প্রকাশ : ২১ জুলাই ২০২২, ০০:০০
অপ্রয়োজনীয় জায়গা অধিগ্রহণ বন্ধ করুন

পাকিস্তান আমলে চাঁদপুর গভর্নমেন্ট টেকনিক্যাল হাই স্কুল প্রতিষ্ঠার জন্যে চাঁদপুর সদর উপজেলার মৈশাদী ইউনিয়নের সাড়ে ১৪ একর জায়গা সরকার অধিগ্রহণ করে। ভূমির মালিকরা তাদের জায়গার মূল্য পায়নি বললেই চলে। এতো জায়গা একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জন্যে যে অনেকটা অপ্রয়োজনীয় ছিলো, সেটা সময়ের ব্যবধানে আজ প্রমাণিত। স্কুল কর্তৃপক্ষ এতো জায়গা রক্ষণাবেক্ষণের জন্যে জনবলের অভাবে উল্লেখযোগ্য কিছু করতে পারছে বলে মনে হচ্ছে না। কারণ, স্কুলের অনেক জায়গাই এখন বেদখলে। স্বয়ং সরকারই সুবিধাজনক জায়গা না পেয়ে স্কুল ক্যাম্পাসে অব্যবহৃত/ পরিত্যক্ত জায়গায় প্রতিষ্ঠা করেছে জেলা শিক্ষা অফিসারের কার্যালয় এবং শিক্ষা প্রকৌশল দপ্তরের ভবন। ভবিষ্যতে স্কুলটির পরিত্যক্ত কিংবা অব্যবহৃত জায়গায় আরো সরকারি ভবন যে গড়ে উঠবে না, সেটা নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারবে না।
চাঁদপুর জেলার বিখ্যাত দুটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় হচ্ছে চাঁদপুর শহরস্থ হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, এ দুটি সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গড়ে দু একর করেও জায়গা নেই। সেজন্যে শিক্ষার গুণগত মান খারাপ-এ কথা বলার ন্যূনতম অবকাশ নেই। যেহেতু এ দুটির চেয়ে বহু একর জায়গার অধিকারী চাঁদপুর গভর্নমেন্ট টেকনিক্যাল হাই স্কুলসহ অনুরূপ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে পিছিয়ে।
মৈশাদী ইউনিয়নে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের জন্যে ও বাবুরহাট শিশু পরিবারের জন্যে, তরপুরচন্ডী ইউনিয়নে চাঁদপুর সেচ প্রকল্পসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের জন্যে ও ফিশারীর জন্যে যে জায়গা সরকার অধিগ্রহণ করেছে, সেগুলো যে প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত সেটা অব্যবহৃত/পরিত্যক্ত জায়গার দিকে তাকালে সহজেই অনুধাবন করা যায়। ফিশারী ক্যাম্পাসে জেলা মৎস্য ভবন এবং পাউবো ক্যাম্পাসে ষোলঘর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়েও বোঝা যায় অব্যবহৃত জায়গার হাল হকিকত। ফিশারীর অব্যবহৃত জায়গায় মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবিতে একবার জেলাবাসী সোচ্চার হলেও সরকারি আনুকূল্য না পাওয়ায় তাতে কাক্সিক্ষত ফল পাওয়া যায় নি। অথচ চাঁদপুরে মেডিকেল কলেজ ঠিকই হয়েছে সঙ্কীর্ণ পরিসরে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতাল ভবনে। বস্তুত স্থানাভাবে কোনো কিছু যে ঠেকে থাকে না চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ তার প্রমাণ।
চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে লালমাইয়ে কুমিল্লা আঞ্চলিক বেতার ভবন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বহু একর জায়গায়। দেখা যায়, যার প্রায় অর্ধেক জায়গাই এখন অব্যবহৃত ও জঙ্গলাকীর্ণ। এভাবে অপ্রয়োজনীয় ও অতিরিক্ত জায়গা অধিগ্রহণ কতোটুকু যুক্তিযুক্ত সেটা নিয়ে ভাববার যথেষ্ট অবকাশ তৈরি হয়েছে। এছাড়া সরকার এখন অধিগ্রহণকৃত জায়গার মূল্য চলমান বাজার দরের চেয়ে তিনগুণ পরিশোধ করছে। সেজন্যে অপ্রয়োজনীয় জায়গা অধিগ্রহণ করে সরকারি অর্থ অপচয় বন্ধের জন্যে সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের নিকট সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাচ্ছি।