রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৪ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ সত্ত্বেও চাঁদপুরে যা হচ্ছে না---

অনলাইন ডেস্ক
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ সত্ত্বেও চাঁদপুরে যা হচ্ছে না---

২০১৮ সালের ১ এপ্রিল হাইমচরে স্কাউটের কমিউনিটি ডেভলপমেন্ট ক্যাম্প (কমডেকা)-এর উদ্বোধন উপলক্ষে হাইমচরে এসেছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি রাজধানী থেকে হেলিকপ্টারযোগে হাইমচরে আসার সময় নদীর সৌন্দর্য দেখে বিমোহিত হয়েছিলেন। তিনি কমডেকা উদ্বোধনের সময় প্রদত্ত বক্তব্যে হাইমচরে নৌপর্যটন সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন এবং এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণের জন্যে সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরকে নির্দেশ দেন। তিনি কমডেকা থেকে চাঁদপুর স্টেডিয়ামে আওয়ামী লীগের জনসভায় এসে চাঁদপুরের নৌপর্যটনের সম্ভাবনা তুলে ধরে অনুরূপ নির্দেশ দেন। কিন্তু ইতোমধ্যে ছয় বছর সময় গড়িয়ে গেলেও চাঁদপুর ও হাইমচরের নৌপর্যটন সম্ভাবনা কাজে লাগাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হবার ক্ষেত্রে দৃশ্যমান কিছু সম্পাদিত হয়নি। এক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিবিদ সহ আমলা কে কতোটুকু দায়িত্বপালন করেছেন, তা বিশ্লেষণ না করে সহজভাবে এটা বলা যায়, আমাদের দেশে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ পালনের বিষয়টিও দীর্ঘসূত্রিতায় আক্রান্ত হয়, যেটা জানতে, শুনতে ও মানতে অবশ্যই যে কারোরই কষ্ট হয়।

সিঙ্গাপুরের আদলে দেশের প্রতিটি জেলাকে ব্র্যান্ডিং করার নির্দেশনা পেয়ে অন্যান্য জেলাকে ডিঙ্গিয়ে চাঁদপুর সর্বপ্রথম ‘ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর’ নামে সরকারি স্বীকৃতি পেয়ে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে। তখন চাঁদপুরের পর্যটন সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোঃ আব্দুস সবুর মন্ডল যে তৎপরতা দেখিয়েছেন, সেটা পরবর্তীতে করোনাসহ নানা কারণে ঝিমিয়ে যায়। জেলা প্রশাসন ও চাঁদপুর পৌরসভা চাঁদপুরের নৌপর্যটন সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে কোনোরূপ প্রকল্পে বড়ো ধরনের বরাদ্দ ছাড়াই চাঁদপুর বড় স্টেশন মোলহেড এলাকায় মেঘনা, ডাকাতিয়া ও পদ্মার মিলনস্থলে এমন কিছু কাজ করেন, যা পুরো জেলাবাসীসহ দেশবাসীর নিকট আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন ও বেসরকারি উদ্যোক্তারা এই মোলহেডকেন্দ্রিক অবকাঠামো গড়ে তোলার জন্যে এগিয়ে আসলেও রেল কর্তৃপক্ষের অসহযোগিতার কারণে সবাই আশাহত হয়ে ফিরে যায়। তারপর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্ট থেকে এখানে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল পার্ক করার অনুমোদন পাওয়া গেলেও কোনো স্থাপনা গড়তে দেয়নি রেল কর্তৃপক্ষ। তারা নিজেরা পার্ক করার নামে যে শ্লথগতির আশ্রয় নিয়েছে, তাতে বিরক্তি প্রকাশ ছাড়া সন্তুষ্টি প্রকাশের অবকাশ নেই বললেই চলে।

রেল কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম রেল স্টেশন লাগোয়া তাদের জায়গায় পর্যটন কর্পোরেশনকে হোটেল সৈকত করতে দিয়ে চট্টগ্রামের পর্যটন সম্ভাবনাকে যে অনেক ত্বরান্বিত করেছে, সেটা আজ প্রমাণিত। চাঁদপুর বড় স্টেশন এলাকায় এমন একটি হোটেল যদি পর্যটন কর্পোরেশন করার সুযোগ পায়, তাহলে চাঁদপুরের নৌপর্যটন সম্ভাবনাকে পুরোপুরি কাজে লাগিয়ে একে শুধু জাতীয় মানে নয়, আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা খুব কঠিন কাজ নয়। এই মোলহেড থেকে অদূরর্তী মেঘনার চরসমূহকে কাজে লাগিয়ে ভামমান কটেজ, রেস্টুরেন্ট সহ আরো কতো কিছু যে করা যায়, সেটাও জাপানি উদ্যোক্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে উপস্থাপন করেছেন এবং বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছেন। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় সেটিও সুদূরপরাহত অবস্থায় আছে। তাই বলা যায়, চাঁদপুরের নৌপর্যটন সম্ভাবনা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ এবং সরকারি-বেসরকারি উদ্যোক্তাদের আগ্রহ সত্ত্বেও প্রধানত রেল কর্তৃপক্ষের অযৌক্তিক গোঁড়ামি ও অসহযোগিতায় এবং আমলাদের যথাযথ ও আন্তরিক তৎপরতার অভাবে উবে যাচ্ছে। এমন কষ্টকর বাস্তবতায় আমাদের হতাশামূলক অভিব্যক্তি--হায়! চাঁদপুরের উজ্জ্বল নৌপর্যটন সম্ভাবনাকে জাগ্রত করার জন্যে কি কাণ্ডারীরূপী কেউ নেই?

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়