শুক্রবার, ২৮ মার্চ, ২০২৫  |   ৩৫ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৪

মশা ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে নাগরিক সচেতনতা বেশি দরকার

অনলাইন ডেস্ক
মশা ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে নাগরিক সচেতনতা বেশি দরকার

  'মশার  উপদ্রবে চঁাদপুর  পৌরবাসী \ বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী' শিরোনামে গতকাল চঁাদপুর কণ্ঠে জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মিজানুর রহমান লিখেছেন, চঁাদপুর শহরে মশার উপদ্রবের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। মশার কামড়ে মানুষের যন্ত্রণার যেন শেষ নেই।  মশা নিধনের কার্যকর তেমন কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, বিভিন্ন ওয়ার্ডে তারা মশা নিধনের ওষুধ ছিটাচ্ছে এবং ড্রেন, ডাস্টবিনের ময়লা- আবর্জনা পরিষ্কার রাখছে। ভুক্তভোগী পৌরবাসী বলছে, আমাদের জনজীবন মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ। কয়েল, অ্যারোসল, বৈদ্যুতিক ব্যাট কিছুতেই মশাকে বশ করা যাচ্ছে না। দরজা-জানালা খুললেই ঝঁাকে ঝঁাকে মশা  ঢুকে পড়ে ঘরে। মশার উপদ্রবে রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি, দোকানপাট, হাসপাতাল, ধর্মীয় উপাসনালয়সহ কর্মস্থলে অবস্থান করা দুরূহ হয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়ত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাওয়ায় আতঙ্কে রয়েছে শহরবাসী। এমনিতেই ড্রেন- রাস্তাঘাটের দুরবস্থায় ক্ষোভ বিরাজ করছে পৌর কর্তৃপক্ষের প্রতি। তার ওপর মশার উপদ্রব। বর্তমান সময়গুলোতে পৌরবাসীর ভোগান্তির এবং কষ্টের শেষ নেই।

                এদিকে চঁাদপুর শহরে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছেই। বিশেষ করে পুরাণবাজার মোম ফ্যাক্টরি রিফিউজি কলোনি, মধ্য শ্রীরামদী, পুরাণবাজার এলাকার দুধহাটায় ঘরে ঘরে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বহু মানুষ  ভুগছে। এই ডেঙ্গু জ্বর থেকে বাদ যায়নি বাজারের দোকান শ্রমিক কর্মচারীরাও। এমন অবস্থা আর কখনও দেখা যায়নি। আড়াই শ' শয্যার চঁাদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক একেএম মাহাবুবুর রহমান জানান, এবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত অনেক রোগী হাসপাতালে এসেছে। তাদের আমরা যথাযথ চিকিৎসা দিয়েছি এবং দিচ্ছি। তিনি বলেন, এ বছর প্রায় পঁাচ শতাধিক ডেঙ্গু রোগী আমরা দেখেছি। আজকে ( বুধবার)  সাতজন ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। তবে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত কোনো রোগী চঁাদপুরে মারা যায়নি। পৌরবাসী বলছে, শহরের বিভিন্ন আবাসিক, ব্যবসায়িক ও ঘনবসতিপূর্ণ  এলাকায় যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। ঝোপঝাড়, জঙ্গল, ড্রেন নালাগুলো নিয়মিত পরিষ্কার না করায় মশার উপদ্রব বেড়েই চলেছে। পৌরসভার খাল, নালা, স্ল্যাববিহীন ড্রেন, খোলা ডাস্টবিনে, ময়লা-আবর্জনার কারণে জমে থাকা পানি থেকে জন্ম নিচ্ছে মশা। মশার আক্রমণ থেকে বঁাচতে দুপুর থেকেই কয়েল জ্বালানো অথবা মশা নিধনের ওষুধ স্প্রে করতে হচ্ছে। আগে পৌরসভার উদ্যোগে বিভিন্ন এলাকায় মশা নিধনের ওষুধ স্প্রে করা হলেও এবার তেমন একটা করতে দেখা যায়নি। পৌর কর্তৃপক্ষের খেয়াল খুশিমতো মশা নিধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। নিয়মিত ওষুধ ছিটানো হয় না। বুধবার পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পৌরসভার রাস্তার পাশে বাজারের বিভিন্ন স্থান, ঘনবসতির পাড়া- মহল্লাগুলোতে আবাসিক এলাকায় যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলে রাখা হয়েছে। অনেক এলাকার ঝোপঝাড়, জঙ্গল, ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার না করায় মশার উপদ্রব বাড়ছে। ড্রেনগুলোতে পানি প্রবাহ না থাকায় ময়লা-আবর্জনা জমে আছে। অনেক এলাকার ড্রেন লাইনের ঢাকনা নেই।

                মশা নিধনে শহরাঞ্চলে সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার জোরালো  ভূমিকার বিকল্প নেই। কিন্তু বসতবাড়ির আশেপাশের ঝোপঝাড় জঙ্গল পরিষ্কারে নাগরিক সচেতনতাই বেশি দরকার। আর ডেঙ্গু জ্বরের জীবাণুবাহী এডিস মশার জন্ম ও বিস্তার রোধে তো প্রতিটি নাগরিককে হতে হবে তীক্ষ্ণ সচেতন। কেননা এডিস মশার জন্ম তো ঝোপঝাড়-জঙ্গল, নালা-নর্দমায় হয় না, এর জন্ম ঘরে এবং ঘরের মানুষকে কামড়িয়েই তবে ডেঙ্গুর বিস্তার ঘটায়। এ কথাটি অধিকাংশ নাগরিকই জানে। কিন্তু এই জানাটাকে আরো ভালো করে জানান দিতে সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষে প্রচারণা চালানোর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এই প্রয়োজনীয়তা তারা উপলব্ধি না করলে সেটা অবশ্যই দোষের। এই দোষ সারাতে গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রকাশই যথেষ্ট নয়। মাইকিং, লিফলেট বিতরণের উদ্যোগও নিতে হবে।

                বলা দরকার, এডিস  মশা নিয়ন্ত্রণ বা নির্মূলই হচ্ছে ডেঙ্গু প্রতিরোধের প্রধান উপায়। বাসা-বাড়ির ভেতর, বাহির, ছাদ এবং আনাচেকানাচে পড়ে থাকা অপ্রয়োজনীয় পাত্র সমূহে ( যেমন : গাড়ির অব্যবহৃত টায়ার, নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত চৌবাচ্চা, পরিত্যক্ত টিনের কৌটা, প্লাস্টিকের বোতল, ক্যান,  গাছের কোটর, পরিত্যক্ত হঁাড়ি, ডাবের খোসা ইত্যাদি),  ব্যবহারযোগ্য পাত্র সমূহে ( যেমন : বালতি, ড্রাম, ফুল ও গাছের টব, ফ্রিজ ও এয়ার কন্ডিশনারের নিচের পানিভর্তি পাত্রে) একনাগাড়ে পঁাচ দিনের বেশি পানি জমে থাকলেই এডিস মশার জন্ম হয়, আর সে মশার কামড়ে হয় ডেঙ্গু। তাই এই পানি জমতে না দেওয়াতেই এডিস মশার জন্মরোধ ও বিস্তার রোধ হয়। এটি রোধে নাগরিক সচেতনতাই মুখ্য। এই সচেতনতা  জাগাতে   সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নিতে পারে উপরোল্লিখিত  উদ্যোগ।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়