজন বঙ্গবন্ধু মানেই শোষিতের হাসিভরা মুখ, মুক্ত বাঙালির স্ফীত বুক আর সোঁদা মাটির উজাড় করা ঘ্রাণ। একজন মুজিব নেই বলেই আজও ভুগছে ফিলিস্তিন, ধুঁকছে আরাকান আর কাঁদছে ক্যাটালানরা।

সাত মার্চের মহাভাষণ আজ আর কেবল মুজিবের ভাষণে আটকে নেই, তার পরিচয় আজ পৃথিবীর গৌরবরূপে। আজ স্বয়ং পৃথিবী এসেছে এগিয়ে, মুজিবের কণ্ঠকে বাঁচিয়ে রাখতে আগামীর সবুজ গ্রহের কাছে। মুজিব আমাদের দেখিয়েছে স্বপ্ন আর দিয়ে গেছে আত্মমর্যাদা। ফিদেল ক্যাস্ট্রো আজ হিমালয়কে উপমায় এনে মুজিবকে স্থাপন করেছেন অনন্য উচ্চতায়। লাল-সবুজের স্যাটেলাইট হয়ে আজ মুজিব উঠে গেছেন গ্রহান্তরে। রাজনীতির কবিখ্যাতি দিয়ে নিউইয়র্কের নিউজউইক মেনে নিয়েছে এবং বিশ্বকে জানিয়ে দিয়েছে, মুজিব অবিসংবাদিত, মুজিব অবিস্মরণীয়।

অগ্নিঝরা মার্চে মুজিব জন্মেছিলেন বলেই পৃথিবী পেয়েছে শান্তির অমৃতবারি, পেয়েছে বৈরিতা নয় বন্ধুতার আন্তর্জাতিক আহ্বান। মুজিব এক চিরন্তন শিশু, মুজিব এক আবহমান কিশোর। মুজিব মূর্ত হয়ে আছেন খেলার মাঠে, ফসল কাটার শুভ যাত্রায় দক্ষিণবঙ্গের দাওয়ালদের সাহচর্যে। মুজিবের কীর্তি যেমন নদীমাতৃক বাংলার স্রোতস্বিনীতে বহমান তেমনি মুজিবের জ্যোতির্ময় প্রজ্ঞা চির অনির্বাণ। মুজিব এক অন্তহীন পথচলা, মুজিব এক অস্তবিহীন রবি। মুজিব স্বাধীনতার অক্ষয় ও অনন্য স্বপ্নসত্তা।

 

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়