প্রকাশ : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০০:০০
গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠে মন খারাপ করার মতো দুটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত সংবাদটির শিরোনাম হয়েছে ‘কুকুরের মতো পেটালো খেলতে আসা শিক্ষার্থীদের ॥ ঘটনা তদন্তে কমিটি’। আর শেষ পৃষ্ঠায় প্রকাশিত সংবাদটির শিরোনাম হয়েছে ‘হাইমচরে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে ত্রিমুখী সংঘর্ষ ॥ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ আহত ৩’। একই দিনে খেলা নিয়ে এমন দুটি নেতিবাচক সংবাদে পাঠকমাত্রেরই মন খারাপ হয়েছে।
প্রথম সংবাদের শিরোনামটিতো বটেই, সংবাদ-সূচনাও হৃদয় স্পর্শ করার মতো। এই সূচনাতে লিখা হয়েছে, কুকুরের মতো দফায় দফায় পেটালো খেলতে আসা শিক্ষার্থীদের। তাদের অপরাধ, কেনো খেলায় বিজয়ী হলো। ফরিদগঞ্জে গত মঙ্গলবার ৪৯তম গ্রীষ্মকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার অংশ হিসেবে আন্তঃস্কুল ফুটবল খেলায় এই ঘটনা ঘটে। এতে শোল্লা স্কুল এন্ড কলেজের অন্তত ১৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। গুরুতর আহত ৯ জনকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার বিবরণে প্রকাশ, গত মঙ্গলবার ফুটবল প্রতিযোগিতায় ফরিদগঞ্জ এ. আর. মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মুখোমুখি হয় শোল্লা স্কুল এন্ড কলেজের ৯ম ও ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা। নির্ধারিত সময়ে ১-১ গোলে খেলা শেষ হয়। পরে টাইব্রেকারে শোল্লা স্কুলের শিক্ষার্থীরা ৩-১ গোলে বিজয়ী হয়। এতে তারা আনন্দ-উল্লাস করছিলো। ওই সময় আনন্দ-উল্লাস বন্ধ করে দ্রুত গাড়িতে উঠে মাঠ ত্যাগ করার জন্যে ক’জন কিশোর ও তরুণ বিজয়ীদের নির্দেশ দেয় ও বাগ্বিতণ্ডায় লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে বেশ কিছু সংখ্যক ছেলে শোল্লা স্কুলের শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হয়ে কয়েক দফায় বেদম মারধর করে। শোল্লা স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আরিফুর রহমান এই হামলার জন্যে ফরিদগঞ্জ এ. আর. মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দায়ী করেন। এ ব্যাপারে এই অধ্যক্ষের অভিযোগের আলোকে ইউএনও পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন, যে কমিটিকে দুদিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
ফরিদগঞ্জ এ. আর. মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উক্ত হামলার ঘটনাটিকে দুঃখজনক বললেও এ হামলার সাথে বহিরাগতদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে মনে করছেন। তিনি যেটাই মনে করেন, আমরা বিশ্বাস করি, তদন্তেই বেরিয়ে আসবে সত্যতা এবং সেমতে নেয়া হবে যথাযথ ব্যবস্থা।
আমরা ফুটবলসহ বিভিন্ন দলগত খেলায় যেখানে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় অর্থাৎ যেটি ভেন্যু থাকে, সেটির বড়াই অনেককে করতে দেখি। ফরিদগঞ্জে এমন কিছু হলো কিনা সেটা বিবেচনার বিষয়। যদি হয়ে থাকে তাহলে সেটি থেকে শিক্ষা গ্রহণের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। ভবিষ্যতে যে ভেন্যুতে ফুটবল, ক্রিকেট ইত্যাদি দলগত খেলা হবে, সেই ভেন্যুর নিজস্ব দল যদি থাকে, তাহলে প্রতিপক্ষ দলের নিরাপত্তার জন্যে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখতে হবে, যাতে ভেন্যুর বড়াই করে কেউ হেরে গিয়ে বিজয়ী প্রতিপক্ষকে কুকুরের মতো পেটাতে না পারে।