শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪  |   ৩১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা গণফোরামের কর্মী সমাবেশ
  •   নিষেধাজ্ঞার প্রথম দিনে ফরিদগঞ্জে অবাধে ইলিশ বিক্রি
  •   পিকনিকে যাওয়া শিক্ষার্থীর মরদেহ মেঘনায় ভেসে উঠলো দুদিন পর
  •   নেতা-কর্মীদের চাঁদাবাজি না করার শপথ করিয়েছেন এমএ হান্নান
  •   বিকেলে ইলিশ জব্দ ও জরিমানা

প্রকাশ : ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০০:১৫

শপথই সব নয়

অনলাইন ডেস্ক
শপথই সব নয়

সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও মাদকমুক্ত সমাজ বিনির্মাণে জনমত গঠনের লক্ষ্যে ফরিদগঞ্জ উপজেলার গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে জনসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১২ অক্টোবর শনিবার বিকেলে গোবিন্দপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও শিল্পপতি আলহাজ্ব এমএ হান্নান। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমি জেনেছি, ফরিদগঞ্জে বিএনপি নামধারী অনেকেই সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, বিভিন্ন সংগঠনের অফিস দখলের সাথে নিজেদেরকে জড়িয়েছে। দেশনায়ক তারেক রহমানের নির্দেশ, জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাস, চাঁদাবাজের ঠাঁই নেই। এ সময় তিনি জনসভায় উপস্থিত সকল নেতা-কর্মীকে চাঁদাবাজি, দখলবাজি না করার জন্যে শপথ করিয়েছেন। জনসভায় উপস্থিত বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, কৃষক দল, শ্রমিক দল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা হাত উঠিয়ে চাঁদাবাজি, দখলবাজি না করার শপথগ্রহণ করেন। যে কেউ স্থূল দৃষ্টিতে এই শপথ করানো ও শপথগ্রহণের কাজটিকে ইতিবাচক ও প্রশংসনীয় বলতে দ্বিধা করার কথা নয়। তারপরও বিশ্লেষণের ফুরসত থেকে যায়। বলা প্রয়োজন, যে কোনো শপথগ্রহণের পূর্বে মানসিক প্রস্তুতি একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সস্তা আবেগে কিংবা হুজুগে কোনো বিষয়ে শপথ নেয়া যায় না। যদি কেউ নেয়, সেটাতে ঠিক থাকা যায় না। যেমনটা আমরা অনেক ক্ষেত্রে দেখেছি। একটি উদাহরণ তো আমাদের স্মৃতিতে জ্বলজ্বল করছে। সেটি হচ্ছে, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পদ থেকে সদ্য পদত্যাগকারী মাকসুদুর রহমান পাটওয়ারীকে ঘিরে। তিনি ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব থাকাকালে চাঁদপুরে সরকারি সফরে এসে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তাঁর অধীনস্থ ভূমি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশ্য বলেন, ঘুষ খাওয়া মানে ঘু (মানুষের মল) খাওয়ার সমতুল্য। তিনি এজন্যে তাদেরকে ঘুষ না খেতে তাৎক্ষণিক শপথ করিয়েছিলেন। এই অনুষ্ঠান থেকে তিনি রাজধানীতে ফিরার পর সরকারি গাড়ি ব্যবহারে তাঁর পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতি ও আরো কিছু অনিয়ম সংক্রান্ত সংবাদ যমুনা টেলিভিশন ও যুগান্তরে পরিবেশিত হয়। এতে শপথ পড়ানো সিনিয়র সচিব সম্পর্কে অধঃস্তন ভূমি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাধারণ্যে যে বিরূপ সমালোচনা দেখা যায়, সেটা ছিলো বিব্রতকর। আর চাঁদপুরের কিছু ভূমি কর্মকর্তা-কর্মচারীর লাগামহীন দুর্নীতি এবং বদলি বাণিজ্যে জেলার শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মুখরোচক সংশ্লিষ্টতা ছিলো ওপেন সিক্রেট। সেজন্যে কোনো অনুষ্ঠানে অনেককে একত্রে পেয়ে হুট করে শপথ পড়িয়ে দেয়া সরকারি-বেসরকারি-রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক পর্যায়ে সমীচীন নয়। এটাতে শোডাউন বা প্রদর্শনেচ্ছা সহ মিডিয়া কাভারেজ ভালোই পাওয়া যায়। কিন্তু শপথের প্রকৃত উদ্দেশ্য সফল হয় না। শপথগ্রহণের মানসিক প্রস্তুতি, যথার্থ ক্ষেত্র ও পরিবেশ তৈরি করা ছাড়া শপথগ্রহণ করানোটা নিরর্থক। আর যদি শপথ কেউ কাউকে করিয়েই থাকে, তাহলে শপথ করানো ব্যক্তির দায়িত্বটা শপথগ্রহণকারীর চেয়ে বেশি হয়ে যায়। সে আলোকে বলছি, ফরিদগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এমএ হান্নান নেতা-কর্মীদের শপথ করিয়ে যদি মনে করেন, মাদক, চাঁদাবাজি ও দখলবাজি রোধে সব হয়ে গেছে, তাহলে সেটা ঠিক হবে না। তাঁকে এই শপথের মূল্য রক্ষার বিষয়টি অনেক মনিটরিং করতে হবে এবং দলের ভেতরের প্রতিপক্ষদের বিষয়ে তীক্ষè সচেতন থাকতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়