প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০২১, ০০:০০
সম্মানীয় তত্ত্বাবধায়ক ও সিভিল সার্জন সমীপে
করোনাকালের প্রায় ১৭ মাসে অনেক সঙ্কট ও সীমাবদ্ধতার মাঝেও ২৫০ শয্যার চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল যে সেবা দিয়েছে ও দিচ্ছে, তাকে মোটামুটি ভালো বলা ছাড়া কোনো উপায় নেই। চাঁদপুরের সংবাদপত্র সমূহ ও গণমাধ্যম কর্মীদের অন্তত পঁচানব্বই ভাগ ইতিবাচক সংবাদ পরিবেশন করে চাঁদপুর জেলার সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানটির পাশে দাঁড়িয়েছে। অধিকাংশ চিকিৎসক, নার্স, প্যাথলজি কর্মচারীসহ হাসপাতালের বিভিন্ন স্তরের জনবল করোনাকালে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছেন, করছেন এবং ব্যক্তি জীবনের সুখ-আহলাদকে বিসর্জন দিয়েছেন, দিচ্ছেন। কিন্তু তারপরও প্রাইভেট চেম্বার, বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক, প্যাথলজি-ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত কিছু চিকিৎসকের স্বীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ভূমিকা দৃষ্টিকটু। এরা দাপটের সাথে যথাসময়ে হাসপাতালের ডিউটিতে আসেন না এবং যান না। এরা হাসপাতাল চেম্বারে বসে পর্যন্ত প্রাইভেটলি রোগী দেখেন এবং নিজেদের প্রতিষ্ঠান ভার্চুয়ালি পরিচালনা করেন। চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী ও আউটসোর্সিংয়ের কর্মচারীরা চলেন তথা ডিউটি করেন খেয়াল খুশি মতো। কেউ কেউ রাতের বেলা তো বটেই, দিনের বেলায় করেছে নির্বিঘ্ন অক্সিজেন বাণিজ্য। ডাক্তার-কর্মচারীসহ এদেরকে দেখার জন্যে হাসপাতালে প্রধান ব্যক্তির পদটির নাম তত্ত্বাবধায়ক। কিন্তু তাঁর এ হাসপাতালটির কার্যক্রম তদারকি তথা সুষ্ঠু পরিচালনায় কোথাও না কোথাও ঘাটতি থাকার বিষয়টি যে কোনো পর্যায়ের পরিদর্শকের চোখে পড়ার মতো। সেজন্যে অতি সম্প্রতি জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একটি সভায় উক্ত তত্ত্বাবধায়কের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়।
|আরো খবর
চাঁদপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান হচ্ছেন সিভিল সার্জন। বর্তমানে এ পদে যিনি কর্মরত আছেন, তিনি তাঁর কর্মতৎপরতা, বক্তৃতা-বিবৃতি ইত্যাদিতে বাহ্যিকভাবে অসন্তোষের শিকার হবার পর্যায়ে নেই। কিন্তু তাঁর আওতাধীন ৭টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের করোনাকালীন চিকিৎসাসেবা প্রদানের যে অবহেলাপূর্ণ ও দায়সারা চিত্র চাঁদপুর কণ্ঠের ছয়টি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, তাতে তাঁর সুষ্ঠু তদারকি ও পরিদর্শনের অভাবের বিষয়টি অনুমিতি হয়েছে। এসব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান কর্তাব্যক্তিসহ গুরুত্বপূর্ণ পদের চিকিৎসকদের কেউ কেউ স্বীয় স্টেশনে বসবাস না করে তাদের প্রাইভেট চেম্বার-ক্লিনিক কিংবা ভিন্ন স্বার্থে অন্যত্র বসবাস করছেন বলে সুস্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে। যেটা কোনোভাবেই সিদ্ধ নয়।
এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, চাঁদপুরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক এবং জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান বর্তমান সিভিল সার্জন মনমানসিকতায় অনেক ইতিবাচক। তাঁরা তদারকি বা মনিটরিং বাড়িয়ে, বার বার সরেজমিনে পরিদর্শন করে চাঁদপুর জেলার সকল সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসাসেবার মান বাড়াতে ভূমিকা রাখতে পারেন। বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধা ও জনবলের সর্বোচ্চ ব্যবহার করে যতোটুকু চিকিৎসাসেবা দেয়া যায়, সেটির জন্যে তাঁদের দৃশ্যমান আন্তরিকতা যে কোনো পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্যে যথেষ্ট বলে আমরা মনে করি। এ ব্যাপারে এ দুজন সমীপে তাঁদের যথার্থ করণীয় সম্পাদনের জন্যে সচেতন চাঁদপুরবাসীর পক্ষে বিনীতভাবে আরজি পেশ করছি।