রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৪ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৪:৩৮

মশা মারতে কামান দাগানোর মতো অবস্থা’ নয়, তবুও

অনলাইন ডেস্ক
মশা মারতে কামান দাগানোর মতো অবস্থা’ নয়, তবুও

২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চঁাদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে রোগীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে অর্থ আদায় করার অভিযোগে মো. মাসুদ (২৮) ও জুম্মন (৪০) নামে দালাল চক্রের দুই সদস্যকে আটক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল ২০২৫) দুপুরে হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে যৌথ বাহিনী। অভিযানে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) চঁাদপুর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। অভিযানের তথ্য নিশ্চিত করেন চঁাদপুর সদর আর্মি ক্যাম্পের অপারেশনাল অফিসার লেফটেন্যান্ট জাবিদ হাসান। তিনি বলেন, দুপুরে স্থানীয় গোপন তথ্যের ভিত্তিতে চঁাদপুর সদর আর্মি ক্যাম্প ও সদর মডেল থানা পুলিশের সমন্বয়ে তালিকাভুক্ত দালাল চক্রের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে চঁাদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে রোগীদের কাছ থেকে অবৈধ অর্থ আদায়ের সময় দালাল চক্রের সদস্য মাসুদ ও জুম্মনকে আটক করা হয়। আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় দুটি মোবাইল। পরবর্তী আইনি ব্যবস্থাগ্রহণ করার জন্যে উদ্ধারকৃত মোবাইল ও আটক ব্যক্তিদের চঁাদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।

           চঁাদপুরের সবচে’ বড়ো সরকারি এই হাসপাতালটিতে দালালদের উপদ্রব দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। এর পেছনে হাসপাতালের কিছু অর্থলিপ্সু ডাক্তার ও কর্মচারীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ের কথা শোনা যায়। এছাড়া হাসপাতালের সম্মুখে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমোদিত ও অননুমোদিত কিছু প্যাথলজি ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নিয়োজিত লোকজনের শক্তিশালী দালালিপনা তো রয়েছেই। এদের নিয়ন্ত্রণে হাসপাতাল প্রশাসন সার্বক্ষণিক পুলিশের সহযোগিতা চেয়ে আসছিলো এবং পুলিশ বঙ্ও নির্মাণ করে দিয়েছিলো। কিন্তু জেলা পুলিশ প্রয়োজনীয় ফোর্স দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। এমতাবস্থায় হাসপাতালে কর্তৃপক্ষ তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট লেখালেখি করে আনসারের অনুমোদন নিয়ে আসে। সেমতে সার্বক্ষণিক আনসার থাকছে। কিন্তু হাসপাতালের সম্মুখভাগের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে গিয়ে সকাল ৮টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত আউটডোর সার্ভিস চলাকালীন দালালসহ অন্য কিছুর উপদ্রব দমনে স্বল্পসংখ্যক আনসাররা তেমন ভূমিকা রাখতে পারে না। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কিছু সদস্য হাসপাতালে দালাল দমনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। এতে তারা দালাল দ্বারা আক্রান্ত হয়ে আহত হয়। তারপরও তারা দালালবিরোধী তৎপরতা অব্যাহত রাখে। কিন্তু আড়ালে আবডালে চলে কিছু দালালের কর্মকাণ্ড। যাদেরকে শনাক্ত করতে এনএসআইর সহযোগিতায় হাসপাতালে চালাতে হয় যৌথ বাহিনীর অভিযান। এই অভিযানে বৃহস্পতিবার আটক হয় দু দালাল। কেউ কেউ বলছে, অবস্থা এমন যেনো মশা মারতে কামান দাগানোর মতো অবস্থা। আমরা অবশ্য তাতে দ্বিমত পোষণ করছি। কেননা চঁাদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের দালাল-সমস্যা ছোট সমস্যা নয়, এটা অনেক বড়ো সমস্যা। এখানে এনএসআই, ডিবিসহ সাদা পোশাকে সরকারি বিভিন্ন সংস্থার গোপন পর্যবেক্ষণ এবং সেমতে পোশাকী বাহিনীর পাকড়াও অভিযান অব্যাহত রাখা আবশ্যক। এতে হাসপাতালটিতে দালালদের অপতৎপরতা টেকসইভাবে বন্ধ হবার সম্ভাবনা তৈরি হবে। তবে পুরোপুরি বন্ধে কিছু ডাক্তারসহ হাসপাতালের দালালবান্ধব কতিপয় কর্মচারীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তাদেরকে শনাক্ত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার এবং সৎ ডাক্তার ও কর্মচারীদের সহযোগিতা নিতে পারে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়