প্রকাশ : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
শুধু চাঁদপুরের জন্যে নয়, দেশের পুরো দক্ষিণাঞ্চলের জন্যে সুসংবাদ

আমাদের দেশের সংবাদপত্রসহ সকল গণমাধ্যমে সবসময় দুঃসংবাদকেই প্রাধান্য দেয়া হয়। দুঃসংবাদের শীর্ষ সংবাদ হওয়াটা নিশ্চিত। অথচ সুসংবাদ থাকে গৌণ, অমুখ্য, গুরুত্বহীন, সংবাদপত্রের প্রথম পৃষ্ঠায় ঠাঁই হয় খুব কম। এমন বাস্তবতায় চাঁদপুর কণ্ঠে গত বৃহস্পতিবার ছাপা হয়েছে একটি সুসংবাদ, যার শিরোনাম হয়েছে ‘মেঘনা ট্রেনের র্যাক পরিবর্তন এ মাসেই, কক্সবাজারে যাবে মার্চে’।
সংবাদটিতে লিখা হয়েছে, চাঁদপুর-চট্টগ্রামে রুটে মেঘনা এক্সপ্রেস আন্তঃনগর ট্রেন ১৯৮৫ সালে চালু হয়। তবে চালুর পর থেকে একই র্যাক (কোচ) দিয়ে ট্রেনটি পরিচালিত হয়ে আসছে। সম্প্রতি রেলেও উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। ট্রেন চলাচলে গড়ে উঠেছে আধুনিক ব্যবস্থা। যদিও এর কোনো সুবিধা পায়নি মেঘনা একপ্রেস ট্রেন। অথচ এটি অন্যতম লাভজনক ট্রেন। এসব বিষয়কে সামনে রেখে মেঘনা একপ্রেস ট্রেনকে আধুনিকায়ন ও ট্রেনের গন্তব্যস্থল চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত বর্ধিত করার জন্যে দাবি জানায় ঢাকাস্থ চাঁদপুর জেলা সাংবাদিক ফোরাম। এরই অংশ হিসেবে ফোরামের পক্ষ থেকে সম্প্রতি রেলপথ বিভাগের মন্ত্রীর কাছে আবেদনও করা হয়। ফোরামের আবেদনের সঙ্গে একমত পোষণ করেন রেলমন্ত্রী মোঃ জিল্লুল হাকিম। তিনি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্যে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশনা দেন। এর অংশ হিসেবে অবশেষে বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রেলের পরিচালক (ট্রাফিক কন্ট্রোল) মোঃ মিজানুর রহমান জানান, ফোরামের আবেদন রেলপথ মন্ত্রণালয় গুরুত্বের সাথে নিয়েছে। মেঘনা ট্রেনের পুরানো র্যাক পরিবর্তন করে অবমুক্ত হওয়া অন্য র্যাক সংযোজন করা হবে এ মাসেই। মার্চের মধ্যেই মেঘনা ট্রেনের কক্সবাজার পর্যন্ত রুট বর্ধিত করা হবে। এছাড়া চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রুটের যাত্রী চাহিদার কথা বিবেচনা করে আরও একজোড়া আন্তঃনগর ট্রেন দেয়ার বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিচেনা করা হবে। এই পরিচালক জানান, মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের বিষয়টি ফোরামের চিঠির কপিসহ পূর্বাঞ্চল রেলওয়েকে অবহিত করা হবে। এরপর দ্রুতই তা বাস্তবায়ন করা হবে। এই বিষয়ে ফোরামের সভাপতি এবং দৈনিক যুগান্তরের সিটি এডিটর মিজান মালিক বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে ঢাকাস্থ চাঁদপুর জেলা সাংবাদিক ফোরাম চাঁদপুরবাসী এবং চাঁদপুরের মানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে। মেঘনা ট্রেনের বিষয়টিও তেমনই একটি উদ্যোগ। রেলপথে চাঁদপুরের মানুষের দুর্দশা লাঘবে আমাদের এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। তিনি জানান, ইলিশের রাজধানী চাঁদপুরকে একটি পর্যটন জোন হিসেবে গড়ে তোলার জন্যে ফোরামের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে। প্রস্তাব রাখা হয়েছে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক ও চাঁদপুরের পৌর মেয়রের কাছেও।
উল্লেখ্য, চাঁদপুর জেলার নানা সমস্যা সমাধানে ঢাকাস্থ চাঁদপুর জেলা সাংবাদিক ফোরাম কাজ করছে। বিশেষ করে অসহায় মানুষের চিকিৎসা সেবায় সহযোগিতা, ব্রিজ-কালভার্ট সংস্কারে সহায়তা, স্কুল নির্মাণে সহায়তা, বৃক্ষ রোপণ প্রভৃতি। ফোরামের পক্ষ থেকে চাঁদপুর সেতুর টোল প্রত্যাহারের জন্যেও আবেদন করা হয়। এ বিষয়ে ফোরাম সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।
আমরা ঢাকাস্থ চাঁদপুর জেলা সাংবাদিক ফোরামকে নিজ সদস্যদের স্বার্থ, অধিকার ইত্যাদি রক্ষার পাশাপাশি জেলাবাসীর সুবিধা-অসুবিধায় মাথা ঘামানো, সম্ভাবনাকে তুলে ধরা ও কাজে লাগানোসহ নানান বিষয়ে সোচ্চার হওয়াটাকে যথোচিত ও সময়োপযোগী বলে মনে করছি। জনপ্রতিনিধিরা অনিবার্য কিছু কারণে জেলার স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোনো কোনো বিষয়ে বলিষ্ঠ হতে বিব্রতবোধ করলেও এবং সীমাবদ্ধতায় ভুগলেও সাংবাদিক সমাজ সেক্ষেত্রে স্বাধীন ও মুক্তকণ্ঠ। সেই সুবিধাটুকুকে পুরোপুরি কাজে লাগিয়ে তারা নিজ নিজ এলাকার জন্যে যে ছোট-বড় অনেক কাজ করতে পারে ঢাকাস্থ চাঁদপুর জেলা সাংবাদিক ফোরাম তার প্রমাণ। তাদের প্রচেষ্টায় মেঘনা আন্তঃনগর ট্রেনটি যদি কক্সবাজার পর্যন্ত যাতায়াত শুরু করে, তাহলে সেটি শুধু চাঁদপুরবাসীর জন্যে নয়, দেশের পুরো দক্ষিণাঞ্চলবাসীর জন্যে চরম সুখবর ও আনন্দদায়ক বিষয়ে পরিণত হবে। কারণ, চাঁদপুরের সাথে দক্ষিণাঞ্চলের উন্নত লঞ্চ যোগাযোগ রয়েছে। লঞ্চযোগে চাঁদপুর হয়ে ট্রেনযোগে তারা কক্সবাজার যাতায়াত করতে পারবে। আমরা এই মেঘনা এক্সপ্রেসের কক্সবাজার যাতায়াতের দিকে চাতকের ন্যায় অপেক্ষারত থাকলাম। আমরা দৃঢ়তার সাথে বিশ্বাস করি, চাঁদপুর-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রূটে মেঘনা আন্তঃনগর এক্সপ্রেস অনেক বেশি জনপ্রিয় ও লাভজনক ট্রেনে পরিণত হবে।