প্রকাশ : ০৫ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
মৎস্য অধিদপ্তর ও কোস্ট গার্ডের অনেক বড়ো সাফল্য
মৎস্য অধিদপ্তর, কোস্ট গার্ড ও নৌপুলিশের প্রতি চাঁদপুরবাসীর প্রত্যাশা অনেক। এই প্রত্যাশা পূরণে এই সংস্থাগুলো প্রায়শই প্রয়াস চালায়, তবে মাঝে মধ্যে অনিবার্য সীমাবদ্ধতা সহ নানা কারণে কম-বেশি নিষ্ক্রিয়তা দেখায়। নদীতে কাজ করতে গিয়ে এরা কোনো অবস্থাতেই ঝুঁকিমুক্ত থাকে না। অনেক সময় জীবনের ওপর বড়ো ধরনের ঝুঁকি নিয়ে এরা কাজ করে এবং সাফল্যও খুঁজে পায়। এমন একটি সাফল্য হচ্ছে 'ক্ষতিকর জেলি মেশানো ৩৬ লাখ টাকার ৯০ মণ চিংড়ি জব্দ’।
এ ব্যাপারে সিনিয়র সাংবাদিক মিজানুর রহমান চাঁদপুর কণ্ঠে লিখেছেন, ক্ষতিকর জেলি মেশানো ৯০ মণ চিংড়ি জব্দ করেছে চাঁদপুর সদর উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর ও কোস্টগার্ড। ৩ মার্চ রোববার রাত সাড়ে তিনটার সময় অভিযান পরিচালনা করে চাঁদপুর হরিণা ফেরিঘাটে খুলনা হতে চট্টগ্রামগামী বাস থেকে ৩ হাজার ৬শ’ কেজি (৯০ মণ) জেলিযুক্ত চিংড়ি জব্দ করা হয়। এ তথ্য নিশ্চিত করেন চাঁদপুর সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ তানজিমুল ইসলাম। তিনি বলেন, শনিবার দিবাগত গভীর রাতে অভিযান পরিচালনা করে হরিণা ফেরিঘাট এলাকায় একটি পরিবহনের বাস হতে জেলিযুক্ত চিংড়ি মাছগুলো জব্দ করা হয়। পরবর্তীতে এসব চিংড়ি কোস্টগার্ড চাঁদপুর স্টেশনে এনে মাটিতে পুঁতে বিনষ্ট করা হয়। তবে চিংড়ির মালিক দাবি করা কাউকে না পাওয়ায় আটক করা সম্ভব হয়নি। এদিকে কোস্টগার্ড দপ্তর থেকে জানানো হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চাঁদপুর সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার উপস্থিতিতে স্টেশন কমান্ডার চাঁদপুর লেঃ কমান্ডার কাজী আকিব আরাফাত (এক্স), বিএনএ’র নেতৃত্বে হরিণা ফেরিঘাট সংলগ্ন এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে উপরোল্লিখিত পরিমাণ চিংড়ি জব্দ করা হয়। আমাদের দৃষ্টিতে যা সাম্প্রতিক সময়ের অভিযানগুলোতে অর্জিত সাফল্যের মধ্যে অনেক বড়োই বটে। জব্দকৃত এই চিংড়িগুলোর আনুমানিক বাজার মূল্য ৩৬ লক্ষ টাকা।
যারা খুলনা থেকে চট্টগ্রামে এতো বড়ো চিংড়ির চালান অবৈধভাবে পাচারের ঝুঁকি নিয়েছে, তারা ভেবেছে, বর্তমানে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় জাটকা রক্ষায় চলমান অভয়াশ্রম নিয়ে মৎস্য অধিদপ্তর, কোস্ট গার্ড ও নৌপুলিশসহ স্থানীয় প্রশাসন খুব ব্যস্ত। কাজেই বিষাক্ত জেলিযুক্ত চিংড়ি পাচারের এটাই মোক্ষম সময়। কিন্তু না, তাদের ভাবনার বিপরীতে মৎস্য অধিদপ্তর ও কোস্ট গার্ড চিংড়ির অবৈধ চালান জব্দের যে সাফল্য দেখিয়েছে, সেটা নিঃসন্দেহে পুরস্কার প্রাপ্তিযোগ্য। আমরা এটা ভেবে বিস্মিত হই যে, ৪৫ থেকে ৫০ জন যাত্রী পরিবহনযোগ্য বাসে যাত্রীদের ওজনের চেয়ে বেশি চিংড়ি (৯০ মণ) পরিবহন করা হয়েছে কতোটা ঝুঁকি নিয়ে! চিংড়ির মালিক হিসেবে কাউকে খুঁজে না পাওয়ায় গ্রেফতার হয় নি কেউ, কিন্তু যাত্রীবাহী বাসে অতিরিক্ত মাল পরিবহনের দায় থেকে কি সংশ্লিষ্টদের রেহাই দেয়া যায়? এ ব্যাপারে কি কোনো আইনি ব্যবস্থা নেয়া যায় না? যে বাসযোগে বিষাক্ত জেলিযুক্ত চিংড়ির অবৈধ পাচার চলে, সে বাসে কি মাদকের অবৈধ পাচারও চলে না? আমরা খুলনা-চট্টগ্রাম রুটে চলমান বাসগুলোতে সর্বাত্মক নজরদারি নিশ্চিতের জন্যে সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার প্রতি জোর অনুরোধ জানাচ্ছি।